ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ীতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় নদী সাঁতার দিয়ে পাড়াপাড় এলাকা বাসীর

 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২২০ ফিট লম্বা বারোমাসিয়া নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৮ গ্রামের হাজারও মানুষ। চরম ঝুকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন কোমল মতি শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় নবিউল /আমিন মেম্বারের ঘাট নামে পরিচিত বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীতে ২২০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটির দক্ষিণ দিকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফিট দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দারা  এক বুক নদীর পানি পাড়ি দিয়ে  হেঁটে পাড় হচ্ছেন।

দুপাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বারোমাসিয়া নদীটি পাড়ি দিয়েছেন ছোট ছোট ডিঙি ও মাঝারি নৌকা দিয়ে। তখন থেকে দীর্ঘ সময় পাড়াপাড় করতেন দুই পাড়ের বাসিন্দারা।

সেই সময় থেকে করিমের, নবিউলের সর্বশেষ  আমিন মেম্বারের ঘাট ইজারাদারের মাধ্যমে পারাপার  হতো মানুষজন। এরপর বারোমাসিয়া নদীর আঁকার ছোট হওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দাদের উদ্যোগে বাঁশের সাকো তৈরি করা হয়। সেই সময় থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় টানা ১০ বছর ধরে বাঁশের সাকো দিয়ে দুই পাড়ের হাজারও মানুষ পাড়াপাড় করে আসছেন।

প্রতি বছর বর্ষার আগেই স্থানীয়রা যাতে বর্ষা মৌসুমে ভালো ভাবে নদী পারাপার করতে পারে সে জন্য বাঁশের সাকোটি মেরামত করেন এলাকাবাসী। এবছরও মেরামতের প্রস্তুুতি নিয়েছেন স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ দিন আগে সাঁকোর নিচে কচুরিপানা জমে  নদীর তীব্র স্রোতে নড়েবড়ে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যায়। সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দারা নদী সাঁতরিয়ে পারাপার করছে। আবার অনেকেই এক বুক নদীর পানি বেয়ে হেঁটে পারাপার করছেন।

ফলে গত এক মাস থেকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী, চরগোরকমন্ডল, ঝাঁউকুটি, পশ্চিম ফুলমতি, নাওডাঙ্গা ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের হকবাজার এবং পাশ্ববর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাহাট ইউনিয়নের চরখারুয়া এবং খারুয়াসহ ৮ গ্রামের হাজারও মানুষ এখন নদী পাড়াপাড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার আহের আলী ও ঝাউকুটি এলাকার নুর ইসলাম জানান, এখানে বলার ভাষা নেই। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার প্রায় এক মাস হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত ভাঙা সাঁকোটি মেরামতের জন্য কেউয়ে উদ্যোগ নেয়নি। আমরা প্রতিদিনেই বাইসাইকেল কাঁধে নিয়ে বারোমাসিয়া নদীর পারাপার হচ্ছি। আমাদের এই দু:খ কষ্ট কেউ দেখছেন না বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্থানীয় মর্জিনা বেগম ও জাহানারা বেগম জানান, কি কই বাহে, তোমরাতো দেখতেছেন। আমরা  বারোমাসিয়া নদীর এক বুক পানি মাড়ি দিয়ে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা ভুট্টার শুকানো খড়ি (লাকড়ি) মাথায় নিয়ে পারাপার করছি। খালি ছবি তোলেন বাহে।

আজ এক মাস ধরে এতো কষ্ট করে নদী পারাপার করছি, কেউয়ে খোঁজ নিতে আসেননি। এখন স্কুল বন্ধ। কয়েকদিন পর স্কুল খুললেই আমাদের ছেলে মেয়েদের অনেক কষ্ট হবে। আমরা স্কুল খোলার আগেই সাঁকোটি মেরামত করার দাবি জানাচ্ছি।

লালমনিরহাটের উপজেলার চর খারুয়া এলাকার বাসিন্দা তসলিম উদ্দিন জানান, আমার এলাকার শত শত মানুষজন এই পথেই নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট বাজারে নিয়মিত আসা যাওয়া করি। এছাড়াও আমাদের এলাকার ছেলে মেয়েরা নাওডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ ও বালারহাট আদর্শ স্কুলে পড়েন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় আমরা চরম দুর্ভোগ নিয়ে আসা যাওয়া করছি।

চর খারুয়া এলাকার শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, খারুয়া এলাকার মাসুদ রানা ও ঝাউকুটি এলাকার শিক্ষার্থী হাসানুর রহমান বলেন, এখন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় মাঝে মধ্যে সাঁতরিয়ে নদী পার হচ্ছি ।কয়েকদিন পর স্কুল কলেজ খুলবে তখনতো বই,খাতাপত্রসহ নদী সাঁতরিয়ে কিভাবে পারাপার হব দুচিন্তায় পরেছি। তারা দ্রুত সাঁকোটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।

মৎস্য খামারি আতাউর রহমান রতন ও মজিবর রহমান বাবু জানান, নদী ওপারে আমরা মাছ চাষ করছি। সাঁকোটি ভেঙ্গে য়াওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি। নদীর ওপারে বিশাল বিশাল মৎস্য খামার রয়েছে। আমরা মাছের খাদ্য সামগ্রী পারাপার করতে পারছি না। মাছের খাদ্য ও মাছ বিক্রি করতে পাড়ছি না।

দিনে যত বারেই পারাপার হই ততবারেই নদী সাঁতরিয়ে যেতে হয়। তারা আরও জানান, সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২২০ ফুট। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ পারাপার হয়। এখন পর্যন্ত কেউয়ে সাঁকোটি মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন না।  যদি কেউ মেরামতের উদ্যোগ নেয়, আমরা আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য,

আমিনুল হক ও স্থানীয় কৃষক হামিদুল ইসলাম (৬৩) প্রায় ২৭ /২৮ দিন আগে তীব্র স্রোতে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যাওয়ার আমাদের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। নদী সাঁতার দিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। নদীর পাড়ের জন্য আলাদা লুঙ্গি ও গামছা ব্যবহার করতে হয়। স্কুল -কলেজের ছেলে -মেয়েদের পারাপারের চরম ঝুঁকি। আমরা ইতোমধ্যে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করার জন্য গ্রামে গ্রামে বাঁশ সংগ্রহ করছি।

তবে অনেকেই এগিয়ে আসছে না।  কোথাও এক বুক, কোথাও আবার এক কমোড় পানিতে হেঁটে পার হচ্ছি। কিছু দিন আগে পানি বেশি থাকায় সাঁতার কেটে পাড় হয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সাঁকোটি পূর্ণ : নির্মাণ করা না গেলে নদীর  পানি বেড়ে গেলে আমাদের দুর্ভোগেও দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। তাই  স্থানীয়দের সহযোগিতার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাছেন আলী জানান, আমাদের ৬ নং ওয়ার্ডে বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীতে একটি সাঁকো আছে। সেই সাঁকো দিয়ে দুপাড়ের হাজার হাজার মানুষ পারাপার করতেন। কিন্তু গত এক মাস আগে তীব্র স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় পারাপারের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। স্কুলের ছেলে মেয়েরা পাড় হতে পারছেন না। অনেকেই এক বুক পানিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হচ্ছেন।

সবার যৌথ উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া সাঁকোটি দ্রুত পূর্ণ:নির্মাণ করা খুবই জরুরি। সাঁকোটি  নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ কেটে যাবে। সাঁকোটি পূর্ণ: নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী এগিয়ে আসার আহবান জানান। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলা জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এরপর বরাদ্দ আসলে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো পূর্ণ :নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে।

এএস/

 

ফুলবাড়ীতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় নদী সাঁতার দিয়ে পাড়াপাড় এলাকা বাসীর

আপডেট সময় ০৪:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২২০ ফিট লম্বা বারোমাসিয়া নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৮ গ্রামের হাজারও মানুষ। চরম ঝুকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন কোমল মতি শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় নবিউল /আমিন মেম্বারের ঘাট নামে পরিচিত বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীতে ২২০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটির দক্ষিণ দিকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফিট দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দারা  এক বুক নদীর পানি পাড়ি দিয়ে  হেঁটে পাড় হচ্ছেন।

দুপাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বারোমাসিয়া নদীটি পাড়ি দিয়েছেন ছোট ছোট ডিঙি ও মাঝারি নৌকা দিয়ে। তখন থেকে দীর্ঘ সময় পাড়াপাড় করতেন দুই পাড়ের বাসিন্দারা।

সেই সময় থেকে করিমের, নবিউলের সর্বশেষ  আমিন মেম্বারের ঘাট ইজারাদারের মাধ্যমে পারাপার  হতো মানুষজন। এরপর বারোমাসিয়া নদীর আঁকার ছোট হওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দাদের উদ্যোগে বাঁশের সাকো তৈরি করা হয়। সেই সময় থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় টানা ১০ বছর ধরে বাঁশের সাকো দিয়ে দুই পাড়ের হাজারও মানুষ পাড়াপাড় করে আসছেন।

প্রতি বছর বর্ষার আগেই স্থানীয়রা যাতে বর্ষা মৌসুমে ভালো ভাবে নদী পারাপার করতে পারে সে জন্য বাঁশের সাকোটি মেরামত করেন এলাকাবাসী। এবছরও মেরামতের প্রস্তুুতি নিয়েছেন স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ দিন আগে সাঁকোর নিচে কচুরিপানা জমে  নদীর তীব্র স্রোতে নড়েবড়ে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যায়। সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় দুপাড়ের বাসিন্দারা নদী সাঁতরিয়ে পারাপার করছে। আবার অনেকেই এক বুক নদীর পানি বেয়ে হেঁটে পারাপার করছেন।

ফলে গত এক মাস থেকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী, চরগোরকমন্ডল, ঝাঁউকুটি, পশ্চিম ফুলমতি, নাওডাঙ্গা ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের হকবাজার এবং পাশ্ববর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাহাট ইউনিয়নের চরখারুয়া এবং খারুয়াসহ ৮ গ্রামের হাজারও মানুষ এখন নদী পাড়াপাড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার আহের আলী ও ঝাউকুটি এলাকার নুর ইসলাম জানান, এখানে বলার ভাষা নেই। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার প্রায় এক মাস হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত ভাঙা সাঁকোটি মেরামতের জন্য কেউয়ে উদ্যোগ নেয়নি। আমরা প্রতিদিনেই বাইসাইকেল কাঁধে নিয়ে বারোমাসিয়া নদীর পারাপার হচ্ছি। আমাদের এই দু:খ কষ্ট কেউ দেখছেন না বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্থানীয় মর্জিনা বেগম ও জাহানারা বেগম জানান, কি কই বাহে, তোমরাতো দেখতেছেন। আমরা  বারোমাসিয়া নদীর এক বুক পানি মাড়ি দিয়ে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা ভুট্টার শুকানো খড়ি (লাকড়ি) মাথায় নিয়ে পারাপার করছি। খালি ছবি তোলেন বাহে।

আজ এক মাস ধরে এতো কষ্ট করে নদী পারাপার করছি, কেউয়ে খোঁজ নিতে আসেননি। এখন স্কুল বন্ধ। কয়েকদিন পর স্কুল খুললেই আমাদের ছেলে মেয়েদের অনেক কষ্ট হবে। আমরা স্কুল খোলার আগেই সাঁকোটি মেরামত করার দাবি জানাচ্ছি।

লালমনিরহাটের উপজেলার চর খারুয়া এলাকার বাসিন্দা তসলিম উদ্দিন জানান, আমার এলাকার শত শত মানুষজন এই পথেই নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট বাজারে নিয়মিত আসা যাওয়া করি। এছাড়াও আমাদের এলাকার ছেলে মেয়েরা নাওডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ ও বালারহাট আদর্শ স্কুলে পড়েন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় আমরা চরম দুর্ভোগ নিয়ে আসা যাওয়া করছি।

চর খারুয়া এলাকার শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, খারুয়া এলাকার মাসুদ রানা ও ঝাউকুটি এলাকার শিক্ষার্থী হাসানুর রহমান বলেন, এখন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় মাঝে মধ্যে সাঁতরিয়ে নদী পার হচ্ছি ।কয়েকদিন পর স্কুল কলেজ খুলবে তখনতো বই,খাতাপত্রসহ নদী সাঁতরিয়ে কিভাবে পারাপার হব দুচিন্তায় পরেছি। তারা দ্রুত সাঁকোটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।

মৎস্য খামারি আতাউর রহমান রতন ও মজিবর রহমান বাবু জানান, নদী ওপারে আমরা মাছ চাষ করছি। সাঁকোটি ভেঙ্গে য়াওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি। নদীর ওপারে বিশাল বিশাল মৎস্য খামার রয়েছে। আমরা মাছের খাদ্য সামগ্রী পারাপার করতে পারছি না। মাছের খাদ্য ও মাছ বিক্রি করতে পাড়ছি না।

দিনে যত বারেই পারাপার হই ততবারেই নদী সাঁতরিয়ে যেতে হয়। তারা আরও জানান, সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২২০ ফুট। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ পারাপার হয়। এখন পর্যন্ত কেউয়ে সাঁকোটি মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন না।  যদি কেউ মেরামতের উদ্যোগ নেয়, আমরা আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য,

আমিনুল হক ও স্থানীয় কৃষক হামিদুল ইসলাম (৬৩) প্রায় ২৭ /২৮ দিন আগে তীব্র স্রোতে বাঁশের সাকোটি ভেঙে যাওয়ার আমাদের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। নদী সাঁতার দিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। নদীর পাড়ের জন্য আলাদা লুঙ্গি ও গামছা ব্যবহার করতে হয়। স্কুল -কলেজের ছেলে -মেয়েদের পারাপারের চরম ঝুঁকি। আমরা ইতোমধ্যে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করার জন্য গ্রামে গ্রামে বাঁশ সংগ্রহ করছি।

তবে অনেকেই এগিয়ে আসছে না।  কোথাও এক বুক, কোথাও আবার এক কমোড় পানিতে হেঁটে পার হচ্ছি। কিছু দিন আগে পানি বেশি থাকায় সাঁতার কেটে পাড় হয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সাঁকোটি পূর্ণ : নির্মাণ করা না গেলে নদীর  পানি বেড়ে গেলে আমাদের দুর্ভোগেও দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। তাই  স্থানীয়দের সহযোগিতার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাছেন আলী জানান, আমাদের ৬ নং ওয়ার্ডে বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীতে একটি সাঁকো আছে। সেই সাঁকো দিয়ে দুপাড়ের হাজার হাজার মানুষ পারাপার করতেন। কিন্তু গত এক মাস আগে তীব্র স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় পারাপারের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। স্কুলের ছেলে মেয়েরা পাড় হতে পারছেন না। অনেকেই এক বুক পানিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হচ্ছেন।

সবার যৌথ উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া সাঁকোটি দ্রুত পূর্ণ:নির্মাণ করা খুবই জরুরি। সাঁকোটি  নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ কেটে যাবে। সাঁকোটি পূর্ণ: নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী এগিয়ে আসার আহবান জানান। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলা জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এরপর বরাদ্দ আসলে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো পূর্ণ :নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে।

এএস/