মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে যারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে তাদের অবদান অসীম। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক মুক্তিযোদ্ধা আজও তাদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনই একজন হলেন চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ইছাখালী ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম মাস্টার।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ শাহ আলম মাস্টার নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। তিনি যুদ্ধের ময়দানে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে দেশের জন্য নিজের সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে মোহাম্মদ শাহ আলম মাস্টার শিক্ষাকতা পেশা বেছে নেন। একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে তিনি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনে অবদান রেখেছেন। তবে বর্তমানে তিনি বার্ধক্যের কারণে কর্মহীন।
সাম্প্রতিক দৈনিক ডেসটিনি কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পেনশনের টাকা দিয়ে কোনোমতে তার সংসার চলছে। সমস্ত ডকুমেন্ট থাকার পরেও মুক্তিযোদ্ধার কোন ভাতা পান না তিনি।
মোহাম্মদ শাহ আলম মাস্টারের সংসারে রয়েছে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে এসএসসি পাস করার পর বেকার। আর্থিক সংকটের কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি ও তার পরিবার কৃষি কাজ করে কোনো রকমে দিনযাপন করছেন।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পরিবারের সদস্যদের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। সন্তানদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারছেন না। বয়সজনিত শারীরিক দুর্বলতার কারণে কৃষি কাজও কঠিন হয়ে পড়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম মাস্টারের জীবন আমাদের সামনে একটি প্রশ্ন তুলে ধরে: আমরা কি সত্যিই মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যায্য সম্মান দিতে পেরেছি? জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো। এই বীর সন্তানদের ত্যাগ যেন কখনোই বৃথা না যায়।