লৌহজং উপজেলায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেও আতঙ্কে রয়েছে বিএনপি দুটি পরিবার। গত ৬ নভেম্বর রাতে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব লুৎফর রহমান পাভেল মোল্লা লোকজন মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের অফিসে তুচ্ছ ঘটনায় আতংকিত হামলা চালায়।
এতে ওই ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ (৬০) তার ছেলে শ্রমিক নেতা রাব্বি শেখ (৩২) ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রমজান হোসেন (৪৫) গুরুতর রক্তাক্ত জখম সহ আহত হয়। পরে পদ্মা উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। এতে এখন বিভিন্ন সময় চাপ দিচ্ছে অভিযোগ উত্তোলনের জন্য পাভেল মোল্লা লোকজন।
গুরুতর আহত রমজান হোসেন (৪৫) বলেন, গত ৬ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে আমরা আমাদের শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে কথা বলছিলাম। পরে পাভেল মোল্লার লোকজন তাদের একক আধিপত্যের জন্য আমাদের উপর অতকিত হামলা চালায়। আমার হাতের তিনটি আঙুল ভেঙে গেলে। আর রড দিয়ে এমন পিটিয়েছে আমি এখনো ঠিকমতো বসতে পারছি না।
হামলায় শওকত, বাবু, সোলেমান, সাগর, সজিব সহ ১৫ থেকে ২০ জন হামলা চালায়। পাভেল মোল্লা উপজেলা বিএনপির বড় নেতা অপু চাকলাদারের লোক হওয়াতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেন। আমাদের হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে, অপর আহত মেদেনীমন্ডল ৮ নং বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ (৬০) বলেন, আমি বিএনপি করি প্রতিষ্ঠা থেকে। তুচ্ছ ঘটনায় আমার ছেলে রাব্বিকে মারতেছে, ছাড়াতে গেলে ওরা আমাকেও মেরেছে। পাভেল আগে বিএনপি করে নাই। জাতীয় পাটির নেতা ছিলো। এখনও বিএনপিকে ভোট দেয় নাই। তার দাপটে থাকতে পারছি। তার দখলে সব কিছুই থাকতে হবে কেন? আমাদের অভিযোগ উত্তোলনের জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। আমার ছেলেকে এতো মারছে কথাও এখন ঠিকমতো বলতে পারছে না।
বাকরুদ্ধ হয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা শ্রমিক নেতা রাব্বি সাথে কথা বলতে চাইলে। তিনি ইশারা দিচ্ছেন কিন্তু কথা বলতে পারছেন না। তার মা বলেন, আমার ছেলের স্বামী ও ছেলের উপর যারা হামলা করছে, তাদের বিচার চাই।
এছাড়াও, পাভেল মোল্লা’র বিরুদ্ধে নিজ দলীয় কর্মী’কে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে মেদেনীমন্ডল ১ নং ওয়ার্ড আ’লীগের পাটি অফিস দখল, পদ্মার অবৈধ বালু উত্তোলন, মাওয়া মাছের বাজারে চাঁদাবাজি, অটোরিকশা-মিশুক ও সিএনজি স্টান্ডের চাঁদাবাজি’র অভিযোগ রয়েছে।
তার ছত্রছায়া’য় যুবদলের একাধিক নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি ও মাছ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও থেমে নেই লূৎফর রহমান পাভেল মোল্লা। এখন নিজ দলীয় লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে করছেন হয়রানি।
গত ২২ অক্টোবর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাওয়া বাজার এলাকার দোকানদার মিলন ইসলামদের সাথে মেদেনীমন্ডল ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি মনির মাদবরের ছোট ভাই সোহাগ মাদবরের রাস্তায় অটোরিকশা থামিয়ে রাখা নিয়ে ঝগড়া হয়। পাভেল এর ইন্ধনে তাকে ওই ঘটনায় পদ্মা সেতু উত্তর থানায় দায়ের করা মামলায় আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লৌহজং উপজেলায় যুবদলের সদস্য সচিব লুৎফর রহমান পাভেল মোল্লা বলেন, দুটি পক্ষই বিএনপির লোক। আমার একার লোক নয়। বিষয় টা নিয়ে উপজেলা সিনিয়র নেতারা আলোচনা করছে, খুব তাড়াতাড়ি মিমাংসা হয়ে যাবে।
পদ্মা উত্তর থানার (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, দু’টি পক্ষই বিএনপির। ড্রেজারে পাইপ নিয়ে দন্ড হয়েছে। স্হানীয় নেতারা সমাধান করছেন।