চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন এর ঋষিকান্দি গ্রামে তরুন ভৌমিক ও ফারজানা নামে দুইজন আদম ব্যবসায়ী ২ জুলাই বুধবার দিবাগত রাতে আটক করেছেন সাত জন ভুক্তভোগী ও মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঋষিকান্দির স্থানীয় জনতা।
জানা গেছে, রতন ভৌমিক পিতা- হরিপদ ভৌমিক যার ঠিকাানা গ্রাম – ঠেঠালিয়া, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন, দাউদকান্দি, কুমিল্লা। ভুক্তভোগীদের ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যাবে বলে দশ থেকে এগারোজনের কাছ থেকে প্রায় (১.৫ কোটি) দেড় কোটি টাকা নিয়ে যায় এক বছর আগে। কিন্তু কাউকে আজ অবধি ফ্লাইট দিতে পারেনি। মাঝে ২ জনকে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে আবার তাদেরকে দেশে ফেরত আনা হয়। ইদানিং ফোন ধরছেনা তারা ভুক্তভোগীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে করছেন তালবাহানা।
উল্লেখ্য, রতন ভৌমিক দালালের কাজ করেন এম আর ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস মালিবাগ মৌচাক মার্কেটের মেজবাহ উদ্দিন প্লাজার ২য় তলায়। উল্লেখ থাকে যে এই ট্রাভেল এজেন্সির বৈধ কোন লাইসেন্স নেই। এর মালিক মাসুদ রানা যার স্থায়াী বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। এম আর ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এ কাজ করেন জনতা কর্তৃক কৌশলে আটককৃত ফারজানা। জানা যায় এই ফারজানা, তাদের বস মাসুদ ও রতন এই টাকা আত্ম-সাৎ করেছেন। মুঠোফোনে মাসুদ রানার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বর্তমানে ঘানা আছেন, তিনি টাকা দিতে পারবেন না।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ফারজানা যার বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায়। তাকে এক লোক মালয়েশিয়া যাবে পঞ্চাশ হাজার টাকা মতলবে এসে নিতে হবে এই কথা বললে তিনি টাকা নিতে আসেন।
অপরদিকে রতন ভৌমিক তার বাড়িঘর বিক্রি করে ফেলেছেন এবং শহরে সে ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন। বিক্রি করে ফেলা তার ঘরের ফ্যান নিয়ে আসার জন্য বলা হলে তিনি বাড়িতে আসেন এবং জনতার হাতে দুইজনে ধরা পড়েন।
ভুক্তভোগী রিপন ঋষির বাবা কান্না করে বলেন – আমার বাড়ি, জমি সব বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। এখন আমি আমার ম-রে যাওয়া ছাড়া আর কোনো গতি নাই।
আরো ভুক্তভোগীদের মধ্যে কয়েকজন হলেন- প্রকাশ, রনিমনি, রিপন মজুমদার, ওজিত মজুমদার (ঠেটালিয়া) সুমন ভক্ত, গোপাল (দূর্গাপুর)। ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা এখন নিঃস্ব, আমরা আর বিদেশ যাবো না, আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।
এভাবে অনেক মানুষ স্বপ্ন দেখে, আর আদম ব্যবসায়িরা সব স্বপ্ন কেড়ে নেয়। সাথে কেড়ে নেয় পথ চলার শেষ সম্বলটুকু এমনকি ভিটেবাড়িও। সর্বস্ব হারিয়ে ভুক্তভোগীরা আজ নিঃস্ব। তারা এর প্রতিকার চেয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যা জানা যায়, তারা আটককৃত আদম ব্যবসায়ীদের স্বজনের মাধ্যমে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এই বিষয়টির একটি সুরাহা করতে চাচ্ছেন। তা না হলে মামলা করে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।
এএস/