ঢাকা , বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

মিরসরাই এ বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন

চট্টগ্রাম মিরসরাই পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক নিরীহ পরিবারের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী।

গত শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের সময়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা একদল অপরাধী প্রকাশ্যে একটি পরিবারের জমি দখল করতে আসে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, দুষ্কৃতিকারীরা প্রথমে বাড়ির পেছনের ৭ শতক জমির চারপাশে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে এবং অস্ত্র-শস্ত্র হাতে নিয়ে হামলা চালায়। আতঙ্কিত অবস্থায় ঘরের দরজা বন্ধ করলে, সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং গৃহকর্তাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায়। এরপর পৌরসভা রোডের শরীফ হোটেলের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন চালায়।

এই সময় ভুক্তভোগীর ৯ বছরের ছোট ছেলে ও কিশোরী মেয়ে তার বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও অমানবিকভাবে প্রহার করা হয়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউই প্রতিরোধ করতে সাহস পায়নি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় মস্তাননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি মিরসরাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, এই বর্বরোচিত হামলার দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা কি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা এ অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে? আমি চাই, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকল সচেতন নাগরিক, মানবাধিকার সংগঠন এবং সংবাদমাধ্যম সোচ্চার হোক।”

ভুক্তভোগী আরও বলেন, “আমার ঘরের পেছনের জমি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দখলে ছিল। কোনো আইনি নোটিশ ছাড়াই সন্ত্রাসীরা এসে আমার বাড়িঘর তছনছ করে দিয়েছে, আমার জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, যাওয়ার সময় তারা আমার ঘরের টিন, লোহার রডসহ প্রায় ১ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমি প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি—তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।”

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ স্থানীয় লোকজনের কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে হামলাকারীদের নির্মমতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো চাইলে এই ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “যদি এখনই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং সাধারণ মানুষ আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে পড়বে।”

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত চলছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মানবাধিকার সংগঠন, সাংবাদিক মহল ও সাধারণ জনগণ এই নৃশংস হামলার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

মিরসরাই এ বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন

আপডেট সময় ০৯:২৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রাম মিরসরাই পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক নিরীহ পরিবারের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী।

গত শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের সময়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা একদল অপরাধী প্রকাশ্যে একটি পরিবারের জমি দখল করতে আসে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, দুষ্কৃতিকারীরা প্রথমে বাড়ির পেছনের ৭ শতক জমির চারপাশে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে এবং অস্ত্র-শস্ত্র হাতে নিয়ে হামলা চালায়। আতঙ্কিত অবস্থায় ঘরের দরজা বন্ধ করলে, সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং গৃহকর্তাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায়। এরপর পৌরসভা রোডের শরীফ হোটেলের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন চালায়।

এই সময় ভুক্তভোগীর ৯ বছরের ছোট ছেলে ও কিশোরী মেয়ে তার বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও অমানবিকভাবে প্রহার করা হয়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউই প্রতিরোধ করতে সাহস পায়নি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় মস্তাননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি মিরসরাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, এই বর্বরোচিত হামলার দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা কি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা এ অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে? আমি চাই, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকল সচেতন নাগরিক, মানবাধিকার সংগঠন এবং সংবাদমাধ্যম সোচ্চার হোক।”

ভুক্তভোগী আরও বলেন, “আমার ঘরের পেছনের জমি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দখলে ছিল। কোনো আইনি নোটিশ ছাড়াই সন্ত্রাসীরা এসে আমার বাড়িঘর তছনছ করে দিয়েছে, আমার জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, যাওয়ার সময় তারা আমার ঘরের টিন, লোহার রডসহ প্রায় ১ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমি প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি—তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।”

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ স্থানীয় লোকজনের কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে হামলাকারীদের নির্মমতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো চাইলে এই ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “যদি এখনই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং সাধারণ মানুষ আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে পড়বে।”

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত চলছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মানবাধিকার সংগঠন, সাংবাদিক মহল ও সাধারণ জনগণ এই নৃশংস হামলার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।