মুন্সীগঞ্জে প্রতিদিন কোটি টাকা বিক্রি হওয়া তরমুজ আড়তে এখন তরমুজ রাখার স্থান পাচ্ছেনা কৃষক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।ফলে বাধ্য হয়ে ট্রলি ও ট্রলারের মধ্যে রেখেই চলছে তরমুজ বিক্রির চেষ্টা।তরমুজ কিনার পাইকার কম থাকায় বিপাকে পরেছেন আরতদার ও কৃষকরা।
গত ৩ দিন ধরে বাজারে ব্যাপক তরমুজের সরবারহ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারনে মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর তরমুজ আড়তেও উঠছে প্রচুর পরিমান তরমুজ। আর তরমুজের আমদানি বৃুদ্ধি পাওয়ায় আড়ৎগুলোতে জায়গা সংকুলন হচ্ছেনা। এদিকে তরমুজের সরবরাহ বাড়ায় গত ৩ দিনে অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে তরমুজের দাম।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সদর উপজেলার মুক্তারপুর তরমুজ আড়তে গিয়ে দেখা গেছে ওই স্থানে ১১/১২টি আড়তের সামনে তরমুজের স্তুপ। আড়ৎগুলোর মধ্যে তিল ধরনের স্থান নেই। আড়তের সামনে রয়েছে ১২টি ট্রাক ভর্তি তরমুজ পাশের ধলেশ্বরী নদীতে ৬টি ট্রলার ভর্তি তরমুজ। এ সমস্ত ট্রলার ও ট্রাক কয়েক লক্ষ তরমুজ রয়েছে বলে জানালেন ব্যবাসায়ীরা। রাতে ট্রলার ও ট্রলি হতে তরমুজ নামাতে দেখা গেলেও তরমুজ কিনার খুব কম পাইকারই চোখে পরেছে।
তরমুজ নিয়ে আসা একাধিক কৃষক ও পাইকারদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, গত ৪/৫ দিন আগে সামান্য শিলা বৃষ্টি হয়েছে। শিলা বৃষ্টি হলে তরমুজ সাধারণত নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া প্রতিদিনই কম বেশি ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। তাই কৃষক শিলা বৃষ্টির ভয়ে জমি হতে তরমুজ কেটে বিক্রির চেষ্টা করছেন। এতে বাজারে প্রচুর পরিমান তরমুজ উঠছে যার কারনে দাম অনেক কমে গেছে।
আড়ৎতে তরমুজ বিক্রি করতে আসা পটুয়াখালী জেলার রাঙাবালি এলাকার কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, ৪ দিন আগে আমাদের এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিনিই ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। তাই নষ্ট হওয়ার ভয়ে জমি থেকে তরমুজ কেটে এই আড়তে নিয়ে আসছিলাম। দুই দিন ধরে ঘাটে ট্রলার ভিড়িয়ে বসে আছি। বেচাঁবিক্রি তেমন নাই। আগে যে তরমুজ ৪ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন তা ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে তরমুজ বিক্রি করলে আমাদের প্রচুর লোকসান হবে।
একই এলাকার অপর চাষি মিজান হাওলাদার বলেন, শিলা বৃষ্টির কারনে জমি হতে তরমুজ সব তুলে ফেলছি। এখন আড়তে তরমুজ নিয়ে এসে বিক্রি করতে পারছিনা। পরিবহনের দাম অনেক বেশি । এ বছর তরমুজ লাগানোর মৌসুমে ভারি বৃষ্টিপাতের কারনে তরমুজের চারার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই তরমুজের উৎপাদন খরচ বেশি পরেছে। যে তরমুজ উৎপাদন করতে আমাদের ১০০ শ থেকে ১৫০ শ টাকা খরচ হয়েছে এখন তা ১০০শ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাহিন এন্টার প্রাইজের মালিক আলমগীর কবির বলেন, গত শনিবার হতে তরমুজের দাম অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। কৃষকরা বলছে শিলা বৃষ্টির কারনে তারা তরমুজ জমি হতে তুলে নিয়ে আসছে। আড়তে প্রচুর তরমুজের আমদানি হয়েছে কিন্তু কাষ্টমারতো আগের চেয়ে কমছে। যার করনে দাম অনেক কমলেও পাইকার সেভাবে আসছেনা।
এ ব্যাপারে আড়ত সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, তরমুজের অবস্থা খুবই খারাপ। একটি ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের তরমুজ আড়তে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ৪ দিন আগেও যা ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো। শিলা বৃষ্টির কারনে কৃষক সব তরমুজ কেটে একসাথে আড়তে নিয়ে আসছে। যার কারনে আমরা আড়তে তরমুজের যায়গা দিতে পারছিনা। আমার এখানে ১২টি আড়তের মধ্যে প্রত্যেকটি তরমুজে ভরপুর। যায়গা দেওয়ার স্থান নেই তরমুজ প্রচুর থাকলেও সেভাবে পাইকার নেই।