ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যত্রতত্র বালি উত্তোলন উৎকণ্ঠায় নদীপাড়ের মানুষ

  • রামু প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ০২:৫২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

রামুতে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার ও অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারনে নদীর পাড় ভাঙ্গনের ফলে আসছে বর্ষা মৌসুমে নদীর গর্ভে বিলীন হতে পারে হাজার হাজার পরিবার ও রামু মরিচ্যার আরকান সড়কটি।

ঐ এলাকায় নদী ভাঙ্গনের ফলে এক রাতে ১০টিরও বেশী বাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে এমনও নজির আছে। ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আরকান সড়কটি ভেঙ্গে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে চান না নদীর পাড়ে বসবাস করা অসহায় পরিবারবর্গ ও সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাকখালী নদীর রামু উপজেলা অংশে বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত বালি উত্তোলনের কারনে নদী পাড়ের সিসি ব্রক বেষ্টিত বাধের বেশীর ভাগই ধসে পড়ে গেছে। দিন দিন বেড়ে চলছে নদীর পাড়ের এই ধস ও ভাঙ্গনের তীব্রতা। এতে ঝুকিতে রয়েছে ফতেখাঁরকুল ও রাজারকুল ইউনিয়ের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সামনের বর্ষায় বেড়িবাঁধ ও নদী ভাঙ্গনের ফলে শত শত পরিবার নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বর্ষার আগেই নদীর ক্ষতি হওয়া পাড় ও ভেংগে পড়া ব্লক সংস্কারের দাবী তুলেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন-বিগত সময়ে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করেছে, যা এখন ও চলমান।ইজারা সীমানা অতিক্রম করে বানি উত্তোলনের কারনে নদী ভাঙ্গন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনের বর্ষায় বেড়িবাধ ও সিসি ব্লক বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা এম ইউ পি রুমা আক্তার জানান- ইজারাদারদের বালি উত্তোলনের সীমানা নির্ধারন না থাকায় অবৈধ ব্যবসায়ীদের যত্রতত্র বালি উত্তোলনের ফলে অফিসের চর ও রাজারকুলের আতিক্কানির ঘাটা বিজ্রের আশে পাশে নদীর পাড় ভেঙ্গে গেছে।ব্রিজের পিলারের তলদেশের মাটি শুন্য হয়ে পড়ছে। ব্রিজটি নির্মানের পর বিগত সরকারের জন প্রতিনিধিরা দু-পাড়ে পর্যাপ্ত পরিমান সি সি ব্লক না দেওয়াতে বর্তমানে ব্রিজটি ঝুকিতে রয়েছে।সংস্কার করা না হলে আমাদের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে ও ঘরবাড়ি সব নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

আরফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের রামু উপজেলা সভাপতি মনসুরুল হক সিকদার জানান দীর্ঘ দিন ধরে সি সি ব্লকের নিচ থেকে ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারনে ব্লকের নিচে বালি সরে গেছে। স্রোতের তীব্রতায় ব্লক গুলি ধসে পড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বালি উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কোন ধরনের তদারকি নেই। নদী ভাঙ্গন নিয়ে রাজারকুল ও ফতেখাঁরকুলের পার্শ্ববর্তী দু পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের এম ইউ পি ছালামত উল্লাহ জানান, রামু-মরিচ্যা সড়কটি বিভিন্ন কারনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়কেই যাতায়াত করে সাধারন পথচারী এবং সেনা ও বিজিবি বাহিনী। এই সিসি ব্লক ও বেধিবাধ ভাঙ্গলে রামু মরিচ্যা আরকার সড়কটি তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধের আশঙ্কা আছে তাই এইগুলি সংস্কার কার জরুরী হয়ে পড়ছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যেতে পারে আরকার সড়ক ও পার্শ্ববর্তী ঘরবাড়ি।

রাজারকুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান বলেন- সরকার বাহাদুর নদীর পানি গ্রাম অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে যাতে বন্যার সৃষ্টি না হয় সে জন্য নদী খনন করেছেন, কিন্তু সি সি ব্রক ও বেড়িবাধ মেরামত করেন নাই। শিকলঘাট ব্রিজের কাজ ধীর গতিতে চলমান থাকায় গত বছরে বর্ষা মৌসুমে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সেন্টারিং এ নদীতে চলমান পানি বাধা পেয়ে ধাক্কা লাগতেছে শিকলঘাট টু রাজারকুল সডকে। ফলে সডকটি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ককসবাজাররর সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগন উক্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন।উনাদের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রকল্প প্রস্তাব করি। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমান ফান্ড না থাকার কারনে কোন ধরনের বাজেট না পাওয়াতে কাজ করা সম্ভব হয়নি। অনতিবিলম্বে রাস্তাটি  সংস্কার করা না হলে চলতি বর্ষা মৌমুসে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্হা বন্ধ হয়ে যাবে।

রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি।  ইজারাদারদের বালি উত্তোলনের সীমান নির্ধারন করে দেওয়া হবে। তারা সীমানার বাইরে বালি উত্তোলন করতে পারবে না। যদি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন করবো।

সচেতন মহলের দাবী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন ও ইজারাদারদেরকে বালু উত্তোলনের সীমানা নির্ধারন করে দেওয়া হউক। ভেঙ্গে পড়া সি সি ব্রক ও বেড়িবাধের সংস্কার করে  উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় বসবাস করা  নদীপাড়ের হাজারো বাসিন্দাদের নিরাপদ করা অতীব জরুরী।

জনপ্রিয় সংবাদ

যত্রতত্র বালি উত্তোলন উৎকণ্ঠায় নদীপাড়ের মানুষ

আপডেট সময় ০২:৫২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

রামুতে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার ও অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারনে নদীর পাড় ভাঙ্গনের ফলে আসছে বর্ষা মৌসুমে নদীর গর্ভে বিলীন হতে পারে হাজার হাজার পরিবার ও রামু মরিচ্যার আরকান সড়কটি।

ঐ এলাকায় নদী ভাঙ্গনের ফলে এক রাতে ১০টিরও বেশী বাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে এমনও নজির আছে। ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আরকান সড়কটি ভেঙ্গে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে চান না নদীর পাড়ে বসবাস করা অসহায় পরিবারবর্গ ও সচেতন মহল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাকখালী নদীর রামু উপজেলা অংশে বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত বালি উত্তোলনের কারনে নদী পাড়ের সিসি ব্রক বেষ্টিত বাধের বেশীর ভাগই ধসে পড়ে গেছে। দিন দিন বেড়ে চলছে নদীর পাড়ের এই ধস ও ভাঙ্গনের তীব্রতা। এতে ঝুকিতে রয়েছে ফতেখাঁরকুল ও রাজারকুল ইউনিয়ের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সামনের বর্ষায় বেড়িবাঁধ ও নদী ভাঙ্গনের ফলে শত শত পরিবার নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বর্ষার আগেই নদীর ক্ষতি হওয়া পাড় ও ভেংগে পড়া ব্লক সংস্কারের দাবী তুলেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন-বিগত সময়ে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করেছে, যা এখন ও চলমান।ইজারা সীমানা অতিক্রম করে বানি উত্তোলনের কারনে নদী ভাঙ্গন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনের বর্ষায় বেড়িবাধ ও সিসি ব্লক বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা এম ইউ পি রুমা আক্তার জানান- ইজারাদারদের বালি উত্তোলনের সীমানা নির্ধারন না থাকায় অবৈধ ব্যবসায়ীদের যত্রতত্র বালি উত্তোলনের ফলে অফিসের চর ও রাজারকুলের আতিক্কানির ঘাটা বিজ্রের আশে পাশে নদীর পাড় ভেঙ্গে গেছে।ব্রিজের পিলারের তলদেশের মাটি শুন্য হয়ে পড়ছে। ব্রিজটি নির্মানের পর বিগত সরকারের জন প্রতিনিধিরা দু-পাড়ে পর্যাপ্ত পরিমান সি সি ব্লক না দেওয়াতে বর্তমানে ব্রিজটি ঝুকিতে রয়েছে।সংস্কার করা না হলে আমাদের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে ও ঘরবাড়ি সব নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

আরফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের রামু উপজেলা সভাপতি মনসুরুল হক সিকদার জানান দীর্ঘ দিন ধরে সি সি ব্লকের নিচ থেকে ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারনে ব্লকের নিচে বালি সরে গেছে। স্রোতের তীব্রতায় ব্লক গুলি ধসে পড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বালি উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কোন ধরনের তদারকি নেই। নদী ভাঙ্গন নিয়ে রাজারকুল ও ফতেখাঁরকুলের পার্শ্ববর্তী দু পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের এম ইউ পি ছালামত উল্লাহ জানান, রামু-মরিচ্যা সড়কটি বিভিন্ন কারনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়কেই যাতায়াত করে সাধারন পথচারী এবং সেনা ও বিজিবি বাহিনী। এই সিসি ব্লক ও বেধিবাধ ভাঙ্গলে রামু মরিচ্যা আরকার সড়কটি তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধের আশঙ্কা আছে তাই এইগুলি সংস্কার কার জরুরী হয়ে পড়ছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যেতে পারে আরকার সড়ক ও পার্শ্ববর্তী ঘরবাড়ি।

রাজারকুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান বলেন- সরকার বাহাদুর নদীর পানি গ্রাম অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে যাতে বন্যার সৃষ্টি না হয় সে জন্য নদী খনন করেছেন, কিন্তু সি সি ব্রক ও বেড়িবাধ মেরামত করেন নাই। শিকলঘাট ব্রিজের কাজ ধীর গতিতে চলমান থাকায় গত বছরে বর্ষা মৌসুমে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সেন্টারিং এ নদীতে চলমান পানি বাধা পেয়ে ধাক্কা লাগতেছে শিকলঘাট টু রাজারকুল সডকে। ফলে সডকটি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ককসবাজাররর সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগন উক্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন।উনাদের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রকল্প প্রস্তাব করি। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমান ফান্ড না থাকার কারনে কোন ধরনের বাজেট না পাওয়াতে কাজ করা সম্ভব হয়নি। অনতিবিলম্বে রাস্তাটি  সংস্কার করা না হলে চলতি বর্ষা মৌমুসে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্হা বন্ধ হয়ে যাবে।

রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি।  ইজারাদারদের বালি উত্তোলনের সীমান নির্ধারন করে দেওয়া হবে। তারা সীমানার বাইরে বালি উত্তোলন করতে পারবে না। যদি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন করবো।

সচেতন মহলের দাবী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন ও ইজারাদারদেরকে বালু উত্তোলনের সীমানা নির্ধারন করে দেওয়া হউক। ভেঙ্গে পড়া সি সি ব্রক ও বেড়িবাধের সংস্কার করে  উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় বসবাস করা  নদীপাড়ের হাজারো বাসিন্দাদের নিরাপদ করা অতীব জরুরী।