ঢাকা , বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তির সেই মাহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় ডেসটিনির ক্রেতা পরিবেশক ও বিনিয়োগকারীগন।

একজন মা তাঁর সন্তানকে দশ মাস দশ দিন উদরে ধারণ করেন, মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করে প্রসব করেন এবং সন্তানের লালন-পালন করেন। নিঃস্বার্থভাবে সেই মা-ই তাকে বুকে আগলে রাখেন। ওই সন্তানকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে একসময় নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখান তার জনম দুখিনী মা। কোনো মা তার সন্তানের বিন্দুমাত্র কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারেন একমাত্র মা-ই, অন্য কেউ নয়। বিছানায় শায়িত মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করা সন্তানের কষ্টটা একমাত্র মা ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। তেমনি ১২টি বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো করে যে মানুষটি ডেসটিনি-২০০০ লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানটিকে তিল তিল করে গড়ে গ্রুপ অব কোম্পানিতে পরিণত করেছিলেন, যা ডেসটিনি গ্রুপ নামে পরিচিত। সেই গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল আমিন আজ একটি স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে প্রায় একযুগ দুর্বিসহ বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। আর ওই স্বার্থান্বেষী মহলটি মনগড়া প্রতারণার অভিযোগ তুলে ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটরদের পক্ষে অতিদরদী সেজে, মেকি ভালোবাসার ফাঁদ পেতে ডেসটিনিকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিল। সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!

যে স্বার্থান্বেষী মহলটি ডেসটিনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে এখনো নিরন্তর কাগজ-কলমের শ্রাদ্ধ করছে তাদের উদ্দেশ্যে ডিস্ট্রিবিউটররা বলেন, দোহাই লাগে, ডেসটিনি পরিবারের সঙ্গে ৪৫ লাখ মানুষ জড়িত, কমবেশি এখান থেকে রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছিল তারা, দয়া করে এই ৪৫ লাখ মানুষের রুটি-রুজি নিয়ে, তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না। একযুগেও এই ৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটরের কেউ কি কখনো অভিযোগ করেছেন যে তিনি ডেসটিনিতে প্রতারিত হয়েছেন কিংবা ডেসটিনি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে? আজ পর্যন্ত একজন অভিযোগকারীও পাননি। মনে রাখতে হবে কল্পনা আর বাস্তব এক নয়, শোনা ও দেখার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।

আসলে ডেসটিনির বিরুদ্ধে ঐ স্বার্থান্বেষী মহলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে একটি গল্প মনে পড়ল। ‘এক লোক প্রাণ ভয়ে দৌড়াচ্ছে আর হাঁপাচ্ছে, দৌড়াচ্ছে আর হাঁপাচ্ছে। তার এ অবস্থা দেখে এক মুরব্বী জিজ্ঞেস করল, কী রে, তোর কী হয়েছে? এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন? সে বলল, ‘আর বইলেন না চাচা, আমি ওই জঙ্গলের পাশ দিয়ে আসছি, হঠাৎ দেখি, ওই জঙ্গলের মধ্যে ১০০টি বাঘ!’ মুরব্বী চাচা শুনে তো অবাক! চাচা তাকে ধমক দিয়ে বলল, ‘দূর বোকা, এখানে এত বাঘ কোথা থেকে এলো?’ লোকটি বলল, ‘দেখেন চাচা, ১০০ না হলেও ৫০টি তো হবে!’ চাচা আবার ধমক দিলে বলল, ‘দূর, এত বাঘ এ এলাকায় আছে, কখনো তো শুনিনি!’ লোকটি এবার বলল, ‘চাচা, বিশ্বাস করেন, এত না হলেও ২০টি বাঘ তো অবশ্যই হবে।’ চাচা এবার রাগ সংবরণ করে বলল, ‘বোকা বলে কী! ২০টি বাঘ এই জঙ্গলে থাকতেই পারে না।’ লোকটি এবার ভাবল, চাচা তাকে বোকা ভাবছে; কিন্তু তাকে কী করে বিশ্বাস করাই। এবার গলায় আরেকটু জোর সঞ্চয় করে বলল, ‘দেখেন চাচা, আপনি বিশ্বাস করেন আর না-ই করেন, পাঁচটি বাঘ যে আছে, এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।’ চাচা এবার বুঝে ফেলল, লোকটি একশ ভাগ বোকা অথবা মানসিক প্রতিবন্ধী। তাই তাকে জোরে একটা ধমক দিয়ে বলল, ‘ব্যাটা ফাজিল, পাঁচটি বাঘের পাশ দিয়ে তুই এলি, আর বাঘগুলো তোকে এমনি এমনি ছেড়ে দিল? হতচ্ছাড়া কোথাকার!’ এবার লোকটির চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। সে দুই হাত নিচের দিকে নামিয়ে কাঁচুমাচু করে বলল, ‘চাচা, তাহলে জঙ্গলের মধ্যে শব্দ করল কী?’ গল্পের সেই বাঘ দেখার মতো কিছু ব্যক্তি ডেসটিনির নামে মনগড়া প্রতারণার অভিযোগ তুলে আগাম মন্তব্য করেছে, ডেসটিনি কিছুদিন পর ভেগে যেতে পারে, ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাগণ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, তারা ডেসটিনির কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু জানে না, তারা ডেসটিনির কোনো ডিস্ট্রিবিউটরও না। শুধু তা-ই নয়, প্রতারণার কথা কার কাছ থেকে শুনেছে তাও সঠিকভাবে বলতে পারবে না তারা। তাই তাদের প্রতি ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটরদের নিবেদন, সঠিক তথ্য না জেনে শুধু বিরোধ বা হিংসার কারণে বিরোধিতা করবেন না। প্রকৃত সত্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করুন। ডেসটিনি কিভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে ব্যবসা করে সে বিষয় সম্পর্কে আগে জানতে হবে, সে সিস্টেম সম্পর্কে আগে অবগত হতে হবে। কারণ নেটওয়ার্ক সিস্টেমটা এ রকম যে এক বছরের মধ্যে এগারো মাসে যে কাজ হবে, পরবর্তী এক মাসে তার দ্বিগুণ-চারগুণ কাজ হবে। আয়ের রেশিওটা এ রকমই। আর এটা কিভাবে সম্ভব তা বুঝতে হলে কোনো না কোনো নেটওয়ার্কারের সঙ্গে বসতে হবে, অথবা যিনি এ বিষয়ে জানেন-বোঝেন তাঁর সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। ডেসটিনিতে ৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটর সবাই কিন্তু বোকা নন। তাঁরা কেউ কি বোঝেন না যে কোম্পানিটি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে? তাও আবার একটি-দুটি বছর নয়, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে! এও কি সম্ভব? অভিযোগ এলে তো তাঁদের মধ্য থেকেই আগে আসবে। কিন্তু এ রকম কি একজনও পাওয়া গেছে এ পর্যন্ত?

পদ্ধতিগত কারণে ডেসটিনি-২০০০ লি. কোনো ইলেকট্রনিক কিংবা প্রিন্ট মিডিয়ায় কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন দিত না। মৌখিক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় পণ্য বিক্রি হতো। আর এ কাজটিই করতো সম্মানিত ডিস্ট্রিবিউটররা। তাই তো কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন-খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকা থেকে তাঁদের কমিশন দেয়া হতো। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করছে। টিভি-চলচ্চিত্রের তারকারা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারে মডেল হচ্ছেন। বিনিময়ে তাঁরা বিপুল পরিমাণ সম্মানী নিচ্ছেন। অমুক পণ্যের ছোঁয়ায় তমুক রমণী বিশ্বসুন্দরী হয়ে গেছেন! অথচ একটু মাথা খাটালেই বোঝা যাবে বিজ্ঞাপনের মডেল সেই পণ্যটি আদৌ ব্যবহার করেন কি না! কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ কি ওই তারকাদের প্রশ্ন করেছেন, আপনারা নিজেরা এসব পণ্য ব্যবহার না করে কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে কেন এভাবে মিথ্যা বলছেন? এ বিষয়ে একটি কৌতুক মনে পড়ল কোনো এক অশীতিপর মহিলার কাছে তাঁর দীর্ঘায়ুর রহস্য জানতে চাইল এক লোক। মহিলা উত্তর দিলেন, ‘আজ নয়, কাল বলব।’ ‘কেন, কাল কেন?’ মহিলা বললেন, ‘দীর্ঘায়ুর জন্য ওষুধ তৈরি করে এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা চলছে। কাল ফাইনাল হবে এর যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিল।’

ওই স্বার্থান্বেষী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ডিস্ট্রিবিউটররা আরো বলেন, প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় কত অনিয়ম-দুর্নীতির খবর। ন্যায়বিচার না পেয়ে অসহায় মানুষ আত্মহত্যা করছে, ঘুষ না দিলে চাকরি হচ্ছে না, উপরি না দিলে পেনশনের ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে সরছে না। অনেককে দেখা যায় ত্রিশটি বছর চাকরি করে, শেষ বয়সে পেনশনের টাকাটাও ভোগ করে যেতে পারেন না। কমিশন না দিলে পেনশনের টাকা ওঠায় সাধ্যি কার। সেখানে আপনাদের ক্ষুরধার (!) লেখনী কোথায়? এখানেই শেষ নয়, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির রাহুগ্রাস থাবা বিস্তার করেছে। প্রতারণা আর মিথ্যায় সয়লাব হয়ে গেছে দেশ। এ রকম সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রতিনিয়ত ভূরি ভূরি দেখা যায়। এসব নিয়ে কাউকে কোনো প্রকার প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না। শুধু তা-ই নয়, দেখা যায় অবৈধ, ভুয়া লাইসেন্সধারী অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা গাড়ি চালানোয় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, অকালে ঝরে যাচ্ছে কত শত তাজা প্রাণ! এত কিছুর পরও আবার দেখা যায় রাস্তায় চলছে সেই মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি, অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে তা চালানো হচ্ছে, ধরা পড়ার পরও তারা আবার পার পেয়েও যাচ্ছে অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে। অনেক অসহায় ব্যক্তি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি দ্বারা অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, তারা দুই হাত জোড় করে ফরিয়াদ করছে একটু সহযোগিতার আশায়, সেদিকে ওই মহলটির সহানুভূতির হস্ত প্রসারিত হয় না! কারণ তাদের স্বার্থের কাছে মানবতা জিম্মি!

স্বপ্নদ্রষ্টা রফিকুল আমীন ডেসটিনির মাধ্যমে এমএলএম পদ্ধতিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও সরকারের সহযোগী হিসেবে ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছিল, যেখানে ৪৫ লাখ মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেছিল স্বাচ্ছন্দ্যে। এটাই কি তাঁর অপরাধ ছিল? আসলে আমাদের এ জাতির ভেজাল খেতে খেতে অভ্যাস হয়ে গেছে, তাই ভালো জিনিস পেটে সয় না; বিভিন জন দ্বারা প্রতারিত হতে হতে আজ যেন ভালো ও সৎ কাজের প্রতিও আস্থা আনতে পারছে না কেউ। তাই ডিস্ট্রিবিউটরদের দাবি, ডেসটিনির কার্যক্রম সম্পর্কে আগে জানুন, কোন পদ্ধতিতে কাজ করে তা বুঝুন, কোম্পানিটির বিস্তারিত তথ্য সম্বন্ধে অবগত হোন, সবার সঙ্গে কথা বলে আন্তরিকতার সহিত তা পরখ করুন তার পর মন্তব্য করুন, খারাপ হলে বিরোধিতা করুন। আর এত কিছু জানা-বোঝার পর মন্তব্য করলে সেই মন্তব্য হবে যুক্তিনির্ভর। তখনই সাদুবাদ পাবে সেই মন্তব্য। ডেসটিনি সম্পর্কে, এর কার্যক্রম সম্পর্কে, এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর কেউ এর বিরোধিতা করতেই পারে না। কারণ, কোম্পানিটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। ডেসটিনি একে অন্যকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে শেখায়, অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতে সার্বিক সহযোগিতা করে, অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে শেখায়, কর দিতে উদ্বুদ্ধ করে, সুদ-ঘুষ পরিহার করে বৈধভাবে আয় করতে শেখায়, চরিত্র গঠনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকে। এতসব যে কোম্পানির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব, তার বিরোধিতা করা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি ছাড়া আর কী হতে পারে!

কে না জানে যে অর্থের অভাবে মানুষের চরিত্র নষ্ট হয়, ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ চুরি করে, অর্থের লালসায় মানুষ অপকর্মে লিপ্ত হয়, আর এই অর্থের জন্যই একে অন্যের শত্রুতে পরিণত হয়, সমাজে খুন, রাহাজানি, সন্ত্রাস বেড়ে যায়। এতসব অঘটন ঘটার পেছনের একমাত্র কারণ সঠিক পথে পর্যাপ্ত উপার্জন-পন্থার অভাব। মানুষ সঠিক পন্থায় যদি পর্যাপ্ত উপার্জন করতে পারে তাহলে কেন তারা অন্যায় কাজে লিপ্ত হবে? ডেসটিনি সঠিক পথে এই অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। আর এই মহৎ কাজের সঠিক নেতৃত্ব বা দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার এমএলএম তথা নেটওয়ার্কের পুরোধা মোহাম্মদ রফিকুল আমীন।

আমরা বায়ান্ন সালে রক্তের বিনিময়ে মায়ের ভাষা বাংলাকে ছিনিয়ে এনেছি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। এত ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে যে সফলতা, এ সফলতার পরও কি আমরা প্রকৃত স্বাধীন হতে পেরেছি? আজ কেন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি? দেশের সর্ব বৃহৎ বিদ্যাপীঠ চত্বরেও কেন নারীরা আজও লাঞ্ছিত হয়? সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীর ভয়ে আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারি না কেন, কেন স্বাধীন দেশে আমাদের মা-বোনরা আজও নিরাপদ নয়? ধর্ষণ, ছিনতাই, রাহাজানি লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে, স্বাধীন জাতি হিসেবে কি এটা আমাদের জন্য লজ্জার নয়? কয়জন সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি? আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, আর ভালো কাজের সহযোগিতা করা। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থের কথা চিন্তা করে আমরা তার থেকে দূরে, অনেক দূরে ছিটকে পড়েছি। আমরা অন্যায়কারীদের কাছে কেন জিম্মি হয়ে থাকব, অন্যায় আবদারকে কেন প্রশ্রয় দেব? আজ এই ক্রান্তিলগ্নে প্রতিটি ডিস্ট্রিবিউটরের আবেদন, ডেসটিনি কর্তৃপক্ষ কোনো অন্যায় বা প্রতারণা করে থাকলে যথাযথ প্রমাণসাপেক্ষে তার বিচার করা হোক। কিন্তু ৪৫ লক্ষ মানুষের রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে তাদের জীবনকে যে অনিশ্চিতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তা অমানবিক। ডেসটিনি-২০০০ লিঃ জাতি গঠনে, সমাজ গঠনে, বেকারত্ব দূরীকরণে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছিল। নেটওয়ার্ক পদ্ধতির মাধ্যমে ডেসটিনি লাখো মানুষের সঠিকভাবে আয়ের পথ সুগম করেছিল। কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছিল। যেখানে পাঁচ-দশ হাজার টাকা মাইনের একটা চাকরি পেতে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা উপরি গুনতে হয়, সেখানে ডেসটিনি এমএলএম পদ্ধতিতে এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বনির্ভরতার রাস্তা সুগম করছিল, এটা কি কল্যাণকর নয়? ডিস্ট্রিবিউটররা মনে করেন, তাঁদের স্বপ্নদ্রষ্টা ও দক্ষিণ এশিয়ার নেটওয়ার্কের গুরু মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের হাত ধরে ডেসটিনি তাঁদের অর্থনৈতিক মুক্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তাঁদের বিশ্বাস, তাঁর হাত ধরেই তাঁরা স্বাবলম্বী হবে। তাই সরকারের প্রতি তাঁদের আকুল আর্তি, এমএলএম আইনের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হোক এবং তাঁদের স্বপ্নদ্রষ্টা মোহাম্মদ রফিকুল আমীনকে মুক্তি দেওয়া হোক। তাঁদের এই প্রত্যাশাটুকু পূরণ করা কি খুবই কঠিন? আশা করি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তির সেই মাহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় ডেসটিনির ক্রেতা পরিবেশক ও বিনিয়োগকারীগন।

আপডেট সময় ১০:৪৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

একজন মা তাঁর সন্তানকে দশ মাস দশ দিন উদরে ধারণ করেন, মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করে প্রসব করেন এবং সন্তানের লালন-পালন করেন। নিঃস্বার্থভাবে সেই মা-ই তাকে বুকে আগলে রাখেন। ওই সন্তানকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে একসময় নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখান তার জনম দুখিনী মা। কোনো মা তার সন্তানের বিন্দুমাত্র কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারেন একমাত্র মা-ই, অন্য কেউ নয়। বিছানায় শায়িত মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করা সন্তানের কষ্টটা একমাত্র মা ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। তেমনি ১২টি বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো করে যে মানুষটি ডেসটিনি-২০০০ লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানটিকে তিল তিল করে গড়ে গ্রুপ অব কোম্পানিতে পরিণত করেছিলেন, যা ডেসটিনি গ্রুপ নামে পরিচিত। সেই গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল আমিন আজ একটি স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে প্রায় একযুগ দুর্বিসহ বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। আর ওই স্বার্থান্বেষী মহলটি মনগড়া প্রতারণার অভিযোগ তুলে ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটরদের পক্ষে অতিদরদী সেজে, মেকি ভালোবাসার ফাঁদ পেতে ডেসটিনিকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিল। সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!

যে স্বার্থান্বেষী মহলটি ডেসটিনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে এখনো নিরন্তর কাগজ-কলমের শ্রাদ্ধ করছে তাদের উদ্দেশ্যে ডিস্ট্রিবিউটররা বলেন, দোহাই লাগে, ডেসটিনি পরিবারের সঙ্গে ৪৫ লাখ মানুষ জড়িত, কমবেশি এখান থেকে রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছিল তারা, দয়া করে এই ৪৫ লাখ মানুষের রুটি-রুজি নিয়ে, তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না। একযুগেও এই ৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটরের কেউ কি কখনো অভিযোগ করেছেন যে তিনি ডেসটিনিতে প্রতারিত হয়েছেন কিংবা ডেসটিনি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে? আজ পর্যন্ত একজন অভিযোগকারীও পাননি। মনে রাখতে হবে কল্পনা আর বাস্তব এক নয়, শোনা ও দেখার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।

আসলে ডেসটিনির বিরুদ্ধে ঐ স্বার্থান্বেষী মহলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে একটি গল্প মনে পড়ল। ‘এক লোক প্রাণ ভয়ে দৌড়াচ্ছে আর হাঁপাচ্ছে, দৌড়াচ্ছে আর হাঁপাচ্ছে। তার এ অবস্থা দেখে এক মুরব্বী জিজ্ঞেস করল, কী রে, তোর কী হয়েছে? এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন? সে বলল, ‘আর বইলেন না চাচা, আমি ওই জঙ্গলের পাশ দিয়ে আসছি, হঠাৎ দেখি, ওই জঙ্গলের মধ্যে ১০০টি বাঘ!’ মুরব্বী চাচা শুনে তো অবাক! চাচা তাকে ধমক দিয়ে বলল, ‘দূর বোকা, এখানে এত বাঘ কোথা থেকে এলো?’ লোকটি বলল, ‘দেখেন চাচা, ১০০ না হলেও ৫০টি তো হবে!’ চাচা আবার ধমক দিলে বলল, ‘দূর, এত বাঘ এ এলাকায় আছে, কখনো তো শুনিনি!’ লোকটি এবার বলল, ‘চাচা, বিশ্বাস করেন, এত না হলেও ২০টি বাঘ তো অবশ্যই হবে।’ চাচা এবার রাগ সংবরণ করে বলল, ‘বোকা বলে কী! ২০টি বাঘ এই জঙ্গলে থাকতেই পারে না।’ লোকটি এবার ভাবল, চাচা তাকে বোকা ভাবছে; কিন্তু তাকে কী করে বিশ্বাস করাই। এবার গলায় আরেকটু জোর সঞ্চয় করে বলল, ‘দেখেন চাচা, আপনি বিশ্বাস করেন আর না-ই করেন, পাঁচটি বাঘ যে আছে, এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।’ চাচা এবার বুঝে ফেলল, লোকটি একশ ভাগ বোকা অথবা মানসিক প্রতিবন্ধী। তাই তাকে জোরে একটা ধমক দিয়ে বলল, ‘ব্যাটা ফাজিল, পাঁচটি বাঘের পাশ দিয়ে তুই এলি, আর বাঘগুলো তোকে এমনি এমনি ছেড়ে দিল? হতচ্ছাড়া কোথাকার!’ এবার লোকটির চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। সে দুই হাত নিচের দিকে নামিয়ে কাঁচুমাচু করে বলল, ‘চাচা, তাহলে জঙ্গলের মধ্যে শব্দ করল কী?’ গল্পের সেই বাঘ দেখার মতো কিছু ব্যক্তি ডেসটিনির নামে মনগড়া প্রতারণার অভিযোগ তুলে আগাম মন্তব্য করেছে, ডেসটিনি কিছুদিন পর ভেগে যেতে পারে, ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাগণ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, তারা ডেসটিনির কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু জানে না, তারা ডেসটিনির কোনো ডিস্ট্রিবিউটরও না। শুধু তা-ই নয়, প্রতারণার কথা কার কাছ থেকে শুনেছে তাও সঠিকভাবে বলতে পারবে না তারা। তাই তাদের প্রতি ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটরদের নিবেদন, সঠিক তথ্য না জেনে শুধু বিরোধ বা হিংসার কারণে বিরোধিতা করবেন না। প্রকৃত সত্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করুন। ডেসটিনি কিভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে ব্যবসা করে সে বিষয় সম্পর্কে আগে জানতে হবে, সে সিস্টেম সম্পর্কে আগে অবগত হতে হবে। কারণ নেটওয়ার্ক সিস্টেমটা এ রকম যে এক বছরের মধ্যে এগারো মাসে যে কাজ হবে, পরবর্তী এক মাসে তার দ্বিগুণ-চারগুণ কাজ হবে। আয়ের রেশিওটা এ রকমই। আর এটা কিভাবে সম্ভব তা বুঝতে হলে কোনো না কোনো নেটওয়ার্কারের সঙ্গে বসতে হবে, অথবা যিনি এ বিষয়ে জানেন-বোঝেন তাঁর সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। ডেসটিনিতে ৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটর সবাই কিন্তু বোকা নন। তাঁরা কেউ কি বোঝেন না যে কোম্পানিটি তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে? তাও আবার একটি-দুটি বছর নয়, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে! এও কি সম্ভব? অভিযোগ এলে তো তাঁদের মধ্য থেকেই আগে আসবে। কিন্তু এ রকম কি একজনও পাওয়া গেছে এ পর্যন্ত?

পদ্ধতিগত কারণে ডেসটিনি-২০০০ লি. কোনো ইলেকট্রনিক কিংবা প্রিন্ট মিডিয়ায় কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন দিত না। মৌখিক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় পণ্য বিক্রি হতো। আর এ কাজটিই করতো সম্মানিত ডিস্ট্রিবিউটররা। তাই তো কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন-খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকা থেকে তাঁদের কমিশন দেয়া হতো। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করছে। টিভি-চলচ্চিত্রের তারকারা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারে মডেল হচ্ছেন। বিনিময়ে তাঁরা বিপুল পরিমাণ সম্মানী নিচ্ছেন। অমুক পণ্যের ছোঁয়ায় তমুক রমণী বিশ্বসুন্দরী হয়ে গেছেন! অথচ একটু মাথা খাটালেই বোঝা যাবে বিজ্ঞাপনের মডেল সেই পণ্যটি আদৌ ব্যবহার করেন কি না! কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ কি ওই তারকাদের প্রশ্ন করেছেন, আপনারা নিজেরা এসব পণ্য ব্যবহার না করে কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে কেন এভাবে মিথ্যা বলছেন? এ বিষয়ে একটি কৌতুক মনে পড়ল কোনো এক অশীতিপর মহিলার কাছে তাঁর দীর্ঘায়ুর রহস্য জানতে চাইল এক লোক। মহিলা উত্তর দিলেন, ‘আজ নয়, কাল বলব।’ ‘কেন, কাল কেন?’ মহিলা বললেন, ‘দীর্ঘায়ুর জন্য ওষুধ তৈরি করে এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা চলছে। কাল ফাইনাল হবে এর যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিল।’

ওই স্বার্থান্বেষী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ডিস্ট্রিবিউটররা আরো বলেন, প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় কত অনিয়ম-দুর্নীতির খবর। ন্যায়বিচার না পেয়ে অসহায় মানুষ আত্মহত্যা করছে, ঘুষ না দিলে চাকরি হচ্ছে না, উপরি না দিলে পেনশনের ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে সরছে না। অনেককে দেখা যায় ত্রিশটি বছর চাকরি করে, শেষ বয়সে পেনশনের টাকাটাও ভোগ করে যেতে পারেন না। কমিশন না দিলে পেনশনের টাকা ওঠায় সাধ্যি কার। সেখানে আপনাদের ক্ষুরধার (!) লেখনী কোথায়? এখানেই শেষ নয়, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির রাহুগ্রাস থাবা বিস্তার করেছে। প্রতারণা আর মিথ্যায় সয়লাব হয়ে গেছে দেশ। এ রকম সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রতিনিয়ত ভূরি ভূরি দেখা যায়। এসব নিয়ে কাউকে কোনো প্রকার প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না। শুধু তা-ই নয়, দেখা যায় অবৈধ, ভুয়া লাইসেন্সধারী অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা গাড়ি চালানোয় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, অকালে ঝরে যাচ্ছে কত শত তাজা প্রাণ! এত কিছুর পরও আবার দেখা যায় রাস্তায় চলছে সেই মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি, অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে তা চালানো হচ্ছে, ধরা পড়ার পরও তারা আবার পার পেয়েও যাচ্ছে অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে। অনেক অসহায় ব্যক্তি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি দ্বারা অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, তারা দুই হাত জোড় করে ফরিয়াদ করছে একটু সহযোগিতার আশায়, সেদিকে ওই মহলটির সহানুভূতির হস্ত প্রসারিত হয় না! কারণ তাদের স্বার্থের কাছে মানবতা জিম্মি!

স্বপ্নদ্রষ্টা রফিকুল আমীন ডেসটিনির মাধ্যমে এমএলএম পদ্ধতিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও সরকারের সহযোগী হিসেবে ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছিল, যেখানে ৪৫ লাখ মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেছিল স্বাচ্ছন্দ্যে। এটাই কি তাঁর অপরাধ ছিল? আসলে আমাদের এ জাতির ভেজাল খেতে খেতে অভ্যাস হয়ে গেছে, তাই ভালো জিনিস পেটে সয় না; বিভিন জন দ্বারা প্রতারিত হতে হতে আজ যেন ভালো ও সৎ কাজের প্রতিও আস্থা আনতে পারছে না কেউ। তাই ডিস্ট্রিবিউটরদের দাবি, ডেসটিনির কার্যক্রম সম্পর্কে আগে জানুন, কোন পদ্ধতিতে কাজ করে তা বুঝুন, কোম্পানিটির বিস্তারিত তথ্য সম্বন্ধে অবগত হোন, সবার সঙ্গে কথা বলে আন্তরিকতার সহিত তা পরখ করুন তার পর মন্তব্য করুন, খারাপ হলে বিরোধিতা করুন। আর এত কিছু জানা-বোঝার পর মন্তব্য করলে সেই মন্তব্য হবে যুক্তিনির্ভর। তখনই সাদুবাদ পাবে সেই মন্তব্য। ডেসটিনি সম্পর্কে, এর কার্যক্রম সম্পর্কে, এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর কেউ এর বিরোধিতা করতেই পারে না। কারণ, কোম্পানিটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। ডেসটিনি একে অন্যকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে শেখায়, অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতে সার্বিক সহযোগিতা করে, অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে শেখায়, কর দিতে উদ্বুদ্ধ করে, সুদ-ঘুষ পরিহার করে বৈধভাবে আয় করতে শেখায়, চরিত্র গঠনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকে। এতসব যে কোম্পানির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব, তার বিরোধিতা করা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি ছাড়া আর কী হতে পারে!

কে না জানে যে অর্থের অভাবে মানুষের চরিত্র নষ্ট হয়, ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ চুরি করে, অর্থের লালসায় মানুষ অপকর্মে লিপ্ত হয়, আর এই অর্থের জন্যই একে অন্যের শত্রুতে পরিণত হয়, সমাজে খুন, রাহাজানি, সন্ত্রাস বেড়ে যায়। এতসব অঘটন ঘটার পেছনের একমাত্র কারণ সঠিক পথে পর্যাপ্ত উপার্জন-পন্থার অভাব। মানুষ সঠিক পন্থায় যদি পর্যাপ্ত উপার্জন করতে পারে তাহলে কেন তারা অন্যায় কাজে লিপ্ত হবে? ডেসটিনি সঠিক পথে এই অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। আর এই মহৎ কাজের সঠিক নেতৃত্ব বা দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার এমএলএম তথা নেটওয়ার্কের পুরোধা মোহাম্মদ রফিকুল আমীন।

আমরা বায়ান্ন সালে রক্তের বিনিময়ে মায়ের ভাষা বাংলাকে ছিনিয়ে এনেছি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। এত ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে যে সফলতা, এ সফলতার পরও কি আমরা প্রকৃত স্বাধীন হতে পেরেছি? আজ কেন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি? দেশের সর্ব বৃহৎ বিদ্যাপীঠ চত্বরেও কেন নারীরা আজও লাঞ্ছিত হয়? সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীর ভয়ে আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারি না কেন, কেন স্বাধীন দেশে আমাদের মা-বোনরা আজও নিরাপদ নয়? ধর্ষণ, ছিনতাই, রাহাজানি লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে, স্বাধীন জাতি হিসেবে কি এটা আমাদের জন্য লজ্জার নয়? কয়জন সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি? আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, আর ভালো কাজের সহযোগিতা করা। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থের কথা চিন্তা করে আমরা তার থেকে দূরে, অনেক দূরে ছিটকে পড়েছি। আমরা অন্যায়কারীদের কাছে কেন জিম্মি হয়ে থাকব, অন্যায় আবদারকে কেন প্রশ্রয় দেব? আজ এই ক্রান্তিলগ্নে প্রতিটি ডিস্ট্রিবিউটরের আবেদন, ডেসটিনি কর্তৃপক্ষ কোনো অন্যায় বা প্রতারণা করে থাকলে যথাযথ প্রমাণসাপেক্ষে তার বিচার করা হোক। কিন্তু ৪৫ লক্ষ মানুষের রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে তাদের জীবনকে যে অনিশ্চিতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তা অমানবিক। ডেসটিনি-২০০০ লিঃ জাতি গঠনে, সমাজ গঠনে, বেকারত্ব দূরীকরণে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছিল। নেটওয়ার্ক পদ্ধতির মাধ্যমে ডেসটিনি লাখো মানুষের সঠিকভাবে আয়ের পথ সুগম করেছিল। কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছিল। যেখানে পাঁচ-দশ হাজার টাকা মাইনের একটা চাকরি পেতে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা উপরি গুনতে হয়, সেখানে ডেসটিনি এমএলএম পদ্ধতিতে এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বনির্ভরতার রাস্তা সুগম করছিল, এটা কি কল্যাণকর নয়? ডিস্ট্রিবিউটররা মনে করেন, তাঁদের স্বপ্নদ্রষ্টা ও দক্ষিণ এশিয়ার নেটওয়ার্কের গুরু মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের হাত ধরে ডেসটিনি তাঁদের অর্থনৈতিক মুক্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তাঁদের বিশ্বাস, তাঁর হাত ধরেই তাঁরা স্বাবলম্বী হবে। তাই সরকারের প্রতি তাঁদের আকুল আর্তি, এমএলএম আইনের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হোক এবং তাঁদের স্বপ্নদ্রষ্টা মোহাম্মদ রফিকুল আমীনকে মুক্তি দেওয়া হোক। তাঁদের এই প্রত্যাশাটুকু পূরণ করা কি খুবই কঠিন? আশা করি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করবে।