ঢাকা , সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবির ২৯তম ভিসির দায়িত্ব নিলেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২৯তম উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা থেকে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা সামলাবেন তিনি।

আজ শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এসময় নানা শ্রেণিপেশার সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ পান মাকসুদ কামাল। চারটি শর্তে তাকে সাময়িকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ২০২০ সালের জুন মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চারবারের নির্বাচিত সভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ-সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য। দুই মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বেও ছিলেন এই অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে তিনি অবদান রেখে আসছেন।

মাকসুদ কামাল ভূতত্ত্বে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। পরে নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্টি ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর জিও-ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড আর্থ অভজারভেশন থেকে অ্যাপ্লায়েড ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি বিষয়ে মাস্টার্স করেন। জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনলোজি থেকে ২০০৪ সালে ভূমিকম্পবিষয়ক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০০ সালের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং একই বিভাগে ২০১০ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তিনি দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।

তিনি একজন ভূমিকম্প ও সুনামি এবং নগর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ। দেশি-বিদেশি জার্নালে তার ৬৫টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলা এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণে তিনি শিক্ষাবিদ ও গবেষক হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের বহু প্রকল্পে কারিগরি উপদেষ্টা/বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য।

তিনি ১৯৬৬ সালের ২১ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম ফরিদ আহমেদ এবং মা মরহুমা মাছুমা খাতুন ছিলেন সমাজহিতৈষী ও বিদ্যানুরাগী। তার বাবা একজন সুপরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও ছিলেন। ড. মাকসুদ কামালের অগ্রজ সদ্যপ্রয়াত এ কে এম শাহজাহান কামাল বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং তিন মেয়াদে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ড. মাকসুদ কামালের স্ত্রী সৈয়দা আফসানা ফেরদৌসি একজন শিক্ষাবিদ এবং ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) লিবারেল আর্টস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

ঢাবির ২৯তম ভিসির দায়িত্ব নিলেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল

আপডেট সময় ১১:১৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২৯তম উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা থেকে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা সামলাবেন তিনি।

আজ শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এসময় নানা শ্রেণিপেশার সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ পান মাকসুদ কামাল। চারটি শর্তে তাকে সাময়িকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ২০২০ সালের জুন মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চারবারের নির্বাচিত সভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ-সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য। দুই মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বেও ছিলেন এই অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে তিনি অবদান রেখে আসছেন।

মাকসুদ কামাল ভূতত্ত্বে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। পরে নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্টি ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর জিও-ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড আর্থ অভজারভেশন থেকে অ্যাপ্লায়েড ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি বিষয়ে মাস্টার্স করেন। জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনলোজি থেকে ২০০৪ সালে ভূমিকম্পবিষয়ক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০০ সালের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং একই বিভাগে ২০১০ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তিনি দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।

তিনি একজন ভূমিকম্প ও সুনামি এবং নগর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ। দেশি-বিদেশি জার্নালে তার ৬৫টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলা এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণে তিনি শিক্ষাবিদ ও গবেষক হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের বহু প্রকল্পে কারিগরি উপদেষ্টা/বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য।

তিনি ১৯৬৬ সালের ২১ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম ফরিদ আহমেদ এবং মা মরহুমা মাছুমা খাতুন ছিলেন সমাজহিতৈষী ও বিদ্যানুরাগী। তার বাবা একজন সুপরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও ছিলেন। ড. মাকসুদ কামালের অগ্রজ সদ্যপ্রয়াত এ কে এম শাহজাহান কামাল বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং তিন মেয়াদে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ড. মাকসুদ কামালের স্ত্রী সৈয়দা আফসানা ফেরদৌসি একজন শিক্ষাবিদ এবং ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) লিবারেল আর্টস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।