ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পাটালির কদর বাড়ছে

চুয়াডাঙ্গায় নির্ভেজাল তালের রসের তৈরি গুড়

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা দেউলি গ্রামে তালের রস থেকে তৈরি হচ্ছে খাঁটি গুড় ও পাটালি। স্বাদ গন্ধে ভালো হওয়ায় গুড় ও পাটালির চাহিদা বাড়ছে। গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলের আরেকটি পরিচিতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে দেশের বাজারে। তা হলো তালের পাটালি গুড়। পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরিতে তালের গুড় ও পাটালির ব্যবহার বাড়ছে। একারনে তালের রস থেকে তৈরি এ গুড় স্বাদে অতুলনীয়; তেমনই দামে অন্য গুড়ের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ গুড়। উৎপাদন স্থান থেকে পাইকারি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৮০ টাকায়। তালের গাছ থেকে সংগৃহীত রস কয়েক ঘণ্টা চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় এ গুড়। এতে কোনো ধরনের কেমিক্যাল বা সংরক্ষক মেশানো হয় না। বরং এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভেজাল এবং স্বাস্থ্যসম্মত এক প্রাকৃতিক মিষ্টান্ন।

প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে। গত ১৫ চৈত্র মাস থেকে দামুড়হুদার দেউলী গ্রামের চারজন গাছি এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ মৌসুমে গাছিরা ১২’শ কেজি গুড় উৎপাদন করবেন বলেও জানিয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দেউলী গ্রামে মৃত আজিম হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মণ্ডল তার নিজ জমিতে থাকা ৩০টি তাল গাছ থেকে রস আহরণের চিন্তা ভাবনা করেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন রস থেকে তৈরি করা হবে গুড়। সে লক্ষ্যে গত ১৫ চৈত্র থেকে রস আহরণ শুরু হয়।

এরপর প্রক্রিয়া করা হয় গুড় তৈরির। গুড় তৈরির পর সে সব গুড় বিক্রি করা হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি। চলতি মৌসুমে ৫ লাখ টাকার গুড় বিক্রির আশা করছেন তারা।

গাছি শের আলী বলেন, আমরা ৪ জন গাছ পরিচর্যার কাজ শুরু করেছি। প্রতিদিন ৬০০ টাকা হাজিরায় আমরা কাজ করি। দিনে ২ বার গাছে ওঠা নামা করে রস আহরণ করতে হয় আমাদের। সকালে বেশি গুড় হয়, বিকেলে গুড় হয় কম। ২ মাস পুরো দমে গাছ থেকে রস আহরণ করে গুড় তৈরি করা যাবে।

গাছের মালিক ইব্রাহিম মণ্ডল বলেন, ‘পৈত্রিক সূত্র থেকে পাওয়া জমিতে থাকা তাল গাছ থেকে এক বন্ধুর পরামর্শে রস আহরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য ৪ জন গাছির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১৫ চৈত্র থেকে গাছের পরিচর্যা শুরু করি। এক মাস পর গাছ থেকে রস আহরণ শুরু হয়।

প্রথম প্রথম রস কম হলেও এখন রস এবং গুড় দুইটাই বেশি পরিমাণে তৈরি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী পাটালি। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ‘তাল গাছ খুবই উপকারী। তাল গাছ জমির ক্ষতি করে না। ওই জমি থেকে অন্যান্য ফসল উৎপাদন করা যায়। তাল গাছ থেকে রস আহরণ করে গুড় তৈরি করছে এটা একটি বাড়তি টাকা উপার্জনের মাধ্যম। কৃষি উদ্যোক্তা ইব্রাহীম মণ্ডল প্রশংসার দাবিদার।

 

এএস/

 

জনপ্রিয় সংবাদ

পাটালির কদর বাড়ছে

চুয়াডাঙ্গায় নির্ভেজাল তালের রসের তৈরি গুড়

আপডেট সময় ০৬:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা দেউলি গ্রামে তালের রস থেকে তৈরি হচ্ছে খাঁটি গুড় ও পাটালি। স্বাদ গন্ধে ভালো হওয়ায় গুড় ও পাটালির চাহিদা বাড়ছে। গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলের আরেকটি পরিচিতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে দেশের বাজারে। তা হলো তালের পাটালি গুড়। পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরিতে তালের গুড় ও পাটালির ব্যবহার বাড়ছে। একারনে তালের রস থেকে তৈরি এ গুড় স্বাদে অতুলনীয়; তেমনই দামে অন্য গুড়ের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ গুড়। উৎপাদন স্থান থেকে পাইকারি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৮০ টাকায়। তালের গাছ থেকে সংগৃহীত রস কয়েক ঘণ্টা চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় এ গুড়। এতে কোনো ধরনের কেমিক্যাল বা সংরক্ষক মেশানো হয় না। বরং এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভেজাল এবং স্বাস্থ্যসম্মত এক প্রাকৃতিক মিষ্টান্ন।

প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে। গত ১৫ চৈত্র মাস থেকে দামুড়হুদার দেউলী গ্রামের চারজন গাছি এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ মৌসুমে গাছিরা ১২’শ কেজি গুড় উৎপাদন করবেন বলেও জানিয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দেউলী গ্রামে মৃত আজিম হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মণ্ডল তার নিজ জমিতে থাকা ৩০টি তাল গাছ থেকে রস আহরণের চিন্তা ভাবনা করেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন রস থেকে তৈরি করা হবে গুড়। সে লক্ষ্যে গত ১৫ চৈত্র থেকে রস আহরণ শুরু হয়।

এরপর প্রক্রিয়া করা হয় গুড় তৈরির। গুড় তৈরির পর সে সব গুড় বিক্রি করা হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি। চলতি মৌসুমে ৫ লাখ টাকার গুড় বিক্রির আশা করছেন তারা।

গাছি শের আলী বলেন, আমরা ৪ জন গাছ পরিচর্যার কাজ শুরু করেছি। প্রতিদিন ৬০০ টাকা হাজিরায় আমরা কাজ করি। দিনে ২ বার গাছে ওঠা নামা করে রস আহরণ করতে হয় আমাদের। সকালে বেশি গুড় হয়, বিকেলে গুড় হয় কম। ২ মাস পুরো দমে গাছ থেকে রস আহরণ করে গুড় তৈরি করা যাবে।

গাছের মালিক ইব্রাহিম মণ্ডল বলেন, ‘পৈত্রিক সূত্র থেকে পাওয়া জমিতে থাকা তাল গাছ থেকে এক বন্ধুর পরামর্শে রস আহরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য ৪ জন গাছির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১৫ চৈত্র থেকে গাছের পরিচর্যা শুরু করি। এক মাস পর গাছ থেকে রস আহরণ শুরু হয়।

প্রথম প্রথম রস কম হলেও এখন রস এবং গুড় দুইটাই বেশি পরিমাণে তৈরি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী পাটালি। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ‘তাল গাছ খুবই উপকারী। তাল গাছ জমির ক্ষতি করে না। ওই জমি থেকে অন্যান্য ফসল উৎপাদন করা যায়। তাল গাছ থেকে রস আহরণ করে গুড় তৈরি করছে এটা একটি বাড়তি টাকা উপার্জনের মাধ্যম। কৃষি উদ্যোক্তা ইব্রাহীম মণ্ডল প্রশংসার দাবিদার।

 

এএস/