প্রায় চার দশক আগে বিচারিক প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্দেশ্যে নির্মিত হলেও এক দিনের জন্যও চালু হয়নি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাওইজানি গ্রামের উপ-কারাগারটি। ১৯৮৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে উপজেলা পর্যায়ে আদালত স্থাপনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এটি নির্মিত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। নির্মাণের পর থেকেই তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকা এই কারাগারটি এখন স্থানীয়দের কাছে ‘ভুতুড়ে বাড়ি’ হিসেবে পরিচিত।
২ দশমিক ৭১ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই কমপ্লেক্সে পুরুষ (২০ জন) ও নারী (৫ জন) কয়েদখানা, রান্নাঘর, কার্যালয় ও আবাসিক কোয়ার্টারসহ যাবতীয় সুবিধা ছিল। তবে দীর্ঘ অবহেলায় ভবনগুলোর পলেস্তারা খসে পড়েছে, দরজা-জানালা উধাও এবং পুরো এলাকা ঘন ঝোপঝাড়ে ঢাকা। বর্তমানে কেবল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন কর্মচারী পরিবারসহ ঝুঁকিপূর্ণ একটি কোয়ার্টারে বসবাস করেন।
২০০০ সালের দিকে এখানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের চেষ্টা করা হলেও নিরাপত্তা ও পরিবেশের কারণে এক বছরের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৩ সালে স্থাপনাটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয় সমাজসেবামূলক কাজে ব্যবহারের জন্য। তবে দুই দশক পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, সরকারি সম্পদ এভাবে নষ্ট হতে দেখাটা কষ্টদায়ক। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবদুর রব জানান, পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও জনবলের অভাবে সংস্কার সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত পেলে এটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র, সংশোধনাগার বা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে এমন ২৩টি উপ-কারাগার রয়েছে, যেগুলোর একটিও এখন কার্যকর নেই। পরিকল্পনা ও নীতিনির্ধারণী অচলাবস্থা এবং অবহেলার কারণে এসব সরকারি স্থাপনা ধীরে ধীরে ধ্বংসের মুখে।
এএস/

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ
মো. ইউনুস আলী, মাগুরা প্রতিনিধি 























