নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আত্রাই-সিংড়া সড়কের শিকারপুর এলাকায় সোমবার দুপুরে বেড়িবাঁধের একটি অংশ ধসে পড়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাব ও বাঁধের দুর্বলতাই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া দুর্বল বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ইঁদুর ও শেয়ালের গর্ত ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে গর্তগুলো বড় হয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি করে এবং বাঁধটি ধসে যায়।
আশির দশকে নির্মিত এই বাঁধটি পোল্ডার-সি প্রকল্পের আওতাধীন ছিল। পরবর্তী সময়ে এর ওপর পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, বাঁধটি নির্মাণের পর আর সংস্কার করা হয়নি। এতে বাঁধের বিভিন্ন অংশে সিপেজ লাইন (সূক্ষ্ম রেখা) তৈরি হয়। এই লাইন দিয়ে পানি চুঁইয়ে মাটি নরম হয়ে যায়, ফলে ইঁদুর বা শেয়াল সেখানে সহজেই বড় গর্ত তৈরি করতে পারে। এটিই বাঁধের কাঠামোগত দুর্বলতা তৈরি করে।
তিনি আরও জানান, বর্ষা নামলেই এসব গর্ত দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয় এবং বাঁধ ধসে যায়।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগ-৩-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পালও স্বীকার করে বলেন, বাঁধের ভেতরের দিকে অসংখ্য ইঁদুরের গর্ত রয়েছে, যা বাঁধের কাঠামো দুর্বল করে দিয়েছে। এটি সড়ক ধসের একটি কারণ হতে পারে।
শিকারপুর গ্রামের হিরো আলম জানান, দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট সড়ক ধসে যায়। এতে ভাঙ্গাজাঙ্গাল, হরিপুর, বিশা, বৈঠাখালি, স্যান্ডালপাড়া, দীঘিরপাড়, উদয়পুরসহ কয়েক গ্রামের মানুষের যোগাযোগ উপজেলা সদরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ভ্যানচালক আরিফুল ইসলাম দ্রুত সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়ে বলেন, শিকারপুরে এসে দেখি সড়ক ধসে গেছে, এরপর আর সদরে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল হোসেন জানান, গুড়নদীর বাঁধ কাম পাকা সড়কটি আত্রাই সদরকে নাটোরের সিংড়া সদরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। প্রতি বছর বর্ষায় এমন ঘটনা ঘটায় স্থানীয়দের দুর্ভোগ বাড়ে।
উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, খবর পেয়ে কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে। তিনি আরও বলেন, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এরই মধ্যে পোল্ডার-সি প্রকল্পের বাঁধটি পুনর্নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার তথ্য বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।
এএস/

ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ হারালে আরো ৫৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 























