ঢাকা , বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুন্সীগঞ্জে বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি দামে

মুন্সীগঞ্জে বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি দামে।

মুন্সীগঞ্জে আমদানি করা বীজ আলু যেন সোনার হরিণ। হল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত বীজের ৫০ কেজির প্রতি বাক্স আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকার ওপরে। গত বছর একই পরিমাণ বীজ আলুর দাম ছিল মাত্র ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। এ বছর প্রথমে ১১ হাজার টাকা দরে বিক্রি শুরু করলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণের বেশি।এতে ক্ষোভ ঝরেছে কৃষকের কণ্ঠে। তাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হয়েছে বীজ আলুর দাম।

আলু উৎপাদনে জন্য মুন্সীগঞ্জে বীজ আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে জেলার প্রান্তিক চাষিরা। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু। প্রতি বছর প্রান্তিক চাষিরা আলু চাষে লোকসানে পরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তও হয় তারা। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠে। পুঁজি হারিয়ে আবারো লাভের মুখ দেখার আশায় আলু চাষ করে। জেলার প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করে আর ফায়দা লুটে মধ্যসত্বভোগীরা।

আলু চাষিরা চলতি মৌসুমে আলু আবাদের জন্য জমিতে জমে থাকা কচুরিপানা, ধান গাছসহ অন্যান্য আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আবাদে জোরে শোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে আলু আবাদের কাজ শুরু হবে।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আলু মৌসুমে জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৬৭৪ হেক্টর, টংগীবাড়ীতে ৯ হাজার ৯৪ হেক্টর, শ্রীনগরে ১ হাজার ৯১৭ হেক্টর, সিরাজদীখানে ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর, লৌহজং ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ২ হাজার ৪ হেক্টর জমি।

এদিকে, কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ টন। জেলায় গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়, ফলন হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ টন।

অপরদিকে, বীজ আলুর সবচেয়ে বড় বাজার রয়েছে জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলায়। সেখানে এখন বাক্স আলুর আলু বা বিদেশ থেকে আমদানি করা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা করে। যা গতবছর ছিলো ১২ হাজার টাকা দর। আর বীজ বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজারের উপরে। এতে কৃষকরা পরেছে চিন্তায়। একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে বীজের দাম, জমি, সার ও বদলী খরচ নিয়ে সংস্কায় রয়েছে তারা। তারা আরও জানান, সরকারের উচিৎ বীজ আলু ও সারের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের জন্য বীজ আলুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬৯ হাজার ৩১০ টন। জেলার হিমাগারগুলোতে বীজ আলু রয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার ৫১৬ টন। আমদানি করা বীজ দিয়ে বাকি চাহিদা পূরণ করা হবে। খাবার আলুর বাজার মূল্য বেশি থাকায় অনেক আলু ব্যবসায়ী হিমাগারে রাখা বীজ আলু বিক্রি করে দিচ্ছে।

তারা আরও জানায়, বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় না থাকলে আশংকা রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট বীজ আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে আবাদ কম হবার আশংকা থাকবে। চলতি আলু মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, এ বছর ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত মূল্যে বীজ আলু বিক্রিতে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সীগঞ্জে বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি দামে

আপডেট সময় ০৬:১০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

মুন্সীগঞ্জে আমদানি করা বীজ আলু যেন সোনার হরিণ। হল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত বীজের ৫০ কেজির প্রতি বাক্স আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকার ওপরে। গত বছর একই পরিমাণ বীজ আলুর দাম ছিল মাত্র ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। এ বছর প্রথমে ১১ হাজার টাকা দরে বিক্রি শুরু করলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণের বেশি।এতে ক্ষোভ ঝরেছে কৃষকের কণ্ঠে। তাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হয়েছে বীজ আলুর দাম।

আলু উৎপাদনে জন্য মুন্সীগঞ্জে বীজ আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে জেলার প্রান্তিক চাষিরা। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু। প্রতি বছর প্রান্তিক চাষিরা আলু চাষে লোকসানে পরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তও হয় তারা। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠে। পুঁজি হারিয়ে আবারো লাভের মুখ দেখার আশায় আলু চাষ করে। জেলার প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করে আর ফায়দা লুটে মধ্যসত্বভোগীরা।

আলু চাষিরা চলতি মৌসুমে আলু আবাদের জন্য জমিতে জমে থাকা কচুরিপানা, ধান গাছসহ অন্যান্য আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আবাদে জোরে শোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে আলু আবাদের কাজ শুরু হবে।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আলু মৌসুমে জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৬৭৪ হেক্টর, টংগীবাড়ীতে ৯ হাজার ৯৪ হেক্টর, শ্রীনগরে ১ হাজার ৯১৭ হেক্টর, সিরাজদীখানে ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর, লৌহজং ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ২ হাজার ৪ হেক্টর জমি।

এদিকে, কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ টন। জেলায় গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়, ফলন হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ টন।

অপরদিকে, বীজ আলুর সবচেয়ে বড় বাজার রয়েছে জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলায়। সেখানে এখন বাক্স আলুর আলু বা বিদেশ থেকে আমদানি করা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা করে। যা গতবছর ছিলো ১২ হাজার টাকা দর। আর বীজ বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজারের উপরে। এতে কৃষকরা পরেছে চিন্তায়। একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে বীজের দাম, জমি, সার ও বদলী খরচ নিয়ে সংস্কায় রয়েছে তারা। তারা আরও জানান, সরকারের উচিৎ বীজ আলু ও সারের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, জেলায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের জন্য বীজ আলুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬৯ হাজার ৩১০ টন। জেলার হিমাগারগুলোতে বীজ আলু রয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার ৫১৬ টন। আমদানি করা বীজ দিয়ে বাকি চাহিদা পূরণ করা হবে। খাবার আলুর বাজার মূল্য বেশি থাকায় অনেক আলু ব্যবসায়ী হিমাগারে রাখা বীজ আলু বিক্রি করে দিচ্ছে।

তারা আরও জানায়, বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় না থাকলে আশংকা রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট বীজ আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে আবাদ কম হবার আশংকা থাকবে। চলতি আলু মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, এ বছর ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত মূল্যে বীজ আলু বিক্রিতে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।