বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে বরিশালে। এতে নগরীর প্রায় সব সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতায় নাকাল নাগরিক জীবন। বিগত তিন দিন ধরে কখনো একনাগাড়ে আবার কখনো থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, সদর রোড, বটতলা থেকে চৌমাথা, কালীবাড়ি রোড, কবি জীবনানন্দ দাশ সড়ক, শীতলাখোলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া শহরের ৯, ২৩, ২৪, ২৫, ৩০ ও ২৯নং ওয়ার্ডে বিভিন্নজনের বসতবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে।
বটতলা এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, কীর্তনখোলা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হলেই বটতলা এলাকায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পরে। তার ওপরে তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা মারাত্মক অসুবিধায় আছি।
থ্রি-হুইলার চালক কবির হোসেন বলেন, পানিতে ডুবে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। রাস্তায় কোন স্থানে কাত হয়ে পরে যাই—এই আতঙ্কে থাকি সবসময়ে। বৃষ্টি আর রাস্তার পানিতে যাত্রীও কমে গেছে। গাড়ি ভাড়াও উঠছে না ঠিকভাবে।
২৫নং ওয়ার্ডের ভাসানী সড়ক এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রাঢ়ী বলেন, রাঢ়ী বাড়ি মসজিদ থেকে ফকিরবাড়ি মাদরাসা পর্যন্ত সড়কে হাঁটু সমান পানি। রাস্তাটিতে মানুষ হাঁটার মতো অবস্থা নেই। এই এলাকার মানুষ এত বেশি অসুবিধায় আছে, কেউ অসুস্থ হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া যায় না।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, সমস্যা শনাক্ত করে নতুন পরিষদ ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও ড্রেনের কাজ শুরু করেছে। কাজ বাস্তবায়ন হলে দুর্ভোগ কমে আসবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল বলেন, সিটি করপোরেশনের উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রয়েছে। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে একযোগে ড্রেন, সড়ক নির্মাণ চলছে। কাজ সম্পন্ন হলেও ওইসব এলাকার মানুষের ভোগান্তি কমে আসবে।
এদিকে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৭৩ মিলিমিটার এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এই তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. হুমায়ুন কবির।
তিনি জানান, লঘুচাপের কারণে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আরও দু-এক দিন থাকতে পারে। এদিকে লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় বরিশাল নদীবন্দরে ১ ও সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।