ঢাকা , বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
Logo আজ কবি অনিতা আন্দন কবিতার জন্মদিন Logo মুন্সীগঞ্জে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ তরুণের মৃত্যু Logo ময়মনসিংহে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি Logo প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আগামীকাল সাক্ষাৎ চান ৮ দলের নেতারা Logo ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে বছরটা শেষ করতে চাই: রাকিব Logo সোনারগাঁয়ের পলিথিন বর্জের কারণে জনস্বাস্থ্য পরিবেশ হুমকিতে  Logo মীর স্নিগ্ধর স্ক্রিপ্ট কে লিখে দেন, জানতে চাইলেন শাওন Logo ইসলামী আন্দোলনের সাবেক মহাসচিব মাওলানা নুরুল হুদা মারা গেছেন Logo নড়াইল-২ আসনে মনিরুল ইসলামকে মনোনয়ন দাবিতে সমাবেশ: বহিরাগত প্রার্থী বর্জনের হুঁশিয়ারি
জমি ক্রেতারা আর্থিক হয়রানির শিকার

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ব্যাপক দুর্নীতি, হচ্ছে ভুয়া দলিল

কুমিল্লার চান্দিনা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দলিল লিখকদের যোগসাজশে সীমাহীন দুর্নীতি চলছে। নির্ধারিত সরকারি ফি-এর চেয়ে ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্রেও জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং জমির প্রকৃত মালিকরা ভূমি দস্যুদের কবলে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চান্দিনা পৌর এলাকায় জমির মোট মূল্যের সরকারি নির্ধারিত ফি সাড়ে ৭ শতাংশ হলেও দলিল লিখকরা তা বাড়িয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত নিচ্ছে। কাগজপত্র সংশোধনের অজুহাতে ‘স্যার ও অফিস ম্যানেজ’ করার নাম করে কখনও কখনও তা ১২ থেকে ১৫ শতাংশেও পৌঁছায়। এই অতিরিক্ত অর্থের একটি বড় অংশ যায় সাব-রেজিস্ট্রারের পকেটে। ইউনিয়ন পর্যায়ে নাল সম্পত্তির ফি সাড়ে ৫ শতাংশ হলেও সেখানে ৯ শতাংশ পর্যন্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন মাইজখার গ্রামের সাঈদ। ক্রেতাদের অনেককেই আবার ব্যাংক রসিদ দেওয়া হয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লিখক জানিয়েছেন, সরকারি নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত দেড় শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার ও অফিস খরচ হিসেবে দিতে হয়। ২০ লাখ টাকার দলিলে সরকারি ফি দেড় লক্ষ টাকা হলেও তা সম্পন্ন হচ্ছে কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকায়। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০টি দলিল থেকে এভাবে ৪-৫ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছেন সাব-রেজিস্ট্রার। এছাড়াও দলিল লেখার পর অফিস সহকারীকে ২০০ টাকা এবং টিপসইয়ের কাগজে ১০০ টাকা না দিলে কার্যক্রম আটকে থাকে। এই ‘অফিস খরচ’ না দিলে সেবা পেতে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হয়।

সাম্প্রতিক এক ঘটনায়, হারং গ্রামের লুৎফা আক্তার ভুয়া ওয়ারিশ সনদ, নামজারি খারিজ খতিয়ান ও ভুয়া দাখিলা তৈরি করে ৪.৮ শতাংশের বদলে ৮ শতাংশ সম্পত্তি বিক্রি করেন। এই দলিলের সরকারি ফি ৭২ হাজার টাকা হলেও তার বিপরীতে নেওয়া হয় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ক্রেতা পারভীন আক্তারের নামজারি আবেদনে ভুয়া কাগজপত্র ধরা পড়লে তা ধামাচাপা দিতে সাব-রেজিস্ট্রার উপজেলা ভূমি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন দাখিলা তৈরি করে দলিলে যুক্ত করেন।

এ বিষয়ে চান্দিনা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মাকসুদুর রহমান ভুয়া দলিলের বিষয়টি স্বীকার করলেও অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। চান্দিনার সচেতন নাগরিক তাজুল ইসলাম মনে করেন, এই দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে এবং অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যায়নি।

এএস/

 

আজ কবি অনিতা আন্দন কবিতার জন্মদিন

জমি ক্রেতারা আর্থিক হয়রানির শিকার

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ব্যাপক দুর্নীতি, হচ্ছে ভুয়া দলিল

আপডেট সময় ০১:৫৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দলিল লিখকদের যোগসাজশে সীমাহীন দুর্নীতি চলছে। নির্ধারিত সরকারি ফি-এর চেয়ে ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্রেও জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং জমির প্রকৃত মালিকরা ভূমি দস্যুদের কবলে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চান্দিনা পৌর এলাকায় জমির মোট মূল্যের সরকারি নির্ধারিত ফি সাড়ে ৭ শতাংশ হলেও দলিল লিখকরা তা বাড়িয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত নিচ্ছে। কাগজপত্র সংশোধনের অজুহাতে ‘স্যার ও অফিস ম্যানেজ’ করার নাম করে কখনও কখনও তা ১২ থেকে ১৫ শতাংশেও পৌঁছায়। এই অতিরিক্ত অর্থের একটি বড় অংশ যায় সাব-রেজিস্ট্রারের পকেটে। ইউনিয়ন পর্যায়ে নাল সম্পত্তির ফি সাড়ে ৫ শতাংশ হলেও সেখানে ৯ শতাংশ পর্যন্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন মাইজখার গ্রামের সাঈদ। ক্রেতাদের অনেককেই আবার ব্যাংক রসিদ দেওয়া হয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লিখক জানিয়েছেন, সরকারি নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত দেড় শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার ও অফিস খরচ হিসেবে দিতে হয়। ২০ লাখ টাকার দলিলে সরকারি ফি দেড় লক্ষ টাকা হলেও তা সম্পন্ন হচ্ছে কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকায়। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০টি দলিল থেকে এভাবে ৪-৫ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছেন সাব-রেজিস্ট্রার। এছাড়াও দলিল লেখার পর অফিস সহকারীকে ২০০ টাকা এবং টিপসইয়ের কাগজে ১০০ টাকা না দিলে কার্যক্রম আটকে থাকে। এই ‘অফিস খরচ’ না দিলে সেবা পেতে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হয়।

সাম্প্রতিক এক ঘটনায়, হারং গ্রামের লুৎফা আক্তার ভুয়া ওয়ারিশ সনদ, নামজারি খারিজ খতিয়ান ও ভুয়া দাখিলা তৈরি করে ৪.৮ শতাংশের বদলে ৮ শতাংশ সম্পত্তি বিক্রি করেন। এই দলিলের সরকারি ফি ৭২ হাজার টাকা হলেও তার বিপরীতে নেওয়া হয় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ক্রেতা পারভীন আক্তারের নামজারি আবেদনে ভুয়া কাগজপত্র ধরা পড়লে তা ধামাচাপা দিতে সাব-রেজিস্ট্রার উপজেলা ভূমি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন দাখিলা তৈরি করে দলিলে যুক্ত করেন।

এ বিষয়ে চান্দিনা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মাকসুদুর রহমান ভুয়া দলিলের বিষয়টি স্বীকার করলেও অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। চান্দিনার সচেতন নাগরিক তাজুল ইসলাম মনে করেন, এই দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে এবং অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যায়নি।

এএস/