ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু করার তিন বছর পর বন্ধের আলোচনা প্রক্রিয়া চলছে। আজ মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আলোচনায় অংশ নিতে জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাকের নেতৃত্বে ইউক্রেনের একটি উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিনিধি দল এখন জেদ্দায় অবস্থান করছেন।
এ উপলক্ষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও গতকাল সোমবার সৌদি আরব পৌঁছেছেন। যদিও মূল আলোচনায় তিনি উপস্থিত থাকবেন না বলে জানা যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দলও ইতিমধ্যে জেদ্দায় পৌঁছেছেন, যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটবে বলে আশা করছেন মার্কিন কূটনীতিকরা।
গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আজ মঙ্গলবারের আলোচনায় কিয়েভের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ ও আকাশপথে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন ইউক্রেনের একজন কর্মকর্তা।
যদিও এ ধরনের আংশিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তাদের মতে, এরকম চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধে ইউক্রেন নিজের পরাজয় ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে সামনে রেখে সোমবার জেদ্দায় পৌঁছান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেছেন।
সৌদি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার রাতে নিজের একটি ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন যে, আজ মঙ্গলবারের আলোচনার মাধ্যমে একটি ‘বাস্তবভিত্তিক ফলাফল’ বের হয়ে আসবে।
তিনি এটাও জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেনের অবস্থান ‘একেবারে গঠনমূলক’।
জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি পোস্টে বলেন, ইউক্রেন শুরু থেকেই শান্তি ব্যাপারে বলে আসছে। আমরা সব সময় বলেছি যে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকার একমাত্র কারণ রাশিয়া।
মূল আলোচনায় অংশ নিতে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিনিধি দল এখন জেদ্দায় অবস্থান করছেন, তাদের মধ্যে জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক ছাড়াও দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা রয়েছেন।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও’র সঙ্গে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
গতকার সোমবার জেদ্দায় পৌঁছানোর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন , শান্তি চুক্তির জন্য ইউক্রেনের মনোভাব পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তিনি এটাও বলেন, যুদ্ধের ইতি টানার জন্য রুশদের যেমন কঠিন কাজ করতে হবে, তেমন ইউক্রেনকেও কঠিন কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তাদের ঠিক কী করতে হবে বা কী করার প্রয়োজন পড়বে, সে বিষয়ে আমি কোনো শর্ত আরোপ করবো না, বলেন রুবিও।
তিনি আরও বলেছেন, আমরা কেবল জানতে চাই যে, তারা (ইউক্রেন) যুদ্ধবিরতির জন্য কতদূর ছাড় দিতে ইচ্ছুক। রাশিয়া যেটা চায় সেটার সঙ্গে তাদের চাওয়ার তুলনা করতে চাই এবং তারপর দেখতে চাই , যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য থেকে আমরা আসলে কতটা দূরে অবস্থান করছি।