লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম থানায় হামলা ভাংচুর ও আাসামী ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাট করেন ব্যারিষ্টার হাসান রাজীব প্রধান, লালমনিরহাট -১ ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী।
আজ শুক্রবার ৪ জুলাই দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, গত ০২/০৭/২০২৫ইং দিবাগত রাতে পাথর কোয়ারীকে কেন্দ্র করে পাটগ্রাম থানায় যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে তার প্রেক্ষিতে কিছু কিছু ইলেকট্রোনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপিকে জড়িয়ে নানা রকম বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে।
এ ঘটনার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন মনে করায় আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আপনারা আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
পাটগ্রাম উপজেলা টি বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা এবং একটি ব্যবসা কেন্দ্র। দীর্ঘ দিন থেকে এই উপজেলায় একটি স্বার্থনেষী মহল মাটির নিচ থেকে পাথর ও বালু উত্তোলনের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্যন করে সরকারের ব্যাপক রাজস্ব ক্ষতি করছিল।
বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত পত্র যাহার স্মারক নং-২৮.০৭.০০০০.০০০.০০৫.৬৬.০০০৫.২৫.১৪১ তারিখ: ২২/০৫/২০২৫ইং মোতাবেক পাটগ্রাম উপজেলাধীন ৯টি পাথর কোয়ারী দরপত্রের মাধ্যমে সর্বচ্চো দরদাতা নির্বাচিত হওয়ায় দুই জন ইজারাদারকে অযান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের অনুমোদন প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী ইজারাদারগন সরকারি কোষাগারে প্রায় ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকা জমা প্রদান করে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পাথর উত্তোলন শুরু করে এবং বাজারজাত করে।
উত্তোলিত পাথর বাজারজাত করার স্বার্থে ইজারাদারগণ পাথর পরিবহন ট্রাকের সঠিক হিসাব রাখার জন্য নিজস্ব টোকেন ব্যবহার করেন। ফলে দীর্ঘ দিন থেকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যে মহলটি অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের সাথে জড়িত ছিল তারা ইর্ষান্বিত হয়ে শুরু থেকেই এই ইজারার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এ ঘটনার দিন রাতে ইউএনও উত্তর কুমার দাশ ইজারাদারের দুইজন কোয়ারী কর্মীকে আটক করে তার কার্যালয়ে নিয়ে এসে ভ্রামমান আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করে থানায় হস্তান্তর করেন।
এ ঘটনা জানার পরে ইজারাদারগন থানায় উপস্থিত হয়ে ওসি’র সাথে কথা বলতে চাইলে ইজারাদার সহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওসি সহ সঙ্গী ফোর্সগণ অসোভন আচরন করে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে উত্তেজিত ব্যবসায়ীগণের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের উতপ্ত বাক্য বিনিময় হওয়ার একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে প্রায় ১৭ জন ব্যবসায়ীকে গুরুত্বর আহত করে।
বিষয়টি অবগত হওয়ার পরে পাটগ্রাম বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রে আনে। এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাহিত করার হীনপ্রচেষ্টায় বিএনপি’কে জড়িয়ে নানান রকম সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে যা বিএনপি’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে আমরা মনে করি। জাতীয় নাগরকি পাটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ি করে একটি পোস্ট দেন যা অনভিপ্রেত, উদ্দেশ্যেমূলক ও দুঃখ জনক।
এ ঘটনাটি নিছক ইজারাদার ও প্রশাসনের মধ্যকার বিষয়। যার সাথে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি’র নুন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই। বিএনপি একটি উদারপন্থী জনকল্যাণমুখী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, এ দলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে।
এমতাবস্থায় বিএনপি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায় দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় বিএনপি অতিতেও নেয় নি ভবিষ্যতেও নিবে না। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির কোন অপকর্মের দায় বিএনপির উপর চাপানোর অপচেষ্টা করলে তার হবে দুঃখ জনক সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে শেষ করছি।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন লালমনিহাট জেলা বিএনপির সাধারণ যুগ্ন সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল রহমান পাটোয়ারী সাজু, পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব সফিকার রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউর রহমান সোহেল, পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হাফিজুল হক প্রধান প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে গত বুধবার পাটগ্রাম থানায় হামলা ভাংচুর ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ২৭ জনকে এজাহার ভুক্ত করে ও অজ্ঞাত শতাধিক উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
এসস/