সম্প্রতির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের দুরবস্থা কাটতে না কাটতেই হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার সম্প্রতি বদলি হওয়া ওসি রাকিবুল ইসলাম খানের অপকর্মের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জানুয়ারি মাসের হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের ইন্সপেকশনের নামে থানার সকল এসআইদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং এএসআইদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কর্মকর্তাদের ওসি রাকিব জানান ওইসব টাকা পুলিশ সুপারকে দিতে হবে।
বিগত এপ্রিল মাসে সিলেট রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজির ইন্সপেকশন উপলক্ষ্যে এসআইদের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকা এবং এএসআইদের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ওসি রাকিব ওইসব চাঁদা না দিলে তাদের চাকরি না থাকার হুমকিও দেন।
মাধবপুর থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তবে তদন্তে সাক্ষী দিতে গিয়ে একজন পুলিশ সদস্যের অভিযোগ, মাধবপুরের সার্কেল এসপিকে প্রত্যেক এসআই মাসিক ৩ হাজার টাকা এবং এএসআইদের মাসিক ২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এছাড়া কোর্ট ইন্সপেক্টরদের ওয়ারেন্ট রেজিস্টার দেওয়ার সময়ও প্রত্যেককে ৮ হাজার টাকা করে দিতে হয়। এছাড়া মামলার নিরপরাধ আসামিদের চার্জশিট থেকে বাদ দিতে গেলেও ওসি, ওসি তদন্ত ও সার্কেলকে টাকা দিতে হয়। অন্যতায় তারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। চার্জশিটের অনুমোদন দেয় না।
অভিযোগে আরো জানা যায়, থানার কর্মকর্তাদের যানবাহনের তেল বাবদ কোন অর্থ বরাদ্ধ দেওয়া হয় না। জ্বালানী নিজেদের টাকা কিনতে হয়। হতদরিদ্র সিএনজি ড্রাইভারদের ২/৩টি সিএনজি প্রতিদিন বলপূর্বক থানায় এনে ডিউটি করাতে বাধ্য করানো হয়। এদেরকে দেয়া হয় না কোন ভাড়াও। প্রতিবাদ করলে সিএনজি থানায় আটকে রাখার ভয় দেখানো হয়।
বিগত কোরবানির ঈদে একজন ডোনার মাধবপুর থানাকে ২টি বড় গরু ও ১টি ছাগল দিলেও ওসি রাকিব কনস্টেবল ফয়সালের মাধ্যমে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত,বাহুবলের এমপির বরাদ্ধের ২টি সরকারি এসি আত্মসাৎ করলেও মাধবপুর থানায় বদলি হয়ে আসলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর নিউজ প্রচারিত হয়। আজ অবধি তিনি ওই সরকারি সম্পদ ফেরত দেননি।
এছাড়া কক্সবাজারে টেকনাফ থানার মেজর সিনহা হত্যা সময় ওই থানার ওসি প্রদীপ কুমারের সাথে তদন্ত ওসির দায়িত্বে ওই ছিলেন রাকিব।সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওই ওসি কার দাপট খাটিয়ে ওইসব ওইসব অপকর্ম করে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন সচেতন মহলের। ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় তার মালিকানার ভবন ৭ তলা ভবন নিয়ে অর্থের উৎসের বৈধতা নিয়েও মাধবপুর ও হবিগঞ্জে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
মাধবপুর উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বোরহান উদ্দিন জানান, এসব তথ্যে আমরা হতবাক হয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা দাবি তুলবো।