ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আইনি সাহায্য চেয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ 

পটুয়াখালীতে ছোট ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বড় ভাই

 

পটুয়াখালীতে আব্দুল কাদের নামে এক ভাই তার সেজো ভাই শহিদুল সিকদারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করে আইনি সহযোগিতা চেয়েছেন।

লিখিত অভিযোগের বিবরণ
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বিরাজলা গ্রামের মৃত কাঞ্চন আলী সিকদারের বড় ছেলে আব্দুল কাদেরের নগদ টাকা ও বাসার জন্য ব্যবহৃত ইট শহিদুল সিকদার তাকে না জানিয়েই নিয়ে যান।

এছাড়াও, বাবার জমিতে থাকা বড় বড় মেহগনি ও রেন্ট্রি গাছ কাউকে কিছু না জানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন শহিদুল। এই বিষয়ে কাদেরের পরিবার কিছু বলতে গেলেই তাদের মারধরের শিকার হতে হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত ১১ জুন বুধবার সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাদেরের আরেক ভাই আব্দুল জলিলের সাথে শহিদুলের কথা-কাটাকাটি হয়।

সেদিনই শহিদুল রান্দা (দা) হাতে জলিলকে মারার উদ্দেশ্যে খুঁজতে থাকেন। জলিলকে না পেয়ে তিনি বড় ভাই কাদেরের বাসায় হামলা চালিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।

এই ঘটনায় কাদেরের ছেলে সাজ্জাদ পটুয়াখালী সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত করেছে।

আব্দুল কাদেরের বক্তব্য
আব্দুল কাদের জানিয়েছেন যে, কাজের সূত্রে তাকে জামালপুরে থাকতে হয়, কিন্তু তার বৃদ্ধ মা, ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রী সেজো ভাই শহিদুলের অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তিনি শহিদুলকে সবরকম সহযোগিতা করা সত্ত্বেও শহিদুল উল্টো তার ছেলের নামে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়েছেন। কাদেরের অভিযোগ, ১৪ হাজার ইট এবং নগদ টাকা ফেরত না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই শহিদুল তার স্ত্রীকে দিয়ে এই মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।

এদিকে, বিভিন্ন সময় শহিদুল তার বৃদ্ধ মা জয়নব বিবিকে মারধর করেন। মারধরের বিষয়ে তার মামা রশিদ প্যাদা শহিদুলকে জিজ্ঞেস করলে উল্টো তাকেও গালিগালাজ করেন। আব্দুল কাদের এবং তার পরিবার এখন সবসময় ভয়ে থাকেন যে, শহিদুল কখন তার মাকে মেরে ফাঁসিয়ে দেন।

শহিদুল সিকদারের বক্তব্য
এ বিষয়ে শহিদুল সিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, তিনি বাড়ি না থাকলেই তার স্ত্রীকে জলিল, সাজ্জাদ, শামীম বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তাব দেন। যার কারণে তার স্ত্রী পুতুল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে যান। শহিদুল বলেন, তার স্ত্রী যদি সেদিন মারা যেতেন, তবে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে তিনি কেমন করতেন। তিনি আরও প্রশ্ন করেন, কাদের কেন বাড়িতে পুলিশ নিলো, যখন তারা আগে কোনো মামলা করেননি।

পুলিশের বক্তব্য
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ এই ঘটনা স্বীকার করে বলেন যে, আব্দুল কাদের আইনি সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন এবং তারা বিষয়টি দেখছেন।

এই ঘটনাটি একটি জটিল পারিবারিক বিবাদের চিত্র তুলে ধরছে যেখানে সম্পত্তি, অর্থ এবং পারস্পরিক অবিশ্বাস ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি এখন প্রশাসনের নজরে রয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে, আশা করা যায় এর একটি সুরাহা হবে।

 

এএস/

 

আইনি সাহায্য চেয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ 

পটুয়াখালীতে ছোট ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বড় ভাই

আপডেট সময় ০৯:৪১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

 

পটুয়াখালীতে আব্দুল কাদের নামে এক ভাই তার সেজো ভাই শহিদুল সিকদারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করে আইনি সহযোগিতা চেয়েছেন।

লিখিত অভিযোগের বিবরণ
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বিরাজলা গ্রামের মৃত কাঞ্চন আলী সিকদারের বড় ছেলে আব্দুল কাদেরের নগদ টাকা ও বাসার জন্য ব্যবহৃত ইট শহিদুল সিকদার তাকে না জানিয়েই নিয়ে যান।

এছাড়াও, বাবার জমিতে থাকা বড় বড় মেহগনি ও রেন্ট্রি গাছ কাউকে কিছু না জানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন শহিদুল। এই বিষয়ে কাদেরের পরিবার কিছু বলতে গেলেই তাদের মারধরের শিকার হতে হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত ১১ জুন বুধবার সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাদেরের আরেক ভাই আব্দুল জলিলের সাথে শহিদুলের কথা-কাটাকাটি হয়।

সেদিনই শহিদুল রান্দা (দা) হাতে জলিলকে মারার উদ্দেশ্যে খুঁজতে থাকেন। জলিলকে না পেয়ে তিনি বড় ভাই কাদেরের বাসায় হামলা চালিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।

এই ঘটনায় কাদেরের ছেলে সাজ্জাদ পটুয়াখালী সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত করেছে।

আব্দুল কাদেরের বক্তব্য
আব্দুল কাদের জানিয়েছেন যে, কাজের সূত্রে তাকে জামালপুরে থাকতে হয়, কিন্তু তার বৃদ্ধ মা, ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রী সেজো ভাই শহিদুলের অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তিনি শহিদুলকে সবরকম সহযোগিতা করা সত্ত্বেও শহিদুল উল্টো তার ছেলের নামে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়েছেন। কাদেরের অভিযোগ, ১৪ হাজার ইট এবং নগদ টাকা ফেরত না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই শহিদুল তার স্ত্রীকে দিয়ে এই মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।

এদিকে, বিভিন্ন সময় শহিদুল তার বৃদ্ধ মা জয়নব বিবিকে মারধর করেন। মারধরের বিষয়ে তার মামা রশিদ প্যাদা শহিদুলকে জিজ্ঞেস করলে উল্টো তাকেও গালিগালাজ করেন। আব্দুল কাদের এবং তার পরিবার এখন সবসময় ভয়ে থাকেন যে, শহিদুল কখন তার মাকে মেরে ফাঁসিয়ে দেন।

শহিদুল সিকদারের বক্তব্য
এ বিষয়ে শহিদুল সিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, তিনি বাড়ি না থাকলেই তার স্ত্রীকে জলিল, সাজ্জাদ, শামীম বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তাব দেন। যার কারণে তার স্ত্রী পুতুল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে যান। শহিদুল বলেন, তার স্ত্রী যদি সেদিন মারা যেতেন, তবে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে তিনি কেমন করতেন। তিনি আরও প্রশ্ন করেন, কাদের কেন বাড়িতে পুলিশ নিলো, যখন তারা আগে কোনো মামলা করেননি।

পুলিশের বক্তব্য
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ এই ঘটনা স্বীকার করে বলেন যে, আব্দুল কাদের আইনি সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন এবং তারা বিষয়টি দেখছেন।

এই ঘটনাটি একটি জটিল পারিবারিক বিবাদের চিত্র তুলে ধরছে যেখানে সম্পত্তি, অর্থ এবং পারস্পরিক অবিশ্বাস ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি এখন প্রশাসনের নজরে রয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে, আশা করা যায় এর একটি সুরাহা হবে।

 

এএস/