ঢাকা , রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাধবপুরে অবাধ নিধনের শিকার রাবার বাগানের বন্য শূকর

শিকারিদের অবাধ নিধনের শিকার হয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে হবিগঞ্জের মাধবপুর রাবার বাগানের বন্য শূকর। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় চা বাগানের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সংরক্ষিত বনের বন্য শূকর শিকার করে পাশাপাশি গোপনে মাংস বিক্রি করছে। এছাড়া বাগানে থাকা বনমোরগও অহরহ শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। 

সুত্র জানায়,উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড় এলাকার শাহজীবাজার বাবার বাগানে বিভিন্ন স্পটে শূকর শিকার হচ্ছে। শিকারিচক্র কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে গভীর বনে ঢুকে দেশীয় তীর-ধনুক দিয়ে শূকর শিকার করে। শূকর সনাক্ত করার জন্য তাদের পোষা কুকুর নিয়ে আসে বাগানে। সপ্তাহের শনি ও বুধবার প্রায়ই দলবদ্ধভাবে শিকার করতে আসে তারা। এরা ফাঁদ পেতে বনমোরগ শিকার করে। শিকারীদের অধিকাংশই স্থানীয় লালচান চা বাগানের চা শ্রমিক।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা  জানান, স্থানীয় চা বাগানে  কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দামে শূকরের মাংস বিক্রি হয়।

কয়েকজন শিকারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাগানে প্রবেশ করে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে ৫-৮টি শূকর শিকার করেন। এছাড়া পাহাড়ি এলাকার কাছাকাছি ফসলের খেতে আসা শূকর তাঁদের হাতে থেকে রেহায় পায় না। এদের জীবিত ধরা কঠিন বলে তীর দিয়ে মারেন তাঁরা।কেউ কেউ চড়া দামে এসব কিনে নেয় তাদের কাছ থেকে।এছাড়া ফাঁদ পেতে ধরা বনমোরগ ১ হাজার টাকা পিস এবং হরিণের মাংস ২ হাজার টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়।

ওই রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক নন্দি গোপাল রায়  জানান, বিচ্ছিন্নভাবে কেউ যদি ওই বাগানে বন্যপ্রানী শিকার করে তাহলে আমরা আরো সতর্কতা অবলম্বন করবো। এছাড়া বন বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী বন্যপ্রাণী সংগঠন পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বন্যপ্রানী তথা শূকর আমাদের প্রতিবেশ ও বনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে। শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এসব দমন করা কঠিন যাবে না।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান,যেকোন বন্যপ্রানী তথা শূকর শিকার একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। খোঁজখবর নিয়ে আমরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করবো।

জনপ্রিয় সংবাদ

করপোরেট আমেরিকায় বৈচিত্র্যবাদ নিয়ে নতুন লড়াই

মাধবপুরে অবাধ নিধনের শিকার রাবার বাগানের বন্য শূকর

আপডেট সময় ০৩:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শিকারিদের অবাধ নিধনের শিকার হয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে হবিগঞ্জের মাধবপুর রাবার বাগানের বন্য শূকর। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় চা বাগানের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সংরক্ষিত বনের বন্য শূকর শিকার করে পাশাপাশি গোপনে মাংস বিক্রি করছে। এছাড়া বাগানে থাকা বনমোরগও অহরহ শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। 

সুত্র জানায়,উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড় এলাকার শাহজীবাজার বাবার বাগানে বিভিন্ন স্পটে শূকর শিকার হচ্ছে। শিকারিচক্র কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে গভীর বনে ঢুকে দেশীয় তীর-ধনুক দিয়ে শূকর শিকার করে। শূকর সনাক্ত করার জন্য তাদের পোষা কুকুর নিয়ে আসে বাগানে। সপ্তাহের শনি ও বুধবার প্রায়ই দলবদ্ধভাবে শিকার করতে আসে তারা। এরা ফাঁদ পেতে বনমোরগ শিকার করে। শিকারীদের অধিকাংশই স্থানীয় লালচান চা বাগানের চা শ্রমিক।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা  জানান, স্থানীয় চা বাগানে  কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দামে শূকরের মাংস বিক্রি হয়।

কয়েকজন শিকারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাগানে প্রবেশ করে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে ৫-৮টি শূকর শিকার করেন। এছাড়া পাহাড়ি এলাকার কাছাকাছি ফসলের খেতে আসা শূকর তাঁদের হাতে থেকে রেহায় পায় না। এদের জীবিত ধরা কঠিন বলে তীর দিয়ে মারেন তাঁরা।কেউ কেউ চড়া দামে এসব কিনে নেয় তাদের কাছ থেকে।এছাড়া ফাঁদ পেতে ধরা বনমোরগ ১ হাজার টাকা পিস এবং হরিণের মাংস ২ হাজার টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়।

ওই রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক নন্দি গোপাল রায়  জানান, বিচ্ছিন্নভাবে কেউ যদি ওই বাগানে বন্যপ্রানী শিকার করে তাহলে আমরা আরো সতর্কতা অবলম্বন করবো। এছাড়া বন বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী বন্যপ্রাণী সংগঠন পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বন্যপ্রানী তথা শূকর আমাদের প্রতিবেশ ও বনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে। শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এসব দমন করা কঠিন যাবে না।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান,যেকোন বন্যপ্রানী তথা শূকর শিকার একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। খোঁজখবর নিয়ে আমরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করবো।