‘বিএনপির সময় আমরা খুব ফেরোসাস (হিংস্র) ছিলাম। আমরা যে বিরোধীদলে ছিলাম তখন তারা আমাদের খুব ভয় করে চলতো। যখন ছাত্রলীগ করতাম, তখন জামায়াত –শিবিরি পিটাইছি। এই ইউনূস আসি সব শেষ করি দিল। ইউনূস ভয়ংকর হিংস্র এবং দেশের প্রতি তার বিন্দু মাত্র মায়াদয়া নেই।’
কথাগুলো নিজ অফিসে বসে তার সহকর্মীদের সাথে বলছিলেন জনতা ব্যাংকের কুড়িগ্রাম কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) মোঃ সানোয়ারুল হক।
ব্যাংক কর্মকর্তা সানোয়ারুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি হামেশাই এমন সরকার বিরোধী অলোচনা করেন।
গত শুক্রবার (২১ মার্চ) তার এই অডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর জেলায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকেই চাচ্ছেন তার বিচার।
অডিওটিতে সানোয়ারুল হক সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজের সমালোচনা করে বলেন, আলী রিয়াজ সংবিধান সংশোধন করে কীভাবে? উনি কী সংবিধান বিশেষজ্ঞ? উনি কী আইনের শিক্ষার্থী?
অডিও রেকর্ডিংটি শুনিয়ে এসব বিষয়ে সানোয়ারুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি আমার কণ্ঠ নয়। আমি এমন কোনো কাজের সাথে জড়িত নই। আমার চলাফেরা অতি সাধারণ। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জনতা ব্যাংকের কুড়িগ্রাম কর্পোরেট শাখার আমানত বেড়েছে।’
তিনি আরো বলেন, আমি পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেছি। সে সময় আমি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাথে কখনই যুক্ত ছিলাম না।
সূত্র বলছে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেন। শিক্ষা জীবন থেকে তিনি ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। চাকরি জীবনে জনতা ব্যাংক এ কর্মরত থেকে রাজনৈতিক নানা প্রভাব খাটিয়ে হয়েছেন জনতা ব্যাংকের কুড়িগ্রাম কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ইনচার্জ)। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে জুনিয়র হয়েওে বাগিয়ে নিয়েছেন বড় পদ।
এছাড়াও অনুসন্ধানে উঠে আসে তার বড় ভাই লিয়াকত আলী লাকু কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। যিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংক রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল বারেক চৌধুরী বলেন, ‘অডিওর বিষয়ে আজকে সকালে আমি অবগত হয়েছি। আমি ঘটনাটি এখনও পুরোপুরি জানতে পারিনি। আমি ইতিমধ্যে কুড়িগ্রাম কর্পোরেট শাখায় যোগাযোগ করেছি। ঘটনা আগে আমাকে পুরোপুরি জানতে হবে। তারপর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া যাবে।