ঢাকা , রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্য

হিন্দু গোঁড়ামি উস্কে দিচ্ছেন কিছু ডেমোক্র্যাট সিনেটর: তুলসি গ্যাবার্ড

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড বলেছেন, ‘ডেমোক্র্যাটিক সিনেট সদস্যরা হিন্দু এবং হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’

ট্রাম্পের মনোনীত ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স প্রধান পদে কনফর্মেশন শুনানির সময় এমনই অভিযোগ করলেন তুলসি গ্যাবার্ড। হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

যদিও একটা সময়ে তুলসি নিজে ডেমোক্র্যাট ছিলেন। ডেমোক্র্যাট হিসেবেই প্রথম হিন্দু হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে তুলসি এখন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এই আবহে তাকে মার্কিন জাতীয় ইন্টেলিজেন্সের প্রধান করেছেন ট্রাম্প। এফবিআই এবং সিআইএ-র ওপরে নজরদারি চালানোর দায়িত্ব এখন থাকবে তুলসির ওপরে।

ডেমোক্র্যাটদের তোপ দেগে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু ডেমোক্র্যাট সিনেটর আছেন যারা এখনও ধর্মের স্বাধীনতার নীতি এবং সংবিধানের ৬ নং অনুচ্ছেদ বোঝেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে কোনও অফিস বা পাবলিক ট্রাস্টের যোগ্যতা হিসেবে কোনও ধর্মীয় পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। তবে দুর্ভাগ্যবশত, তারা আবারও ধর্মীয় গোঁড়ামির কার্ড ব্যবহার করছে। কিন্তু এবার হিন্দু ও হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদি কেউ আমার নিজের ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিক পথ সম্পর্কে, হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হন, আমি আপনাকে আমার এক্স অ্যাকাউন্টে যেতে স্বাগত জানাব। আমি সেখানে এই নিয়ে তাদের বলব।’

এদিকে পুতিন এবং নরেন্দ্র মোদির ‘হাতের পুতুল’ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তুলসি গ্যাবার্ডের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে তুলসী বলেন, ‘আমার নামে অনেক মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। আমেরিকার প্রতি আমার আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তবে আমি দেশের সংবিধান, ভগবান, আমার বিবেক ছাড়া আর কোনও কিছু বা কোনও ব্যক্তির প্রতি অনুগত নই।’

দু‘দশকেরও বেশি সময় মার্কিন আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কর্মরত ছিলেন। মোতায়েন ছিলেন ইরাক ও কুয়েতে। ২০০৫ সালে ‘কমব্যাট মেডিক্যাল ব্যাজ’ পেয়েছিলেন। তবে অতীতের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের অধিকর্তাদের মতো সেই ক্ষেত্রে তার বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই। সরকারে কোনও শীর্ষস্থানীয় পদেও ছিলেন না। ‘হাউস হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটি’-তে দু’বছর ছিলেন। তুলসি প্রাক্তন ডেমোক্র্যাটও বটে। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়েও নেমেছিলেন। মূলত প্রগতিশীল মনোভাব এবং বিদেশি সামরিক সংঘাতে আমেরিকার যুক্ত যাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। পরে অবশ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে গিয়েছিলেন। সমর্থন করেছিলেন জো বাইডেনকে।

পরে অবশ্য ২০২২ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছেড়ে নির্দল হয়ে গিয়েছিলেন তুলসি। তারপর রিপাবলিকানদের হয়ে প্রচার করেছিলেন। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পাশেই দাঁড়ান। ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যেও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে বিতর্কের সময় ট্রাম্পকে সাহায্য করেন। অক্টোবরে ঘোষণা করেন যে তিনি রিপাবলিকান হয়ে যাচ্ছেন।

নামের কারণে অনেকেই ভাবেন যে তুলসি হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বা ভারতের সঙ্গে কোনও যোগ আছে। যদিও তুলসির সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ নেই। বরং সামোয়ার মেয়ে তিনি। তুলসির মা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর সন্তানের নামকরণ করেছিলেন হিন্দু নামেই। তুলসিও হিন্দু হিসেবে নিজের পরিচিতি দেন। তিনি মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য ছিলেন। ভগবত গীতায় হাত রেখে শপথগ্রহণ করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও গীতা দিয়েছিলেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্য

হিন্দু গোঁড়ামি উস্কে দিচ্ছেন কিছু ডেমোক্র্যাট সিনেটর: তুলসি গ্যাবার্ড

আপডেট সময় ০৭:১৪:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড বলেছেন, ‘ডেমোক্র্যাটিক সিনেট সদস্যরা হিন্দু এবং হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’

ট্রাম্পের মনোনীত ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স প্রধান পদে কনফর্মেশন শুনানির সময় এমনই অভিযোগ করলেন তুলসি গ্যাবার্ড। হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

যদিও একটা সময়ে তুলসি নিজে ডেমোক্র্যাট ছিলেন। ডেমোক্র্যাট হিসেবেই প্রথম হিন্দু হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে তুলসি এখন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এই আবহে তাকে মার্কিন জাতীয় ইন্টেলিজেন্সের প্রধান করেছেন ট্রাম্প। এফবিআই এবং সিআইএ-র ওপরে নজরদারি চালানোর দায়িত্ব এখন থাকবে তুলসির ওপরে।

ডেমোক্র্যাটদের তোপ দেগে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু ডেমোক্র্যাট সিনেটর আছেন যারা এখনও ধর্মের স্বাধীনতার নীতি এবং সংবিধানের ৬ নং অনুচ্ছেদ বোঝেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে কোনও অফিস বা পাবলিক ট্রাস্টের যোগ্যতা হিসেবে কোনও ধর্মীয় পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। তবে দুর্ভাগ্যবশত, তারা আবারও ধর্মীয় গোঁড়ামির কার্ড ব্যবহার করছে। কিন্তু এবার হিন্দু ও হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদি কেউ আমার নিজের ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিক পথ সম্পর্কে, হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হন, আমি আপনাকে আমার এক্স অ্যাকাউন্টে যেতে স্বাগত জানাব। আমি সেখানে এই নিয়ে তাদের বলব।’

এদিকে পুতিন এবং নরেন্দ্র মোদির ‘হাতের পুতুল’ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তুলসি গ্যাবার্ডের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে তুলসী বলেন, ‘আমার নামে অনেক মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। আমেরিকার প্রতি আমার আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তবে আমি দেশের সংবিধান, ভগবান, আমার বিবেক ছাড়া আর কোনও কিছু বা কোনও ব্যক্তির প্রতি অনুগত নই।’

দু‘দশকেরও বেশি সময় মার্কিন আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কর্মরত ছিলেন। মোতায়েন ছিলেন ইরাক ও কুয়েতে। ২০০৫ সালে ‘কমব্যাট মেডিক্যাল ব্যাজ’ পেয়েছিলেন। তবে অতীতের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের অধিকর্তাদের মতো সেই ক্ষেত্রে তার বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই। সরকারে কোনও শীর্ষস্থানীয় পদেও ছিলেন না। ‘হাউস হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটি’-তে দু’বছর ছিলেন। তুলসি প্রাক্তন ডেমোক্র্যাটও বটে। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়েও নেমেছিলেন। মূলত প্রগতিশীল মনোভাব এবং বিদেশি সামরিক সংঘাতে আমেরিকার যুক্ত যাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। পরে অবশ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে গিয়েছিলেন। সমর্থন করেছিলেন জো বাইডেনকে।

পরে অবশ্য ২০২২ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছেড়ে নির্দল হয়ে গিয়েছিলেন তুলসি। তারপর রিপাবলিকানদের হয়ে প্রচার করেছিলেন। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পাশেই দাঁড়ান। ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যেও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে বিতর্কের সময় ট্রাম্পকে সাহায্য করেন। অক্টোবরে ঘোষণা করেন যে তিনি রিপাবলিকান হয়ে যাচ্ছেন।

নামের কারণে অনেকেই ভাবেন যে তুলসি হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বা ভারতের সঙ্গে কোনও যোগ আছে। যদিও তুলসির সঙ্গে ভারতের কোনও যোগ নেই। বরং সামোয়ার মেয়ে তিনি। তুলসির মা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর সন্তানের নামকরণ করেছিলেন হিন্দু নামেই। তুলসিও হিন্দু হিসেবে নিজের পরিচিতি দেন। তিনি মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য ছিলেন। ভগবত গীতায় হাত রেখে শপথগ্রহণ করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও গীতা দিয়েছিলেন।