ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এজন্য ডিজিটাল ভূমি জরিপ ও ভূমি ব্যবস্থাপনা একান্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষিন কোরিয়া আমাদের সহযোগীতা করছে। আমাদের মধ্যে কোথাও কোথাও কিছু ত্রুটি রয়েছে। এটা সংশোধনের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিতে পারবে না, মন্ত্রনালয়ও নিতে পারবে না। আমরা একটি সিস্টেমেরে মধ্যে দিয়ে এটিকে অপসারণ করতে চাই।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভূমি জরিপ ও ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে মন্ত্রী একথা বলেন।
আজ বুধবার (১৫ মে) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এসময় মন্ত্রী বলেন, এই কার্যক্রম প্রচারের জন্য আমরা একটি উদ্যোগ নিচ্ছি। রেডিও, টেলিভিশন, ইউটিউব, ফেসবুক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা আমরা এটি জানাবো। এর পরেও যদি কেউ জানতে না পারে, তাহলে দায়িত্ব সরকারের থাকবে না। আমরা চাই একটি ফ্রেশ/স্বচ্ছ ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আসতে। দেশে বেশিরভাগ মামলাই হচ্ছে জমি সংক্রান্ত, যা এর মাধ্যমে কমে আসবে।
আমি বলতে চাই, সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিকে সৎ ভাবে কার্যক্রম পরিচালন করতে হবে। এ বিষয়ে কোন ত্রুটি হলে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটুও ছাড় দেওয়া হবে না। আমি বলবো না আমাদের মাঝে ত্রুটি নাই। আমরা অবৈধ সুযোগ নেওয়ার জন্য টাকা দিতে চাই। আমি নিজেই এমপি হয়ে দেখেছি। কেউ একজন চাকরির কথা বললেই বলে, স্যার টাকা পয়সা যা লাগে দিবো। চাকরির আগেই বলে টাকা দিবো। জনগনকেও ঠিক হতে হবে। কেন চাকরির জন্য আমি টাকা দিবো। কেন টাকা দিয়ে আমি রেকর্ড করবো। বৈধ যেতুটুকু সেটা আপনার অধিকার, সেটা থেকে আপনি বঞ্চিত হলে আমরা দেখবো; আমরা কথা দিচ্ছি। কেউ কেউ বোনের জায়গা টাকা দিয়ে নিজের নামে রেকর্ড করায়। পরে যদি সেই বোন আসে তাহলে সেই রেকর্ড টিকবে নাতো। টাকাও গেলো।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন থেকে যে সার্টিফিকেট দেন সেটি একটু দেখে শুনে দিবেন। এরপর যদি কোন গাফলতি হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারিকে ধরবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা তার উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে একটি স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা দিতে চাই। আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে সুন্দর ভাবে এটি ভোগ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হক।
এসময় সেমিনারে ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই প্রমুখ ।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, অনুপস্থিত মালিকদের বিষয়ে এখনে প্রশ্ন করা হয়েছে। আমরা সর্বচ্চ প্রচারের মাধ্যমে চেষ্টা করবো তাদের কাছ পর্যন্ত বিষয়টি পৌছে দেওয়ার। কিন্তু শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু সরকারের না। এটা ওই মালিকের। কারণ যিনি মালিক তার জমি রক্ষা করার দায়িত্ব তার। জনগনকেও সচেতন হতে হবে। আমাদের ভূমি মন্ত্রনালয় থেকে শুরু করে একটি রেজিস্ট্রি অফিসের পিয়নের পর্যন্ত দায়িত্ব থাকবে, সচেতন ভাবে কাজ করা। আমি সেই আহ্বান জানাচ্ছি। এর ব্যতিক্রম কেউ করলে, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।