ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

  • আবির হোসেন, ইবি
  • আপডেট সময় ১২:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই বিভাগের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ক্লাসে বাজে ইঙ্গিত, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, বিভিন্ন সময় ভিডিও কল, কল না ধরলে রেজাল্ট খারাপ করানো ও বডি শেমিং সহ নানা অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। তবে বিভাগের শিক্ষকদের একটি পক্ষ অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন। ভুক্তভোগীরা গত বুধবার ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এদিকে আজিজুল ইসলাম বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের আস্থাভাজন হওয়ায় বিগত সময়ে শত অপকর্ম করেও ‘সাত খুন মাফ’ পেয়ে উল্টো ভুক্তভোগীদের শাসিয়ে এসেছেন। এতে বেশিরভাগ ছাত্রী ভয়ে তার হয়রানি নিরবে সহ্য করেছেন। এক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো ধরনের সুরাহা পায়নি। সেই ভুক্তভোগীর অভিযোগ— ‘সহকর্মীদের আশকারায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন আজিজুল ইসলাম। সময়মতো তার লাগাম টানলে আজ এতো ছাত্রীর জীবন নষ্ট করার দুঃসাহস পেতো না আজিজ।’

জানা যায়, চলমান ব্যাচগুলোর মধ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ২০২০ এর জানুয়ারিতে ক্লাস শুরুর পর থেকেই শিক্ষক আজিজ তার তার্গেটকৃত ছাত্রীদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকে। এরপর করোনায় ক্যাম্পাস বন্ধ হলে ছাত্রীদেরকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করতে শুরু করেন আজিজ। করোনার পর ২০২২ এর ১০ এপ্রিল ভুক্তভোগী ছাত্রীদের মধ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী মুখ খোলেন। তিনি তার বাবা-মাকে ক্যাম্পাসে এনে বিভাগের সিনিয়র তিন শিক্ষক অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নিলুফা আখতার বানু ও অধ্যাপক ড. খসরুল আলমের  কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের বিচার না হলে তিনি ইবিতে আর পড়াশোনা না করার সিদ্ধান্ত জানান। সেসময় ড. রেজওয়ানুল ইসলাম ওই ছাত্রীর বিষয়টি সুরাহার করবেন বলে ভুক্তভোগীর মাকে আশ্বস্ত করেন। তবে তিনি সেসময় বিষয়টি ওই তিনজন শিক্ষক এবং তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে ঘটনা ধামাচামা দেন।

এই অভিযোগের পরেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় আস্কারা পেয়ে আজিজ উল্টো ওই ছাত্রীকে ক্লাসে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা শুরু করেন। এই ঘটনায় মাফ পেয়ে যাওয়াকে তিনি পুরস্কার হিসেবে নিয়ে ধীরে ধীরে আরও বেশি আপকর্ম শুরু করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ওই ছাত্রীর টিউটোরিয়াল মার্ক কমিয়ে দেওয়া, ল্যাব থেকে বের করে দেওয়া এবং ক্লাসে বিভিন্নভাবে আপমান করতে শুরু করেন। ওই শিক্ষক ক্লাসে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বিভাগের সব শিক্ষক আমার সঙ্গে, তোমার সঙ্গে কেউ নেই। তোমাকে দেখে নেব, তোমার অবস্থা খারাপ হবে।’

এদিকে ওই ছাত্রীর অভিযোগের নাজুক ফলাফল দেখে অন্য ভুক্তভোগীরা মুখ খোলার সাহস করেননি। ছাত্রীদের হয়রানি করেও কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় না আসায় দিনেরপর দিন লাগাম ছাড়তে থাকে আজিজ। একের পর এক মেয়েদের তার্গেট করে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতে শুরু করেন। ছাত্রীদেরকে নানারকম প্রলোভন ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত, রাজি না হলে হেনস্তা ও হুমকি, ক্লাসে দাঁড় করিয়ে পোশাক, চেহারা, শারীরিক গঠন নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং রেজাল্ট ভালো করার প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক ভালো করার চাপ দিতেন। তবুও সিনিয়র শিক্ষকদের আস্থাভাজন হওয়ায় শত অভিযোগও পরোয়া করেননি তিনি।

এছাড়া তার এসব অপকর্ম বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এই ছাড়কেই নিজের অর্জন ভেবে সামনে এগুতে থাকেন আজিজ। পরবর্তীতে গত ২২ জুন ভুক্তভোগীরা একজোট হয়ে বিভাগের সভাপতি বরাবর অন্তত ১৩ ছাত্রী লিখিত এবং প্রায় ৫০ ছাত্রী মৌখিক অভিযোগ দেন। এরপর পূর্বের মতো আবারও বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন ও বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সমাধান এবং বিভাগের বাইরে না জানাতে দফায় দফায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

এসময় ড. আনোয়ারুল হক ওই ছাত্রীদের লাঞ্চের জন্য ১৫ হাজার টাকা দিতে চাইলে ছাত্রীরা তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভুক্তভোগীদের চাপে পড়ে তাকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। তবে এখনও বিভাগটির কয়েকজন শিক্ষক অভিযুক্তকে বাঁচাতে ভুক্তভোগী, সিনিয়র শিক্ষক এবং প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বলেন, পূর্বের অভিযোগের বিষয়ে আমার যেসব সহকর্মীরা জানতেন তারা আমাকে কিছু বলেনি। ঘটনা জানার পর বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আমি তাদেরকে নিয়ে বসেছিলাম, তবে কোনো টাকা-পয়সা দেইনি। আমিও ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, প্রথম অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবা-মা ওই শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান হয়। এছাড়া আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে এ বিষয়ে বোঝানোর পরেও তিনি যে এসব কর্মকান্ড অব্যহত রেখেছেন তা আমার জানা ছিল না। আর পরবর্তীতে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিম বলেন, সেসময় ওই ছাত্রী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে রেজওয়ান স্যার ও খসরুল আলম স্যার ওই ছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি উভয়পক্ষের মধ্যে সমাধান করে দেয়। এরপরের কোনো ঘটনা ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি। এখন তার বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।   

বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, আমার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগে কেউ অভিযোগ করেনি। তাছাড়া ওই শিক্ষককে বাঁচানোর আমরা কেউ না। আমি অভিযোগ পাওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নিয়েছি। বাকিটা সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ দেখবে।

অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছি। এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

 

এএস/

 

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

আপডেট সময় ১২:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই বিভাগের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ক্লাসে বাজে ইঙ্গিত, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, বিভিন্ন সময় ভিডিও কল, কল না ধরলে রেজাল্ট খারাপ করানো ও বডি শেমিং সহ নানা অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। তবে বিভাগের শিক্ষকদের একটি পক্ষ অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন। ভুক্তভোগীরা গত বুধবার ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এদিকে আজিজুল ইসলাম বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের আস্থাভাজন হওয়ায় বিগত সময়ে শত অপকর্ম করেও ‘সাত খুন মাফ’ পেয়ে উল্টো ভুক্তভোগীদের শাসিয়ে এসেছেন। এতে বেশিরভাগ ছাত্রী ভয়ে তার হয়রানি নিরবে সহ্য করেছেন। এক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো ধরনের সুরাহা পায়নি। সেই ভুক্তভোগীর অভিযোগ— ‘সহকর্মীদের আশকারায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন আজিজুল ইসলাম। সময়মতো তার লাগাম টানলে আজ এতো ছাত্রীর জীবন নষ্ট করার দুঃসাহস পেতো না আজিজ।’

জানা যায়, চলমান ব্যাচগুলোর মধ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ২০২০ এর জানুয়ারিতে ক্লাস শুরুর পর থেকেই শিক্ষক আজিজ তার তার্গেটকৃত ছাত্রীদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকে। এরপর করোনায় ক্যাম্পাস বন্ধ হলে ছাত্রীদেরকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করতে শুরু করেন আজিজ। করোনার পর ২০২২ এর ১০ এপ্রিল ভুক্তভোগী ছাত্রীদের মধ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী মুখ খোলেন। তিনি তার বাবা-মাকে ক্যাম্পাসে এনে বিভাগের সিনিয়র তিন শিক্ষক অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নিলুফা আখতার বানু ও অধ্যাপক ড. খসরুল আলমের  কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের বিচার না হলে তিনি ইবিতে আর পড়াশোনা না করার সিদ্ধান্ত জানান। সেসময় ড. রেজওয়ানুল ইসলাম ওই ছাত্রীর বিষয়টি সুরাহার করবেন বলে ভুক্তভোগীর মাকে আশ্বস্ত করেন। তবে তিনি সেসময় বিষয়টি ওই তিনজন শিক্ষক এবং তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে ঘটনা ধামাচামা দেন।

এই অভিযোগের পরেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় আস্কারা পেয়ে আজিজ উল্টো ওই ছাত্রীকে ক্লাসে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা শুরু করেন। এই ঘটনায় মাফ পেয়ে যাওয়াকে তিনি পুরস্কার হিসেবে নিয়ে ধীরে ধীরে আরও বেশি আপকর্ম শুরু করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ওই ছাত্রীর টিউটোরিয়াল মার্ক কমিয়ে দেওয়া, ল্যাব থেকে বের করে দেওয়া এবং ক্লাসে বিভিন্নভাবে আপমান করতে শুরু করেন। ওই শিক্ষক ক্লাসে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বিভাগের সব শিক্ষক আমার সঙ্গে, তোমার সঙ্গে কেউ নেই। তোমাকে দেখে নেব, তোমার অবস্থা খারাপ হবে।’

এদিকে ওই ছাত্রীর অভিযোগের নাজুক ফলাফল দেখে অন্য ভুক্তভোগীরা মুখ খোলার সাহস করেননি। ছাত্রীদের হয়রানি করেও কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় না আসায় দিনেরপর দিন লাগাম ছাড়তে থাকে আজিজ। একের পর এক মেয়েদের তার্গেট করে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতে শুরু করেন। ছাত্রীদেরকে নানারকম প্রলোভন ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত, রাজি না হলে হেনস্তা ও হুমকি, ক্লাসে দাঁড় করিয়ে পোশাক, চেহারা, শারীরিক গঠন নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং রেজাল্ট ভালো করার প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক ভালো করার চাপ দিতেন। তবুও সিনিয়র শিক্ষকদের আস্থাভাজন হওয়ায় শত অভিযোগও পরোয়া করেননি তিনি।

এছাড়া তার এসব অপকর্ম বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এই ছাড়কেই নিজের অর্জন ভেবে সামনে এগুতে থাকেন আজিজ। পরবর্তীতে গত ২২ জুন ভুক্তভোগীরা একজোট হয়ে বিভাগের সভাপতি বরাবর অন্তত ১৩ ছাত্রী লিখিত এবং প্রায় ৫০ ছাত্রী মৌখিক অভিযোগ দেন। এরপর পূর্বের মতো আবারও বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন ও বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সমাধান এবং বিভাগের বাইরে না জানাতে দফায় দফায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

এসময় ড. আনোয়ারুল হক ওই ছাত্রীদের লাঞ্চের জন্য ১৫ হাজার টাকা দিতে চাইলে ছাত্রীরা তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভুক্তভোগীদের চাপে পড়ে তাকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। তবে এখনও বিভাগটির কয়েকজন শিক্ষক অভিযুক্তকে বাঁচাতে ভুক্তভোগী, সিনিয়র শিক্ষক এবং প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বলেন, পূর্বের অভিযোগের বিষয়ে আমার যেসব সহকর্মীরা জানতেন তারা আমাকে কিছু বলেনি। ঘটনা জানার পর বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আমি তাদেরকে নিয়ে বসেছিলাম, তবে কোনো টাকা-পয়সা দেইনি। আমিও ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, প্রথম অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবা-মা ওই শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান হয়। এছাড়া আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে এ বিষয়ে বোঝানোর পরেও তিনি যে এসব কর্মকান্ড অব্যহত রেখেছেন তা আমার জানা ছিল না। আর পরবর্তীতে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিম বলেন, সেসময় ওই ছাত্রী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে রেজওয়ান স্যার ও খসরুল আলম স্যার ওই ছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি উভয়পক্ষের মধ্যে সমাধান করে দেয়। এরপরের কোনো ঘটনা ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি। এখন তার বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।   

বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, আমার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগে কেউ অভিযোগ করেনি। তাছাড়া ওই শিক্ষককে বাঁচানোর আমরা কেউ না। আমি অভিযোগ পাওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নিয়েছি। বাকিটা সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ দেখবে।

অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছি। এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

 

এএস/