ঢাকা , বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
Logo কৌশলগত সম্পর্ক মজবুত করতে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের Logo আরও এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন তামিমরা Logo আসুন সবাই মিলে মিশে কাজ করি: জয়নুল আবদিন Logo ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ হারালে আরো ৫৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা Logo সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার Logo সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিকে শক্ত অবস্থানে থাকার আহ্বান মঈন খানের Logo সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপে দেড় লাখ জনসংখ্যার কুরাসাও Logo ফের কমল স্বর্ণের দাম, আজ থেকে কার্যকর Logo শেখ মুজিব দেশকে পাকিস্তানের বদলে ভারত বানিয়েছিল: রাশেদ প্রধান Logo আদানি গ্রুপের সিঙ্গাপুরে সালিশি কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা

চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকার একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

কুড়িগ্রামের উলিপুরের তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চলে প্রায় শতাধিক পরিবার ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল বহন করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস এই ঘোড়ার গাড়ি। তিস্তার ভাঙনে ভেসে ওঠা গোড়াই পিয়ার, রামনিয়াশা, হোকডাঙ্গা, টিটমা, নাগড়াকুড়া, দড়িকিশোরপুরসহ অসংখ্য চরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, এই ঘোড়ার গাড়িই দুর্গম চরাঞ্চলে মালামাল আনা-নেওয়ার এবং মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

চরাঞ্চলে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। নিরুপায় হয়ে রোগীকে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘাটে এনে নৌকা পারাপার করে নিতে হয়, যা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

বর্তমানে পলি পড়ায় চরের জমি ফসল চাষের উপযোগী হয়ে উঠেছে। চাষিরা আলু, বাদাম, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসলাদি চাষে ব্যস্ত। বীজ, সার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নৌকা থেকে চরাঞ্চলে ও উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণের জন্য ঘোড়ার গাড়িতেই বহন করা হয়।

ঘোড়াগাড়ি চালক মোরশেদুল ইসলাম জানান, তারা বস্তা প্রতি ৫০ টাকা দরে মালামাল আনা-নেওয়া করেন। এতে দিনে প্রায় ৫০ বস্তা পর্যন্ত পরিবহন হয় এবং আয় হয় ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা। ঘোড়ার খাদ্যের খরচ মিটিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। তিনি আরও জানান, শুকনো মৌসুমে ৪-৫ মাস কাজ চলে, কিন্তু মে মাসের মাঝামাঝি নদীতে পানি এলে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং অপেক্ষা করতে হয় নদী শুকিয়ে যাওয়ার।

আলু চাষি আলমগীর মিয়া জানান, সাড়ে তিন একর জমির ফসল চরে আনতে বস্তা প্রতি ৫০ টাকা করে পরিবহণ খরচ দিতে হচ্ছে। তিনি যাতায়াতের জন্য একটি সেতু (ব্রীজ) নির্মাণের জোর দাবি জানান, যা পণ্য বহনে অনেক সাশ্রয়ী হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রেবা বেগম বলেন, পায়ে চলাচলের জন্য রাস্তা কিছুটা ভালো হলেও ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাস্তা এখনও হয়নি। তাই মালামাল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি ঘোড়া পালনে এবং চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। চরের বাসিন্দারা দ্রুত উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন।

 

এএস/

 

কৌশলগত সম্পর্ক মজবুত করতে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের

ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা

চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকার একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

আপডেট সময় ০১:৫১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুরের তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চলে প্রায় শতাধিক পরিবার ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল বহন করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস এই ঘোড়ার গাড়ি। তিস্তার ভাঙনে ভেসে ওঠা গোড়াই পিয়ার, রামনিয়াশা, হোকডাঙ্গা, টিটমা, নাগড়াকুড়া, দড়িকিশোরপুরসহ অসংখ্য চরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, এই ঘোড়ার গাড়িই দুর্গম চরাঞ্চলে মালামাল আনা-নেওয়ার এবং মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

চরাঞ্চলে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। নিরুপায় হয়ে রোগীকে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘাটে এনে নৌকা পারাপার করে নিতে হয়, যা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

বর্তমানে পলি পড়ায় চরের জমি ফসল চাষের উপযোগী হয়ে উঠেছে। চাষিরা আলু, বাদাম, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসলাদি চাষে ব্যস্ত। বীজ, সার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নৌকা থেকে চরাঞ্চলে ও উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণের জন্য ঘোড়ার গাড়িতেই বহন করা হয়।

ঘোড়াগাড়ি চালক মোরশেদুল ইসলাম জানান, তারা বস্তা প্রতি ৫০ টাকা দরে মালামাল আনা-নেওয়া করেন। এতে দিনে প্রায় ৫০ বস্তা পর্যন্ত পরিবহন হয় এবং আয় হয় ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা। ঘোড়ার খাদ্যের খরচ মিটিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। তিনি আরও জানান, শুকনো মৌসুমে ৪-৫ মাস কাজ চলে, কিন্তু মে মাসের মাঝামাঝি নদীতে পানি এলে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং অপেক্ষা করতে হয় নদী শুকিয়ে যাওয়ার।

আলু চাষি আলমগীর মিয়া জানান, সাড়ে তিন একর জমির ফসল চরে আনতে বস্তা প্রতি ৫০ টাকা করে পরিবহণ খরচ দিতে হচ্ছে। তিনি যাতায়াতের জন্য একটি সেতু (ব্রীজ) নির্মাণের জোর দাবি জানান, যা পণ্য বহনে অনেক সাশ্রয়ী হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রেবা বেগম বলেন, পায়ে চলাচলের জন্য রাস্তা কিছুটা ভালো হলেও ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাস্তা এখনও হয়নি। তাই মালামাল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি ঘোড়া পালনে এবং চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। চরের বাসিন্দারা দ্রুত উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন।

 

এএস/