ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের উলম্ব অভিযান

চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সরাসরি ভারতের উলম্ব অভিযান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার নিজস্ব মেরুদণ্ডের ওপর দাঁড়াবে তা কখনোই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র চায়নি। এজন্যই তারা শেখ হাসিনার পতনকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। কথাবার্তা নেই হঠাৎ করে একটি সংগঠন, তাদের বৈধতা আছে কি না, এ সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ অবহিত নয়। তাদের একজন নেতার বিতর্কিত আচরণের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ভেতরের কেউ-কেউ এবং বাহির থেকে সেই বিতর্কিত নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করছেন।

‘এই প্রতিবাদ আসাটাই সারা দেশের মানুষকে এক ধরনের দুশ্চিন্তার মাঝে ফেলেছে। মানুষ বিস্মিত হয়ে বিষয়টি লক্ষ্য করছে চিন্ময় নামে একটি ব্যক্তি যিনি একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, অথচ সেই সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন তাকে আগে অনৈতিক কাজের অপরাধে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর-ঘাতক সরকারের পতনের পর থেকে ইসকনের (হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন) অস্বাভাবিক তৎপরতা বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে। তাদের দাবি কী? যতটুকু জানতে পেরেছি সেটিও আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। তাদের দাবি নিয়ে দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশে কী এমন ঘটনা ঘটেছে যে ৭টি বিভাগীয় শহরে কর্মসূচি দিয়েছে, একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে। সর্বোপরি চট্টগ্রামে সাইফুল ইসলাম নামের একজন আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এগুলো কীসের ইঙ্গিত বহন করে? কী করতে চাচ্ছে তারা? আবার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তার গ্রেপ্তার নিয়ে মুক্তি দাবি করেছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্রলীগের খুনিরা যখন বিশ্বজিতকে ধাওয়া করে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করল, নিপুণ রায়কে রাস্তার মাঝে ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিলো তখন তো পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিবাদ করতে দেখলাম না! তারাও তো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। বাংলাদেশে ইসকন নামে ভুঁইফোড় সংগঠনকে কখনো দেখিনি শেখ হাসিনা যখন দেশে দুঃশাসন কায়েম করেছিল, হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে হত্যা করল তখন তাদের একটি বিবৃতি দিতে। অথচ যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের তৎপরতা উদ্বেগজনক, যা সারা দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।

তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তির জন্য তারা মুক্তি দাবি করছেন তিনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি দেশের স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করছে। কক্সবাজারের এক ওসি একজন মেজরকে গুলি করে হত্যা করেছিল। সেই ওসি হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিল। সে সময় আমরা দেখেছি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র তার পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করেছে। তাহলে এখানে কি ভারত মানুষকে যাগযজ্ঞ করে ছেড়েছে। যারা ঢুকে পড়বে, হেঁটে যাবে কিছু বলা যাবে না। অন্যায় করলেও কিছু করা যাবে না। এগুলো আজকে মানুষের মনে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রিজভী বলেন, ভারত আমাদের স্বার্থে কখনই কাজ করেনি। বাংলাদেশ মরে যাক, ধ্বংস হোক এতে তাদের কিছু আসে যায় না। এটি হচ্ছে দিল্লির ঘোষিত নীতি। শেখ হাসিনা থাকলে তাদের অনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করতে কোনো বিঘ্ন হতো না। এদেশের গণতন্ত্র মনা মানুষ, জাতীয়তাবাদী শক্তি তারা যেহেতু কিছুটা স্পেস পেয়েছে, গণতন্ত্র এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে, বিশুদ্ধ বাতাস নিতে পারছে, এই জিনিসগুলো পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের ভালো লাগছে না।

 

চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের উলম্ব অভিযান

আপডেট সময় ০৭:৪৩:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সরাসরি ভারতের উলম্ব অভিযান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার নিজস্ব মেরুদণ্ডের ওপর দাঁড়াবে তা কখনোই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র চায়নি। এজন্যই তারা শেখ হাসিনার পতনকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। কথাবার্তা নেই হঠাৎ করে একটি সংগঠন, তাদের বৈধতা আছে কি না, এ সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ অবহিত নয়। তাদের একজন নেতার বিতর্কিত আচরণের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ভেতরের কেউ-কেউ এবং বাহির থেকে সেই বিতর্কিত নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করছেন।

‘এই প্রতিবাদ আসাটাই সারা দেশের মানুষকে এক ধরনের দুশ্চিন্তার মাঝে ফেলেছে। মানুষ বিস্মিত হয়ে বিষয়টি লক্ষ্য করছে চিন্ময় নামে একটি ব্যক্তি যিনি একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, অথচ সেই সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন তাকে আগে অনৈতিক কাজের অপরাধে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর-ঘাতক সরকারের পতনের পর থেকে ইসকনের (হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন) অস্বাভাবিক তৎপরতা বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে। তাদের দাবি কী? যতটুকু জানতে পেরেছি সেটিও আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। তাদের দাবি নিয়ে দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশে কী এমন ঘটনা ঘটেছে যে ৭টি বিভাগীয় শহরে কর্মসূচি দিয়েছে, একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে। সর্বোপরি চট্টগ্রামে সাইফুল ইসলাম নামের একজন আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এগুলো কীসের ইঙ্গিত বহন করে? কী করতে চাচ্ছে তারা? আবার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তার গ্রেপ্তার নিয়ে মুক্তি দাবি করেছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্রলীগের খুনিরা যখন বিশ্বজিতকে ধাওয়া করে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করল, নিপুণ রায়কে রাস্তার মাঝে ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিলো তখন তো পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিবাদ করতে দেখলাম না! তারাও তো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। বাংলাদেশে ইসকন নামে ভুঁইফোড় সংগঠনকে কখনো দেখিনি শেখ হাসিনা যখন দেশে দুঃশাসন কায়েম করেছিল, হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে হত্যা করল তখন তাদের একটি বিবৃতি দিতে। অথচ যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের তৎপরতা উদ্বেগজনক, যা সারা দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।

তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তির জন্য তারা মুক্তি দাবি করছেন তিনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি দেশের স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করছে। কক্সবাজারের এক ওসি একজন মেজরকে গুলি করে হত্যা করেছিল। সেই ওসি হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিল। সে সময় আমরা দেখেছি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র তার পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করেছে। তাহলে এখানে কি ভারত মানুষকে যাগযজ্ঞ করে ছেড়েছে। যারা ঢুকে পড়বে, হেঁটে যাবে কিছু বলা যাবে না। অন্যায় করলেও কিছু করা যাবে না। এগুলো আজকে মানুষের মনে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রিজভী বলেন, ভারত আমাদের স্বার্থে কখনই কাজ করেনি। বাংলাদেশ মরে যাক, ধ্বংস হোক এতে তাদের কিছু আসে যায় না। এটি হচ্ছে দিল্লির ঘোষিত নীতি। শেখ হাসিনা থাকলে তাদের অনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করতে কোনো বিঘ্ন হতো না। এদেশের গণতন্ত্র মনা মানুষ, জাতীয়তাবাদী শক্তি তারা যেহেতু কিছুটা স্পেস পেয়েছে, গণতন্ত্র এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে, বিশুদ্ধ বাতাস নিতে পারছে, এই জিনিসগুলো পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের ভালো লাগছে না।