শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ফজলুল হক নামে এক পান চাষির পানের বরজ রাতের আঁধারে কেটে বিনষ্ট করে ফেলেছে অজ্ঞাতনামা দূর্বৃত্তরা। প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতির শিকার ওই চাষি এখন দিশেহারা। গত সোমবার গভীর রাতের কোন এক সময় উপজেলার রামচদ্রকুড়া ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষি ফজলুল হক জানান, তার সংসারের ব্যয় মেটানোর অন্যতম মাধ্যম ৩৫ শতক জমিতে তৈরি এই পানের বরজ। প্রায় দশ বছর ধরে ওই বরজের পান বিক্রি করে বছরে তার প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আয় হয়। আর এই আয় দিয়েই চলে তার সংসার।
অন্যান্য সময়ের মতো সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত তিনি উত্তোলিত পান ঘরে বসে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে মাঝ রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে ফজরের নামজ শেষে পানের বরজে ঢুকে তার মাথায় হাত পড়ে। ৭ কাঠা জমিতে তৈরি বরজের প্রায় এক তৃতীয়াংশের পুরোটাই রাতের আঁধারে কে বা কারা কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। ফলে প্রতিটি পানের চারা নুয়ে পড়তে শুরু করেছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামসহ অন্যরা ছুটে আসেন। পানচাষি আরও জানান, তার সাথে কারও কোন শত্রুতা নেই। কয়েক দিন আগে এ বরজের পরিচর্যায় প্রায় দুই লাখ খরচ করেছেন। কেবলই পান উত্তোলন শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে কে বা কারা বরজের অন্তত এক তৃতীয়াংশ জমির পানের গাছ কেটে ফেলেছে। এতে তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। এসময় কেটে ফেলা পানের গাছ হাতে নিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেলতৈল গ্রামে কোন প্রকার শত্রুতা কারও সাথে থাকলেই রাতের আঁধারে কাঠের বাগান, ফলের বাগান কেটে ফেলে দূর্বৃত্তরা।
সবশেষ শিকার পানচাষী ফজলুল হক। তবে একের পর এক বাগান কাটার এ প্রবণতা চললেও অপরাধীরা রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। থানায় সাধারণ ডায়েরি এমনকি মামলা করেও কোন সুরাহা মিলে না।স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, বেলতৈল গ্রামে প্রায়ই রাতের আঁধারে গাছগাছালি বা বাগান কাটার প্রবণতা দেখা দেয়। সবশেষ শিকার পানচাষী ফজলুল হক। পানের এ বরজই তার সংসারের উপার্জনের ভরসা।
এ ঘটনায় ফজলুল হক যে ক্ষতির সম্মুখিন হলেন তা পুষিয়ে ওঠার নয়। এসময় তিনি এমন ঘটনার প্রতিকার ও স্থায়ী সমাধান চেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে,খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা।
এএস/