মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার পুটিমারা গ্রামের স্বামী মো. অলিউল্লাহ মোল্লা (৪২) হত্যা মামলায় স্ত্রী মাজেদা বেগমকে (৩০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেছে আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে।
গতকাল রবিবার (১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হান্নান এ রায় দেন। অলিউল্লাহ জেলার শ্রীনগর উপজেলার পুটিমারা গ্রামের মো. ইদ্রিস মোল্লার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার পুটিমারা গ্রামের প্রবাসী অলিউল্লাহ তার স্ত্রী মাজেদা ও ৩ সন্তান নিয়ে আলাদা বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। অলিউল্লাহ সৌদি আরবে প্রবাসে থাকতেন। মাঝে মধ্যে দেশের বাড়িতে ফিরতেন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ছুটিতে তিনি দেশে ফিরেন। কিন্তু পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঘুমাতে যান অলিউল্লাহ। পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ২ সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে বাইরে চলে যায় স্ত্রী মাজেদা।
এ অবস্থায় ওই দিন দুপুরে ভাই মো. আহসান উল্লাহ বাড়িতে এসে গলায় ওড়না পেঁচানো ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অলিউল্লাহকে ঘরের ভেতর দেখতে পান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অলিউল্লাহ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মো. আহসান উল্লাহ।
এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামি মাজেদা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই রায় ঘোষণা করেন। মামলার বাদী আহসানুল্লাহ জানান, বউ ছোট ভাইকে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করায় আমি শ্রীনগর থানায় মামলা করি। ওই মামলা ৮ বছর পর আজ আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. হালিম হোসেন জানান, ২০১৭ সালে শ্রীনগর উপজেলায় সৌদি প্রবাসী ওয়ালিউল্লাহ কে তার স্ত্রী মাজেদা বেগম খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সচেতন করে ওরনা পেচিয়ে হত্যা করেছে। আজ আদালত মাজেদা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।