উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও, এর ফলস্বরূপ তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙনের কারণে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। এছাড়া, বন্যায় প্লাবিত হওয়া নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রামের হাজারো পরিবার এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
তিস্তা সেতুরক্ষা বাঁধে ধস: গঙ্গাচড়ার মহিপুরে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর পশ্চিম পাশের সেতু রক্ষা বাঁধটিতে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৯০০ মিটার দীর্ঘ বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার জায়গার সিসি ব্লক ধসে গিয়ে ৭০ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিতে শুধু সেতুটিই নয়, লালমনিরহাট-রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ সড়ক এবং বাঁধ সংলগ্ন প্রায় ১২০০ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের অবস্থান: স্থানীয়দের অভিযোগ, পূর্বের বন্যায় বাঁধের ক্ষতি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলজিইডি কোনো সংস্কার কাজ করেনি। বর্তমানে পানি বেশি থাকায় তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে এলজিইডি।
বন্যা পরিস্থিতি ও দুর্ভোগ: তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া সত্ত্বেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪২-৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে এখনও হাজারো পরিবার পানিবন্দি। লালমনিরহাটে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছিল, যাদের অনেকেই এখন ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।
সুন্দরগঞ্জের কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামেও তীব্র ভাঙনে বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ আমন ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বন্যার কারণে শত শত একর আমন ধানক্ষেত ও সবজি তলিয়ে গেছে। পানির স্রোতে লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা ও ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে তিস্তার পানি কমলেও, নদীর ভাঙন পরিস্থিতি এবং বানভাসি মানুষের খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাবজনিত দুর্ভোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য প্রশাসন ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
এএস/

আজ কবি অনিতা আন্দন কবিতার জন্মদিন
মাজারুল ইসলাম দিপু, লালমনিহাট 























