ঢাকা , রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: কৃতিত্ব নিতে ট্রাম্প-বাইডেনের টানাটানি

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গতকাল বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি নিজেদের কৃতিত্ব বলে দাবি করছেন। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ট্রাম্প কিছুটা কৃতিত্ব পাওয়ার দাবিদার। ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কয়েক দিন আগে হওয়া চুক্তিটিকে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য এক তিতা-মিঠা বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। খবর: এফপির

বাইডেন গত ৩১ মে সর্বপ্রথম ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তির রূপরেখা প্রস্তাব করেছিলেন। তবে এই ব্যাপারে কয়েক দফায় কূটনৈতিক তৎপরতা নেওয়া হলেও তা ব্যর্থ হয়। গত আগস্টে তেল আবিব সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, এটাই হয়তো চুক্তির শেষ সুযোগ।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ গত শনিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয়ে যান এবং ইসরায়েলি এই নেতাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চাপ দেন।

এ যেন ১৯৮১ সালে ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জিম্মিদের মুক্ত করার চুক্তিটিকেই প্রতিধ্বনিত করছে। তৎকালীন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার রিপাবলিকান নেতা রোনাল্ড রিগ্যানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর পরই জিম্মিরা ৪৪৪ দিনের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। যদিও এবারের চুক্তিটির ক্ষেত্রে বিদায়ী ও আসন্ন প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করেছে।

উইটকফ এবং বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্ক যৌথভাবে কাতারের আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার চুক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।

চুক্তির পর পরই ট্রাম্প দাবি করেছেন, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছেন বলেই চুক্তিটি সম্ভব হয়েছে। ট্রাম্পের কৃতিত্ব আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘এটা কি কোনো তামাশা?’

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদায়ী ভাষণ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন এক সুরে কথা বলতে পারে তা নিশ্চিত করতে তিনি ট্রাম্পের প্রতিনিধি দলকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেছেন, ইতিবাচক খবরের কৃতিত্ব যে সব পক্ষই নিতে চাইবে তা আগেই জানা ছিল। তবে তাঁর দাবি, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনই আসলে এটা সম্ভব করেছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলকে জোরালো সমর্থন দিয়ে আসছিলেন বাইডেন। এর জন্য নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির বামপন্থী ঘরানার সদস্যদের ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র হিসেবে পরিচিত ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় বাইডেনকে সমালোচনা করতে দেখা যায়নি। বরং তিনি গাজায় যুদ্ধ চালাতে ইসরায়েলের জন্য কোটি কোটি ডলার মূল্যের মার্কিন সহায়তা অনুমোদন করেছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তাদের জিম্মি করেছিল হামাস।

প্যারিসের জ্যঁ জরেস ফাউন্ডেশনের ইসরায়েল বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড খালফার মতে, ট্রাম্পকে নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না। আর এর প্রভাবটাই হয়তো হামাসের ওপর পড়েছে।

নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন খালফা। তাঁর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী সরকারের অবস্থাটা নড়বড়ে।

খালফা বলেন, ‘বর্তমানে মার্কিন জনতুষ্টবাদী ডানপন্থী পক্ষ এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একটি মতাদর্শিক মিল রয়েছে। তাই পুনর্নির্বাচনের চাপের মুখোমুখি না হওয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কৌশল খাটানোর ক্ষেত্রে তাঁর (নেতানিয়াহু) একটা নমনীয় জায়গা আছে।’

অধিকার সংগঠন ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ-এর নির্বাহী পরিচালক সারাহ লিয়াহ হুইটসন বলেন, ‘যেকোনো উপায়ে ইসরায়েলকে চাপ দিতে গেলে আবার কী ধরনের রাজনৈতিক মূল্য দিতে হয় তা নিয়ে শঙ্কিত ছিল বাইডেন প্রশাসন।’

ওয়াশিংটন ভিত্তিক মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো ব্রায়ান কাটুলিস বলেন, ইসরায়েল এবং অন্য ডানপন্থীদের ধারণা ছিল, ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে চুক্তিটি সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ট্রাম্পের চেয়েও বড় বিষয় হয়ে উঠেছিল। হামাস এবং তার পৃষ্ঠপোষক ইরান উভয়ের ওপরই এর প্রভাব পড়েছে।

লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহ এবং ইরানের নিজস্ব বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। আরব বিশ্বে তেহরানের অন্যতম মিত্র সিরিয়ার বাশার আল-আসাদকে গত মাসে বিদ্রোহী বাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করেছে।

কাটুলিস বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পের কাছ থেকে যে হুমকি-ধমকি ও তর্জন-গর্জন দেখেছি তা কোনো পক্ষের জন্যই বিশাল বিষয় ছিল বলে আমি মনে করি না। আমি মনে করি এটি অনেকটাই শিশুর মতো, যেটিকে বাইডেন এবং তার দল জন্ম দিয়েছে।’

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য কর্মসূচি বিষয়ক পরিচালক জন অল্টারম্যান মনে করেন, ট্রাম্পের জয় নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, তা এ চুক্তিটি হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

ইসরায়েল ও হামাস এমন সব শর্তের আওতায় আলোচনা করেছে যা দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য ছিল। দু পক্ষই জানত যেকোনো সময় মাপকাঠিগুলো বদলে যাওয়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ আছে।

চুক্তিটি যদি ভেস্তে যায় তখন কী হবে? এমন প্রশ্নও উঠছে।

এই বিষয়ে অল্টারম্যান বলেন, ‘তখন আর কে এইটা বাস্তবায়ন করল সেটা কোনো বিষয় হবে। চারদিকে তখন প্রচুর দোষারোপের খেলা চলবে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

তিন বন্দির মুক্তির পর ১৮৩ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: কৃতিত্ব নিতে ট্রাম্প-বাইডেনের টানাটানি

আপডেট সময় ০২:৪২:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গতকাল বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি নিজেদের কৃতিত্ব বলে দাবি করছেন। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ট্রাম্প কিছুটা কৃতিত্ব পাওয়ার দাবিদার। ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কয়েক দিন আগে হওয়া চুক্তিটিকে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য এক তিতা-মিঠা বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। খবর: এফপির

বাইডেন গত ৩১ মে সর্বপ্রথম ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তির রূপরেখা প্রস্তাব করেছিলেন। তবে এই ব্যাপারে কয়েক দফায় কূটনৈতিক তৎপরতা নেওয়া হলেও তা ব্যর্থ হয়। গত আগস্টে তেল আবিব সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, এটাই হয়তো চুক্তির শেষ সুযোগ।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ গত শনিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয়ে যান এবং ইসরায়েলি এই নেতাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চাপ দেন।

এ যেন ১৯৮১ সালে ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জিম্মিদের মুক্ত করার চুক্তিটিকেই প্রতিধ্বনিত করছে। তৎকালীন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার রিপাবলিকান নেতা রোনাল্ড রিগ্যানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর পরই জিম্মিরা ৪৪৪ দিনের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। যদিও এবারের চুক্তিটির ক্ষেত্রে বিদায়ী ও আসন্ন প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করেছে।

উইটকফ এবং বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্ক যৌথভাবে কাতারের আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার চুক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।

চুক্তির পর পরই ট্রাম্প দাবি করেছেন, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছেন বলেই চুক্তিটি সম্ভব হয়েছে। ট্রাম্পের কৃতিত্ব আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘এটা কি কোনো তামাশা?’

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদায়ী ভাষণ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন এক সুরে কথা বলতে পারে তা নিশ্চিত করতে তিনি ট্রাম্পের প্রতিনিধি দলকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেছেন, ইতিবাচক খবরের কৃতিত্ব যে সব পক্ষই নিতে চাইবে তা আগেই জানা ছিল। তবে তাঁর দাবি, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনই আসলে এটা সম্ভব করেছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলকে জোরালো সমর্থন দিয়ে আসছিলেন বাইডেন। এর জন্য নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির বামপন্থী ঘরানার সদস্যদের ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র হিসেবে পরিচিত ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় বাইডেনকে সমালোচনা করতে দেখা যায়নি। বরং তিনি গাজায় যুদ্ধ চালাতে ইসরায়েলের জন্য কোটি কোটি ডলার মূল্যের মার্কিন সহায়তা অনুমোদন করেছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তাদের জিম্মি করেছিল হামাস।

প্যারিসের জ্যঁ জরেস ফাউন্ডেশনের ইসরায়েল বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড খালফার মতে, ট্রাম্পকে নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না। আর এর প্রভাবটাই হয়তো হামাসের ওপর পড়েছে।

নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন খালফা। তাঁর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী সরকারের অবস্থাটা নড়বড়ে।

খালফা বলেন, ‘বর্তমানে মার্কিন জনতুষ্টবাদী ডানপন্থী পক্ষ এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একটি মতাদর্শিক মিল রয়েছে। তাই পুনর্নির্বাচনের চাপের মুখোমুখি না হওয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কৌশল খাটানোর ক্ষেত্রে তাঁর (নেতানিয়াহু) একটা নমনীয় জায়গা আছে।’

অধিকার সংগঠন ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ-এর নির্বাহী পরিচালক সারাহ লিয়াহ হুইটসন বলেন, ‘যেকোনো উপায়ে ইসরায়েলকে চাপ দিতে গেলে আবার কী ধরনের রাজনৈতিক মূল্য দিতে হয় তা নিয়ে শঙ্কিত ছিল বাইডেন প্রশাসন।’

ওয়াশিংটন ভিত্তিক মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো ব্রায়ান কাটুলিস বলেন, ইসরায়েল এবং অন্য ডানপন্থীদের ধারণা ছিল, ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে চুক্তিটি সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ট্রাম্পের চেয়েও বড় বিষয় হয়ে উঠেছিল। হামাস এবং তার পৃষ্ঠপোষক ইরান উভয়ের ওপরই এর প্রভাব পড়েছে।

লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহ এবং ইরানের নিজস্ব বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। আরব বিশ্বে তেহরানের অন্যতম মিত্র সিরিয়ার বাশার আল-আসাদকে গত মাসে বিদ্রোহী বাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করেছে।

কাটুলিস বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পের কাছ থেকে যে হুমকি-ধমকি ও তর্জন-গর্জন দেখেছি তা কোনো পক্ষের জন্যই বিশাল বিষয় ছিল বলে আমি মনে করি না। আমি মনে করি এটি অনেকটাই শিশুর মতো, যেটিকে বাইডেন এবং তার দল জন্ম দিয়েছে।’

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য কর্মসূচি বিষয়ক পরিচালক জন অল্টারম্যান মনে করেন, ট্রাম্পের জয় নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, তা এ চুক্তিটি হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

ইসরায়েল ও হামাস এমন সব শর্তের আওতায় আলোচনা করেছে যা দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য ছিল। দু পক্ষই জানত যেকোনো সময় মাপকাঠিগুলো বদলে যাওয়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ আছে।

চুক্তিটি যদি ভেস্তে যায় তখন কী হবে? এমন প্রশ্নও উঠছে।

এই বিষয়ে অল্টারম্যান বলেন, ‘তখন আর কে এইটা বাস্তবায়ন করল সেটা কোনো বিষয় হবে। চারদিকে তখন প্রচুর দোষারোপের খেলা চলবে।’