দুয়ারে কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচনী ধামামা। সব ঠিক ঠাক থাকলে হাতে গোনা আর মাত্র তিন মাসের মাথায় ২৬-এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হুইসেল বাজবে নির্বাচনী ট্রেনের। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তিনমাস হাতে থাকতেই বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টিসহ তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান। ইসি সচিব বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৪৩টি আবেদনের মধ্যে মাঠপর্যায়ের তদন্তে ৩টি দল শর্ত পূরণ করেছে। দল তিনটি হলো-বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টিকে প্রতীক হিসেবে দেওয়া হয়েছে হ্যান্ড সেক। আজ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে দাবি-আপত্তি আহ্বান করে। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি হলে চূড়ান্তভাবে সনদ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছিল ইসি। কিন্ত জাতীয় লীগের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ইসি দলটি নিয়ে ফের তদন্ত করে। ধারাবাহিকতা না থাকায় নিবন্ধন পাচ্ছে না জাতীয় লীগ।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ। সাংবাদিকদের ইসি সচিব বলেন, নতুন করে তিনটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া দলগুলোর বিষয়ে আজ বুধবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে এবং ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পর ১৪-১৫ নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইসি সচিব বলেন, দলীয় প্রতীকের বিষয়ে এনসিপি চেয়েছে শাপলা কলি, আরেকটি দল চেয়েছে কাঁচি, আরেকটি দল প্রতীক পরিবর্তনের আবেদন করেছে। এ কারণে প্রতীকের বিষয়ে তেমন কিছু জানাননি ইসি সচিব।
চলতি বছরের ১০ মার্চ নিবন্ধন আগ্রহী নতুন দলের কাছ থেকে আবেদন চায় প্রধান নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তীতে একদফা সময় বাড়ানোর পর ২২ জুনের মধ্যে ১৪৩টি দল নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে।
ইসি সচিব জানান, নতুন এই তিনটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে গৃহীত হয়েছে। ইসি সচিব আরও বলেন, এবার মোট ১৪৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ২২টি দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদন্তে নামে ইসি। তদন্ত শেষে পাওয়া তথ্য ও দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, সাংগঠনিক কাঠামো এবং অতীত নির্বাচনে অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতা বিবেচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়। ইসি সচিব বলেন, মাঠ পর্যায়ের তদন্তে দেখা গেছে, কিছু দল প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এ কারণে কমিশন সাতটি দলকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির বিষয়ে একটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকায় তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত তিনটি দল-জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ-এর কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা না থাকায় পরবর্তীতে তাদের আবেদনও বাতিল করা হয়েছে। আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি, এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি এই আটটি দলের আবেদনও অগ্রহণযোগ্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সচিব জানান, নিবন্ধনের জন্য দলগুলোকে নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। এসব মানদণ্ডের মধ্যে সারা দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় সক্রিয় কমিটি থাকা, নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা, সদস্যপদ নবায়ন, এবং অতীত নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রমাণ। এসব মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় অধিকাংশ আবেদন বাতিল করা হয়েছে। ইসি সচিব বলেন, কমিশন এখন স্বচ্ছ ও কার্যকর রাজনৈতিক পরিবেশ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কঠোরতা বজায় রাখা হচ্ছে, যাতে কেবল সক্রিয় ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলোই নিবন্ধনের সুযোগ পায়। এই নিবন্ধনের ফলে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বাড়ল। নির্বাচন কমিশন আশা করছে, নতুন নিবন্ধিত দলগুলো ভবিষ্যতের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।
২৬-এর রমজানের আগে তথা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের কাজ এগোলেও দল নিবন্ধনের কাজে পিছিয়ে পড়ে সাংবিধানিক সংস্থাটি। ইসির রোডম্যাপে নতুন দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ করার কথা ছিল সেপ্টেম্বরে।
নতুন নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত আরও শিথিল করা উচিৎ। দলের কার্যক্রম নিয়ে হয়রানির অভিযোগও উচ্চারিত হয় এই রাজনৈতিক নেতার কণ্ঠে। তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করি।
এজেএ

কাওয়াসাকির ১১০০ সিসির বাইক, কী আছে এতে
ডেসটিনি প্রতিবেদক 



























