প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতামুক্ত বিশ্ব গড়ি’। নারীর প্রতি সহিংসতার কুফল ভোগ করতে হয় ধর্ম-বর্ণ-সংস্কৃতি নির্বিশেষে। এ উপলব্ধি থেকে ১৬ দিনের প্রচার অভিযানে সমাজের প্রত্যেক মানুষকে একত্রে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।
এত কিছুর পরও নারীর ওপর সহিংসতার চিত্রটি ভিন্ন। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুসারে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে সারা দেশের থানা ও আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০–এর যৌতুক, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ ও অপহরণ ধারায় মোট ১২ হাজার ৭৬৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৬টি। বাকিগুলো শিশু নির্যাতনের অভিযোগে। নারী নির্যাতনের মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৩৯ জনকে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৮৩৫ জন। অর্থাৎ ওই ৯ মাসে প্রায় ৬৮ শতাংশ বা দুই–তৃতীয়াংশের বেশি আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এ ছাড়াও গত ৯ মাসে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৩টি। এর মধ্যে ২২৩টি দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর ১২ জনকে হত্যা, ধর্ষণচেষ্টা ১ হাজার ৪২৬টি। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৩ হাজার ২০৮টি, এর মধ্যে ১৩৬ নারী হত্যার শিকার। অপহরণের ঘটনায় ২ হাজার ৬১৭টি এবং দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপের ঘটনায় ৪২টি মামলা হয়েছে।
একক ধর্ষণের ঘটনা ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্যাতনের ঘটনায় আসামি থাকেন একাধিক ব্যক্তি। যৌতুকের মতো পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনায় স্বামীর সঙ্গে পরিবারের অনেক সদস্যকেও আসামি করা হয়। নারী সহিংসতা রোধে এত আইনকানুন থাকার পরও মামলার আসামিদের বড় একটি অংশ পুলিশের নাগালের বাইরে থেকে যায়।