দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে সম্প্রতি বড় পরিসরে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেছে। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিক এবং কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী ও রৌমারী সীমান্ত দিয়ে ৩৬ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পুশইন হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী।
বুধবার (৭ মে) খাগড়াছড়ির তাইন্দং ও লোগাং সীমান্ত দিয়ে সকাল থেকে ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তাদের মধ্যে ২৭ জন নারী ও একাধিক শিশু রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত অতিক্রম করার পর লোকালয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা পরিচয় জানতে চান। কিন্তু যথাযথ উত্তর না পেয়ে বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়। পরে বিজিবি এসে সবাইকে হেফাজতে নেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, তারা গুজরাটের বাসিন্দা এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যরা তাদের শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে দেয়। এমনকি বিমানে করে তাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় এনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন।
অন্যদিকে একই দিনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী ও জামালপুরের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে ৩৬ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশইন করে বিএসএফ। এর মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশিও রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বুধবার ভোরে রৌমারীর শাপলা চত্বর এলাকায় সন্দেহভাজনদের একটি ভ্যানে করে চলাচল করতে দেখে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে ২০ জন রোহিঙ্গা এবং ৭ জন বাংলাদেশি ছিল। পালিয়ে যাওয়া আরও ২ রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশিকে পরবর্তীতে আটক করে পুলিশ। একই সময় ভূরুঙ্গামারীর নতুনবাজার এলাকা থেকে স্থানীয়রা আরও ১৪ রোহিঙ্গাকে আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন।
বিজিবি জানায়, আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের বাংলাদেশে পুশইন করেছে। পুরো ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে। এই দুই অঞ্চলের ঘটনা সীমান্ত নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে। বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।