ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮

দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সিউল থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত সানচেং কাউন্টিতে ২০টিরও বেশি এলাকায় এ দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। 

আগুন নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের সাথে রয়েছে সামরিক বাহিনী তাদের সাহায্য।

সরকার জানিয়েছে, প্রাণঘাতী এই দাবানলগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আর ২৭ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে প্রবল বাতাসের ইন্ধনে আগুন আরও তীব্র হয়ে উঠেছে আর এলাকার পর এলাকা পুড়িয়ে দিচ্ছে, স্কুলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে আর কর্তৃপক্ষকে কারাগারগুলো থেকে বন্দিদের সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে।

দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান দক সু বলেন, সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই দাবানল মোকাবেলায় আমরা উপস্থিত সব কর্মী ও সরঞ্জাম নিয়োগ করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে মার্কিন সামরিক বাহিনীও সহায়তা করছে।

দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, উইসেয়ং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলে বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে আর সানছং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘটনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অনেকেরই বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।

পার্বত্য এলাকা হওয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু রাতে চালানো যাবে এমন অগ্নিনির্বাপক আকাশযান ও ড্রোন আনা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ লি বাইয়ং দু।

দক্ষিণ কোরিয়ার বন বিভাগের মুখপাত্র কিম জং-গুন জানান, বুধবার পর্যন্ত ৪৯১৯ জন দমকল কর্মীকে ঘটনাস্থলগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর ইউনিটগুলোও কাজ করছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ৮৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ও হেলিকপ্টার নেই এমন সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ আরও অগ্নিনির্বাপন হেলিকপ্টার আনার পরিকল্পনা করেছে।

উইসেয়ং কাউন্টিতে শনিবার থেকে শুরু হওয়া দাবানলে অনেক প্রাচীন মন্দির ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে।

এসব স্থাপনা রক্ষা করার জন্য সেগুলোতে অগ্নিনিরোধী রাসায়নিক স্প্রে করে রাখা হয়েছে জানিয়ে বুধবার এনদং শহরের এক কর্মকর্তা বলেন, উইসেয়ং দাবানলের কারণে হাও গ্রাম এবং বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমিসহ ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির দাবানলে পুড়ে গেছে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে ‘বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে। দাবানলগুলোতে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৬৫ একর এলাকা পুড়ে গেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮

আপডেট সময় ০৫:০৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সিউল থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত সানচেং কাউন্টিতে ২০টিরও বেশি এলাকায় এ দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। 

আগুন নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের সাথে রয়েছে সামরিক বাহিনী তাদের সাহায্য।

সরকার জানিয়েছে, প্রাণঘাতী এই দাবানলগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আর ২৭ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে প্রবল বাতাসের ইন্ধনে আগুন আরও তীব্র হয়ে উঠেছে আর এলাকার পর এলাকা পুড়িয়ে দিচ্ছে, স্কুলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে আর কর্তৃপক্ষকে কারাগারগুলো থেকে বন্দিদের সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে।

দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান দক সু বলেন, সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই দাবানল মোকাবেলায় আমরা উপস্থিত সব কর্মী ও সরঞ্জাম নিয়োগ করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে মার্কিন সামরিক বাহিনীও সহায়তা করছে।

দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, উইসেয়ং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলে বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে আর সানছং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘটনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অনেকেরই বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।

পার্বত্য এলাকা হওয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু রাতে চালানো যাবে এমন অগ্নিনির্বাপক আকাশযান ও ড্রোন আনা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ লি বাইয়ং দু।

দক্ষিণ কোরিয়ার বন বিভাগের মুখপাত্র কিম জং-গুন জানান, বুধবার পর্যন্ত ৪৯১৯ জন দমকল কর্মীকে ঘটনাস্থলগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর ইউনিটগুলোও কাজ করছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ৮৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ও হেলিকপ্টার নেই এমন সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ আরও অগ্নিনির্বাপন হেলিকপ্টার আনার পরিকল্পনা করেছে।

উইসেয়ং কাউন্টিতে শনিবার থেকে শুরু হওয়া দাবানলে অনেক প্রাচীন মন্দির ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে।

এসব স্থাপনা রক্ষা করার জন্য সেগুলোতে অগ্নিনিরোধী রাসায়নিক স্প্রে করে রাখা হয়েছে জানিয়ে বুধবার এনদং শহরের এক কর্মকর্তা বলেন, উইসেয়ং দাবানলের কারণে হাও গ্রাম এবং বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমিসহ ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির দাবানলে পুড়ে গেছে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে ‘বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে। দাবানলগুলোতে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৬৫ একর এলাকা পুড়ে গেছে।