ঢাকা , শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা 

জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কারের যে পদ্ধতির কথা বলেছেন, তা শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী – রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। গত ৬ জুন, জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা অনেকাংশে দূর হলেও এপ্রিল মাসের আবহাওয়া, রমজান, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা ইত্যাদির কারণে এ সময়ে নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা কতটা সম্ভব; তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিচার প্রক্রিয়াকে আরো দ্রুত, স্বচ্ছ এবং গ্রহনযোগ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কোন রূপরেখা প্রধান উপদেষ্টা এ বক্তব্যে তুলে ধরেননি।

মানবিক করিডোর না দেওয়ার প্রসঙ্গে তার সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানোয় জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে কিন্তু বন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে তার ভাষা রাজনৈতিক মহলে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংবিধান সংস্কারের জন্য বিল উত্থাপনের অঙ্গীকার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আদায়ের যে পরামর্শ জনগণকে তিনি দিয়েছেন, একদিকে তা বিভ্রান্তিকর আর অন্যদিকে তা জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।

সংবিধান সংশোধনের যে ক্ষমতা বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদের কাছে দেওয়া আছে, সেই পদ্ধতির অপব্যবহারের সাথে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের বিস্তারের সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এদেশের জনগণ সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদের জন্য অভ্যুত্থান করেছে পুনরায় সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়।

কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংশোধন এবং সংবিধান সংস্কারের পার্থক্যকে গুলিয়ে ফেলেছেন। তিনি ভুলে গেছেন, সংসদ আইন প্রণয়ন এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের ক্ষমতা বা এখতিয়ার সংসদের নাই সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন বা সংস্কারের ক্ষমতা কেবল জনগনের বা জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ‘সংবিধান সংস্কার সংসদের’।

জনগণের মুক্তির জন্য প্রথমে সংবিধানের সংস্কার এবং পরে সেই পরিবর্তিত সংবিধানের আলোকে সরকার পরিচালনার জন্য জাতীয় সংসদ গঠনের নির্বাচন আয়োজন করা এই অন্তর্বর্তী সময় থেকে উত্তরণের একমাত্র ন্যায্য উপায়।

নির্বাচন সংক্রান্ত সংশয় দূর করার জন্য ১৯৭০ সালের মতো একসাথে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার দাবী জানাচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। অভ্যুত্থান পরবর্তী জন আকাঙ্ক্ষা পূরণের সংবিধান সংস্কারের এই গুরু দায়িত্ব কোন অজুহাতেই জাতীয় সংসদের কাছে দেওয়া যাবে না।

যে সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ৭০ সালের মত একই ভোটে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান; তাদের ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানাচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন শুধু সংসদ নির্বাচনের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে এবং ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলের আলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

আর

সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা 

জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

আপডেট সময় ০৫:২১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কারের যে পদ্ধতির কথা বলেছেন, তা শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী – রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। গত ৬ জুন, জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা অনেকাংশে দূর হলেও এপ্রিল মাসের আবহাওয়া, রমজান, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা ইত্যাদির কারণে এ সময়ে নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা কতটা সম্ভব; তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিচার প্রক্রিয়াকে আরো দ্রুত, স্বচ্ছ এবং গ্রহনযোগ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কোন রূপরেখা প্রধান উপদেষ্টা এ বক্তব্যে তুলে ধরেননি।

মানবিক করিডোর না দেওয়ার প্রসঙ্গে তার সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানোয় জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে কিন্তু বন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে তার ভাষা রাজনৈতিক মহলে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংবিধান সংস্কারের জন্য বিল উত্থাপনের অঙ্গীকার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আদায়ের যে পরামর্শ জনগণকে তিনি দিয়েছেন, একদিকে তা বিভ্রান্তিকর আর অন্যদিকে তা জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।

সংবিধান সংশোধনের যে ক্ষমতা বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদের কাছে দেওয়া আছে, সেই পদ্ধতির অপব্যবহারের সাথে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের বিস্তারের সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এদেশের জনগণ সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদের জন্য অভ্যুত্থান করেছে পুনরায় সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়।

কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংশোধন এবং সংবিধান সংস্কারের পার্থক্যকে গুলিয়ে ফেলেছেন। তিনি ভুলে গেছেন, সংসদ আইন প্রণয়ন এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের ক্ষমতা বা এখতিয়ার সংসদের নাই সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন বা সংস্কারের ক্ষমতা কেবল জনগনের বা জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ‘সংবিধান সংস্কার সংসদের’।

জনগণের মুক্তির জন্য প্রথমে সংবিধানের সংস্কার এবং পরে সেই পরিবর্তিত সংবিধানের আলোকে সরকার পরিচালনার জন্য জাতীয় সংসদ গঠনের নির্বাচন আয়োজন করা এই অন্তর্বর্তী সময় থেকে উত্তরণের একমাত্র ন্যায্য উপায়।

নির্বাচন সংক্রান্ত সংশয় দূর করার জন্য ১৯৭০ সালের মতো একসাথে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার দাবী জানাচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। অভ্যুত্থান পরবর্তী জন আকাঙ্ক্ষা পূরণের সংবিধান সংস্কারের এই গুরু দায়িত্ব কোন অজুহাতেই জাতীয় সংসদের কাছে দেওয়া যাবে না।

যে সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ৭০ সালের মত একই ভোটে সংবিধান সংস্কার সভা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান; তাদের ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানাচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন শুধু সংসদ নির্বাচনের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে এবং ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলের আলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

আর