যশোরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই কেরু এন্ড কোম্পানী তার উৎপাদিত দেশীয় বাংলা মদ প্লাষ্টিক বোতলে বাজারজাতের উদ্যোগ নিয়েছে। যা পরিবেশের উপর ও জনজীবনে মারাত্নক বিরূপ প্রভাব পড়বে। মারাত্নক ভাবে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মানবজীবনেও এর প্রভাব মারাত্নক হতে পারে বলে আশংকা করেছেন পরিবেশবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
কেরু এন্ড কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেড কে তার উৎপাদিত দেশীয় বাংলা মদ ওয়ান টাইম ম্যানেজমেন্ট প্লাষ্টিক বোতলে বাজারজাত করার আদেশ প্রদান করেছে। যা পরিবেশের জন্য মারাত্নক হুমকি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব প্লাষ্টিক বোতল পরিবেশের উপর এবং মানবজীবনের উপর মারাত্নক ক্ষতির কারন হতে পারে বলে মনে করছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড: সাইবুর রহমান মোল্যা ।
তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, যে কোন ধরনের প্লাস্টিক পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। মাইক্রো প্লাস্টিক মানুষের শরীরের জন্য মারাত্নক ক্ষতি। এই মাইক্রো প্লাস্টিকের প্রভাবে মানুষের শরীরে মরনব্যাধি ক্যান্সার থেকে শুরু করে নানা রকম দূরারোগ্য ব্যাধি হতে পারে। আর চঊঞ ওটিএম বোতল আরো বেশি মারাত্নক ক্ষতিকর। কারন এটা ভূমিতে যাওয়ার আগেই মাইক্রো আকারে মানুষের পাকস্থলিতে যাবে, যার ফলে মানুষের শরীরে মারাত্নক ক্ষতির কারন হবে।
এছাড়া এই প্লাস্টিকের বোতল লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকবে। ফলে এটা জমির ও পরিবেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতি হবে। এটা রিসাইক্লিনের আওতায়ও আনা সম্ভব হবে না। ফলে কেরু এন্ড কোম্পানীর এই সিদ্ধান্তটি পুন:বিবেচনা করা দরকার।
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন যশোর সরকারী এম এম বিশইবদ্যালয় কলেজের ভূগোল বিভাগের সাবেক সিনিয়র অধ্যাপক সোলজার হোসেন, যবিপ্রবির ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড: মাহাফুজুর রহমান ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ওয়ার্ল্ডের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহামুদ সবুজ। তারা বলছেন, যে কোন ধরনের প্লাস্টিক পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। মাইক্রো প্লাস্টিক মানুষের শরীরের জন্য মারাত্নক ক্ষতি।
এই মাইক্রো প্লাস্টিকের প্রভাবে মানুষের শরীরে মরনব্যাধি ক্যান্সার থেকে শুরু করে নানা রকম দূরারোগ্য ব্যাধি হতে পারে। তার থেকেও বিপদজনক হচ্ছে পরিবেশের উপর এই প্লাষ্টিকের প্রভাব। মানুষের শরীরে যাওয়ার পাশাপাশি অব্যবহৃত বর্জ্য হিসেবে এই লাখ লাখ প্লাষ্টিক বোতল পরিবেশকে মারাত্নক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
এদিকে ড্রারেম পরিবের্ত প্লাস্টিক বোতলে বিদেশী লিকারের আদলে লেভেলিং করে বাজারজাত করার ফলে দেশীয় বাংলা মদের দাম কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। যা সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। যার কারনে এই অবৈধ ব্যবসার দ্বার প্রসারিত হবে। ফলে সাধারণ ভোক্তারা বিশেষ করে পারমিট ধারী ক্রেতা সাধারণ বাংলা মদ ক্রয় করতে না পারার কারনে দেশের যুবসমাজসহ সাধারণ জনগণ অবৈধভাবে বাংলা মদ ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পড়বে।
যুব সমাজ বিপথগামী হবে। প্লাষ্টিক বোতলজাত দেশীয় বাংলা মদ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে মাদকাসক্ত লোকের সংখ্যা এবং অবৈধ মদ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। চোরাচালানের ফলে লাইসেন্স ছাড়াই মদ পানের সুযোগ প্রসারিত হবে। ফলে দেশে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনের পরিবর্তে নেশাগ্রস্থ লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
তাছাড়া সরকার যেখানে সকল প্রকার পলিথিন ও ওয়ান টাইম ইউজেস প্লাস্টিক বোতলের উৎপাদন ও বিপনন নিষিদ্ধ করছে সেখানে ঘটা করে কেরু এন্ড কোম্পানী লিমিটেড নতুন করে প্লাস্টিক বোতলে তার উৎপাদিত দেশীয় বাংলা মদ বোতলজাত করে বাজারজাত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য মারাত্নক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে আশংকা পরিবেশবিদদের। তারা বলছেন, কেরু এন্ড কোম্পানীর এহেন উদ্যোগে দেশ ও জাতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে ।
এএস/