ঢাকা , রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
‘পদ্মা সেতু রেল’

বিল পরিশোধের সময় বাড়াচ্ছে না চীন

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড (বিল পরিশোধ) শেষ হবে ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর। এই সময় পর্যন্ত বিল পরিশোধ করবে চীন। প্রকল্পে কাজের বিলের ওপর ভিত্তি করেই অর্থছাড় করে দেশটি। কিন্তু চলতি মেয়াদে প্রকল্পের অনেক কাজ অসম্পূর্ণ থাকবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে বিল পরিশোধে আরও ছয় মাস সময় চায়। কিন্তু রাজি হচ্ছে না চীন। ফলে চ্যালেঞ্জে পড়েছে প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, প্রকল্পের প্যাকেজের ‘প্রভিশনাল সাম’ ও ‘প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট’- এই দুটি আইটেম থেকে সাশ্রয় করা অর্থ ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতের আওতায় সমন্বয় করে অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে ব্যয় করার প্রস্তাব চীনা এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হয়। তবে এক্সিম ব্যাংক থেকে সম্মতি মেলেনি। ফলে লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ডের মধ্যে প্রকল্পের সব কাজ শেষ করা ও এক্সিম ব্যাংক থেকে সম্মতি পাওয়ার পর সমুদয় বিল পরিশোধ করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বরের পর বিল কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে চলমান প্রকল্পে। লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড এক বছর বাড়ানোর অনুরোধ করা হলেও এক্সিম ব্যাংক অব চায়না থেকে ছয় মাস বাড়ানোর অনুমোদন দেয়। কিন্তু বাংলাদেশ এক বছর বাড়তি সময় চায়। জুলাই-২০২৪ থেকে আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত প্রায় দেড়মাস কাজের অগ্রগতি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়নি। পরিবর্তিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। অন্যথায় প্রকল্পের অনেক কাজ অসমাপ্ত থেকে যাবে বলে জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে সাশ্রয় ঋণের অংশ (প্রায় ৯৩ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করার প্রস্তাব চীনা এক্সিম ব্যাংক থেকে যাচাই-বাছাই চলমান।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে চীনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইআরডির এশিয়া উইংয়ের যুগ্মসচিব ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমি আপনাকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারবো না।’

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়। সে সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এই রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে চীনের অর্থায়নে, জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে। প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা এবং চীন দিচ্ছে ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।

প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও সময়-ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন করে ২০২৫ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে। চীন ঋণ প্রাপ্যতার সময় না বাড়ালে অনেক কাজ অসমাপ্ত থাকবে।

বিল পরিশোধ নিয়ে শঙ্কা
প্রকল্পের শুরু থেকে আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি টাকা ১৪ হাজার ৮৩৪ কোটি ১৯ লাখ এবং চীনা ঋণ ১৮ হাজার ৯১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। লোন অ্যাভেইলিবিলিটি পিরিয়ড ১৭ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। ঢাকা-মাওয়া অংশে ৯৭ দশমিক ৫৫ ও মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

লোন অ্যাভেইলেবিলিটি বাড়ানোর জন্য চীনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে ছয় মাস সময় আছে। কিন্তু এই সময়ে প্রকল্পের সব কাজ হবে না। হাতে কিছু সময় রেখে ছয় মাস সময় চাচ্ছি। আমরা চীনকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, দেখা যাক কী হয়।- প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন

ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বাণিজ্যিকভাবে গত ১ নভেম্বর ২০২৩ থেকে ট্রেন পরিচালিত হচ্ছে। ভাঙ্গা-যশোর অংশে অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। এই প্যাকেজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর অংশে প্রায় ১১০ কিমি রেলপথ স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। নয়টি স্টেশন ভবন নির্মাণকাজ শেষে সিগন্যালিংয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে টিটিপাড়ায় সিটিসি ভবন, ভাঙ্গা জংশন ওভারহেড স্টেশন ভবন, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণকাজ শেষ হতে জানুয়ারি ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। টিটিপাড়ায় অফিস ভবন নির্মাণকাজ শেষ হতে লাগতে পারে এপ্রিল-২০২৫ পর্যন্ত।

অথচ চীনা লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর শেষ হবে। এই তারিখের মধ্যে সব কাজ শেষ করে বিল তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ। এরই মধ্যে ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ভবনের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণকাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ ও টিটিপাড়ায় সিটিসি ভবনের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ও টিটিপাড়া আন্ডারপাস কাজের জন্য আনুমানিক ব্যয় হবে ৩৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার। চীনা লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড না বাড়লে মিলবে না চীনের অবশিষ্ট ঋণের অর্থ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন, ‘লোন অ্যাভেইলেবিলিটি বাড়ানোর জন্য চীনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে ছয় মাস সময় আছে। কিন্তু এই সময়ে প্রকল্পের সব কাজ হবে না। বন্যাসহ নানা কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুদিন বন্ধও ছিল। ফলে আমরা মনে করছি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে তিন মাস লাগবে। এছাড়া হাতে কিছু সময় রেখে ছয় মাস সময় চাচ্ছি। আমরা চীনকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, দেখা যাক কী হয়।’

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি এবং প্রথম সংশোধিত অনুযায়ী প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত আরডিপিপি অনুযায়ী জিওবি অংশে ব্যয় কমেছে ৫৪১ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ অংশে কমেছে ৮০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সার্বিকভাবে প্রকল্প ব্যয় কমেছে ৬২১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

‘পদ্মা সেতু রেল’

বিল পরিশোধের সময় বাড়াচ্ছে না চীন

আপডেট সময় ০৭:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড (বিল পরিশোধ) শেষ হবে ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর। এই সময় পর্যন্ত বিল পরিশোধ করবে চীন। প্রকল্পে কাজের বিলের ওপর ভিত্তি করেই অর্থছাড় করে দেশটি। কিন্তু চলতি মেয়াদে প্রকল্পের অনেক কাজ অসম্পূর্ণ থাকবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে বিল পরিশোধে আরও ছয় মাস সময় চায়। কিন্তু রাজি হচ্ছে না চীন। ফলে চ্যালেঞ্জে পড়েছে প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, প্রকল্পের প্যাকেজের ‘প্রভিশনাল সাম’ ও ‘প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট’- এই দুটি আইটেম থেকে সাশ্রয় করা অর্থ ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতের আওতায় সমন্বয় করে অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে ব্যয় করার প্রস্তাব চীনা এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হয়। তবে এক্সিম ব্যাংক থেকে সম্মতি মেলেনি। ফলে লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ডের মধ্যে প্রকল্পের সব কাজ শেষ করা ও এক্সিম ব্যাংক থেকে সম্মতি পাওয়ার পর সমুদয় বিল পরিশোধ করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বরের পর বিল কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে চলমান প্রকল্পে। লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড এক বছর বাড়ানোর অনুরোধ করা হলেও এক্সিম ব্যাংক অব চায়না থেকে ছয় মাস বাড়ানোর অনুমোদন দেয়। কিন্তু বাংলাদেশ এক বছর বাড়তি সময় চায়। জুলাই-২০২৪ থেকে আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত প্রায় দেড়মাস কাজের অগ্রগতি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়নি। পরিবর্তিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। অন্যথায় প্রকল্পের অনেক কাজ অসমাপ্ত থেকে যাবে বলে জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে সাশ্রয় ঋণের অংশ (প্রায় ৯৩ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করার প্রস্তাব চীনা এক্সিম ব্যাংক থেকে যাচাই-বাছাই চলমান।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে চীনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইআরডির এশিয়া উইংয়ের যুগ্মসচিব ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমি আপনাকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারবো না।’

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়। সে সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এই রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে চীনের অর্থায়নে, জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে। প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা এবং চীন দিচ্ছে ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।

প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও সময়-ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন করে ২০২৫ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে। চীন ঋণ প্রাপ্যতার সময় না বাড়ালে অনেক কাজ অসমাপ্ত থাকবে।

বিল পরিশোধ নিয়ে শঙ্কা
প্রকল্পের শুরু থেকে আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি টাকা ১৪ হাজার ৮৩৪ কোটি ১৯ লাখ এবং চীনা ঋণ ১৮ হাজার ৯১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগস্ট-২০২৪ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৯৬ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। লোন অ্যাভেইলিবিলিটি পিরিয়ড ১৭ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। ঢাকা-মাওয়া অংশে ৯৭ দশমিক ৫৫ ও মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

লোন অ্যাভেইলেবিলিটি বাড়ানোর জন্য চীনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে ছয় মাস সময় আছে। কিন্তু এই সময়ে প্রকল্পের সব কাজ হবে না। হাতে কিছু সময় রেখে ছয় মাস সময় চাচ্ছি। আমরা চীনকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, দেখা যাক কী হয়।- প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন

ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বাণিজ্যিকভাবে গত ১ নভেম্বর ২০২৩ থেকে ট্রেন পরিচালিত হচ্ছে। ভাঙ্গা-যশোর অংশে অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। এই প্যাকেজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর অংশে প্রায় ১১০ কিমি রেলপথ স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। নয়টি স্টেশন ভবন নির্মাণকাজ শেষে সিগন্যালিংয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে টিটিপাড়ায় সিটিসি ভবন, ভাঙ্গা জংশন ওভারহেড স্টেশন ভবন, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণকাজ শেষ হতে জানুয়ারি ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। টিটিপাড়ায় অফিস ভবন নির্মাণকাজ শেষ হতে লাগতে পারে এপ্রিল-২০২৫ পর্যন্ত।

অথচ চীনা লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর শেষ হবে। এই তারিখের মধ্যে সব কাজ শেষ করে বিল তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ। এরই মধ্যে ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ভবনের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণকাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ ও টিটিপাড়ায় সিটিসি ভবনের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ও টিটিপাড়া আন্ডারপাস কাজের জন্য আনুমানিক ব্যয় হবে ৩৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার। চীনা লোন অ্যাভেইলেবিলিটি পিরিয়ড না বাড়লে মিলবে না চীনের অবশিষ্ট ঋণের অর্থ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন, ‘লোন অ্যাভেইলেবিলিটি বাড়ানোর জন্য চীনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে ছয় মাস সময় আছে। কিন্তু এই সময়ে প্রকল্পের সব কাজ হবে না। বন্যাসহ নানা কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুদিন বন্ধও ছিল। ফলে আমরা মনে করছি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে তিন মাস লাগবে। এছাড়া হাতে কিছু সময় রেখে ছয় মাস সময় চাচ্ছি। আমরা চীনকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, দেখা যাক কী হয়।’

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি এবং প্রথম সংশোধিত অনুযায়ী প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত আরডিপিপি অনুযায়ী জিওবি অংশে ব্যয় কমেছে ৫৪১ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ অংশে কমেছে ৮০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সার্বিকভাবে প্রকল্প ব্যয় কমেছে ৬২১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।