নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে হঠাৎ বেড়ে গেছে আটোরিকশা চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পাঁচপীর মাজার সংলগ্ন ভাগলপুর গ্রামে একটি গ্যারেজের তালা ও শাটার ভেঙ্গে গত ৩১ জানুয়ারি ৫টি অটোরিকশা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তারা।
এ ব্যাপারে গ্যারেজের মালিক মো. আলী হোসেন সোনারগাঁও থানায় একটি মামলা করতে গেলে এটি অভিযোগ আকারে গ্রহণ করা হয়। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর মো. সাদ্ধাম নামে কাজীরগাঁও গ্রামের এক যুবককে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে ১৭ মামলার আসামি বলে জানিয়েছে সোনারগাঁও থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মো. মাসুদ। তাকে শনিবার কোর্টে চালান করা হয়েছে।
তার কাছ থেকে অটোরিকশা চুরির আরো তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সাদ্দামের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে, এলাকাবাসী সিসিটিভি ফুটেজ দেখে একই এলাকার ট্রাক চালক হেলাল উদ্দিনের বখাটে ও মাদকসেবী ছেলে মো. সিফাতকে (২৪) আটক করে গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অটোরিকশা কথা চুরির কথা তাদের কাছে স্বীকার করে।
মাদকসেবী সিফাত জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকার কয়েকজনসহ মোট ৭ জন অটোরিকশা ছিনতাইকারীর সহযোগিতায় ভাগলপুর গ্রামের ওই গ্যারেজটির তালা ভেঙ্গে ভিতর থেকে ৫টি অটোরিকশা চুরি করে নিয়ে গেছে।
এর আগেও গ্রাম থেকে বিভিন্ন মানুষের পানির মোটরসহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করে মাদকের টাকা যোগাড় করতো। এ কারণে আগে থেকেই গ্রামবাসী তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। গ্যারেজ ভেঙ্গে অটো চুরির ঘটনায় গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে চুরি করা নিয়ে যাওয়া অটোরিকশাগুলো ফেরত দিতে পরামর্শ দেন।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে এবং থানা থেকে অভিযোগ তুলে নিতে বাদী মো. আলী হোসেনের বাড়ি গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সিফাতের চাচাতো ভাইসহ চোরের দল দফায় দফায় হামলা করে আসছে।
চোরের দল থানায় গিয়ে উল্টো অটোরিকশা ছিনতাইকারী সিফাতকে মারধরের ঘটনায় বাদী ও তার বাবাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এতে এক নম্বর আসামি করা কয়েছে এলাকার এক টাইলস ব্যবসায়ী মাহবুবকে। অথচ তিনি এবং তার ভাই চৌরাস্তা এলাকায় নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং বাদীর বাবা অটোরিকশা চুরির ঘটনার আগেই ৪০ দিনের জন্য তাবলিগ জামায়াতের চিল্লায় গেছেন উত্তরবঙ্গে।
এ ঘটনায় পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।তারা অনতিবিলম্বে ছিনতাই চক্রের মূলহোতা মাদকসেবী সিফাতসহ আটোরিকশা চোর চক্রের সব সদস্যের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
সোনারগাঁও থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. মাসুদ জানান, ভাগলপুর গ্রামের মো. আলী হোসেন নামে এক ব্যাক্তি তার গ্যারেজের তালা ভেঙ্গে ৫টি অটোরিকশা চুরির যে অভিযোগ করেছেন তা তদন্ত করে সাদ্দাম নামে সন্দেভাজন এক চোরকে শুক্রবার রাতে হাবিবপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। চোর চক্রকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।