পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অপারেশন ডেভিল হান্টে যখন একের পর এক অপরাধী বন্দী হচ্ছে আইনের শিকলে। দূর হচ্ছে মাদক, জুয়াসহ নানা সামাজিক অপরাধ। ঠিক সেই মুহূর্তে পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে তৎপরতা চালাচ্ছে একটি অসাধু মহল এমন দাবি কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার। সাম্প্রতিক সময়ে কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের গানম্যানের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে কর্তব্য কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তারা এমন দাবি করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর এলাকায় চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা ও মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে মাইকিং করে দুই গ্রুপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সেনাবাহিনী।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছড়ালে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন অভিযানে যান কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান ও সঙ্গীয় ফোর্স।
এসময় স্থানীয় পুলিশের গোপন অভিযানের ভিডিও জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন যুবক অনুমতি ছাড়াই ফেসবুক লাইভে ছড়াতে চেষ্টা করলে পুলিশ সুপারের গানম্যান প্রাথমিকভাবে তাকে নিষেধ করেন। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের গোপন অভিযানে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকায় পরে তাকে ডেকে নিয়ে ভিডিও ডিলেট করতে পরামর্শ দেন ওই গানম্যান।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার একজন সংবাদকর্মী। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার আসার খবর শুনে সেখানে গিয়ে ছবি ও ভিডিও করার সময় পুলিশ সুপার আমার ফোন নিতে বলেন । ওনার সাথে থাকা এক পুলিশ সদস্য ফোনটি কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করেন এবং আমাকে থ্রেট করেন।
এ ঘটনায় কালবেলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাইয়েদ আহমেদ বাবু বলেন, আমার জানামতে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি ভালো কাজ করছেন।
চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ১০টার পরে এসপি স্যার এসেছিলেন কিন্তু ফোন কেড়ে নেবার কোন ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান দৈনিক ডেসটিনিকে বলেন, রাতে গোপন অভিযানের সময় একজন অল্পবয়সী ছেলে ভিডিও করছিল। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতির সম্ভবনার আশঙ্কায় তাকে বলেছি ভিডিও করোনা। জাস্ট এটুকু। তার সাংবাদিক পরিচয় আমাদের জানা নেই ।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিক পরস্পর বন্ধু। আমরা একে অপরের সহযোগিতা চাই। এই সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে “মিডিয়া ছুটে দিবো” শিরোনামে আমার বিরুদ্ধে যে ভুল তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তার জন্য আমরা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জনমনে বিভ্রান্তি দূর করতে সুস্পষ্ট লিখিত বিবৃতি প্রদান করেছি।